ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকের সংগঠন বাফেদা রেমিট্যান্স কেনার ক্ষেত্রে ১১০ টাকা ৫০ পয়সা দর ঠিক করে দিয়েছিল। তবে ঘোষিত দরের পাশাপাশি বেশি প্রণোদনা দিয়ে ব্যাংকগুলোকে রেমিট্যান্স আনারও সুযোগ দিয়েছে। এক্ষেত্রে ব্যাংকের বোর্ডের অনুমোদন নিতে হবে। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বেসরকারি ব্যাংকগুলো বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউস থেকে ১২২ থেকে ১২৪ টাকা দর দিয়ে রেমিট্যান্স কিনছে। এমন খবর গণমাধ্যামে প্রকাশ হওয়ার পর গতকাল বুধবার জরুরি সভা ঢেকেছে এ দুই সংগঠন।
গতকাল বুধবার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, এখন থেকে প্রবাসী আয়ে ব্যাংকের নিজস্ব প্রণোদনাসহ ডলারের দর কোনোভাবেই ১১৫ টাকার বেশি দেয়া যাবে না। আর রপ্তানির আয়ের ক্ষেত্রে ব্যাংক ও গ্রাহকের সম্পর্কের ভিত্তিতে সর্বোচ্চ ১১৩ থেকে ১১৪ টাকা অফার করতে পারবে।
জানা গেছে, এবিবি-বাফেদার বৈঠকটি সাড়ে ৬টায় শুরু হয়ে পৌনে ৭টার দিকে শেষ হয়। সংক্ষিপ্ত এ বৈঠকে বেসরকারি একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্যাংকারদের গণমাধ্যমে কোনো বক্তব্য না দেয়ার প্রস্তাব করেন। যদিও এর পক্ষে-বিপক্ষে কেউ কিছু বলেননি। আবার একটি সংগঠনের চেয়ারম্যান রেমিট্যান্সে বাড়তি দরে কিনছে, তা গণমাধ্যমে যাওয়া নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
নানা উদ্যোগ নেয়ার পরও ডলার সংকট কমছে না, বরং বাড়ছে। ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকের সংগঠন বাফেদা গত ১ সেপ্টেম্বর প্রতি ডলারে ৫০ পয়সা বাড়িয়ে রপ্তানি ও রেমিট্যান্সে ১১০ টাকা ৫০ পয়সায় নির্ধারণ করে। এর সঙ্গে রেমিট্যান্সে ব্যাংকগুলো নিজেদের মতো করে প্রণোদনা দিতে পারবে বলে জানানো হয়। তবে বেশিরভাগ ব্যাংক এ দরে ডলার পাচ্ছে না। এখন ১২২ থেকে ১২৪ টাকা পর্যন্ত দরে ডলার কিনছে অনেক ব্যাংক।
দেশে ডলারের মূল জোগান আসে প্রবাসী আয় থেকে। পাশাপাশি রপ্তানি আয় থেকেও ডলার আসে; তবে তার বড় অংশ কাঁচামাল আমদানিতে খরচ হয়ে যায়। এছাড়া বিদেশি ঋণ, ঋণসুবিধা, অনুদান, সেবা খাত ও জাতিসংঘে নিযুক্ত শান্তিরক্ষী বাহিনী থেকেও ডলার আসে। আমদানির পাশাপাশি খরচ হয় সেবা খাত, শিক্ষা-স্বাস্থ্য, বিদেশি বিমান ভাড়া, ঋণ পরিশোধসহ আরও নানা খাতে।
গত বছরের মার্চে ইউক্রেনে রাশিয়ায় হামলা শুরুর আগে ডলার যা খরচ হতো, তার চেয়ে বেশি জোগান ছিল। তবে যুদ্ধ শুরুর পর পণ্য ও পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় ডলারের চাহিদাও বেড়ে যায়। শুরুতে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দাম নির্ধারণ করত। গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে ডলারের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব পালন করছে এবিবি ও বাফেদা।
উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ডলারের দর ঠিক করার পাশাপাশি রিজার্ভ থেকে প্রচুর ডলার বিক্রি করে আসছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চলতি অর্থবছর এরই মধ্যে সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলারের মতো বিক্রি করা হয়েছে। গত অর্থবছর বিক্রি করা হয় ১৩ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার। এর আগের অর্থবছর ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার।
এর মধ্যে আকুতে ১১৭ কোটি ডলারের দায় পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও কমে ১৯.৫০ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে আছে।
শেয়ার বিজ