রেকর্ড আমদানি: জাপান-সিঙ্গাপুর থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে ১ হাজার ২৬৫টি গাড়ি

সময় নিউজ | সময়ের প্রয়োজনে সময়

ডলার সংকটে বিলাসবহুল পণ্য আমদানি নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই দেশে ৫০০ কোটি টাকা মূল্যের রেকর্ড ১ হাজার ২৬৫টি গাড়ি আমদানি করা হয়েছে। জাপান ও সিঙ্গাপুর থেকে একটি জাহাজে করেই চট্টগ্রাম বন্দরে নিয়ে আসা হয়েছে গাড়ির এই চালান। তবে দীর্ঘ নয় মাস বন্ধ থাকার পর বাজেট ঘোষণার আগ মুহূর্তে আবারও আমদানি শুরু হওয়ায় দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন।

খালাস শেষে চট্টগ্রাম বন্দরের শেডে রাখা হয়েছে আমদানিকৃত গাড়িগুলো। ছবি: সময় সংবাদ

খালাস শেষে চট্টগ্রাম বন্দরের শেডে রাখা হয়েছে আমদানিকৃত গাড়িগুলো। ছবি: সময় সংবাদ

কমল দে

রেকর্ড পরিমাণ গাড়ির চালান নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের ৭ এবং ৮ নম্বর জেটিতে বার্থিং করেছে এমভি মালেয়শিয়া স্টার নামের জাহাজ। এই জাহাজে করেই জাপান ও সিঙ্গাপুর থেকে আনা হয়েছে ১ হাজার ২৬৫টি গাড়ি। চট্টগ্রাম বন্দরে মাত্র কয়েক ঘন্টায় ৫৫৯টি গাড়ি খালাস করে নিয়ে রাখা হয়েছে ১ ও ২ নম্বর শেডে।

আর জাহাজে করে আসা বাকি ৭০৬টি গাড়ি খালাস হবে মোংলা বন্দরে। আমদানি করা এসব গাড়ির মধ্যে রয়েছে প্রাইভেটকার, রেসিং কার, পাজেরো জীপ ও মাইক্রোবাস।
 
 
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের উপ কমিশনার ব্যারিষ্টার বদরুজ্জামান মুন্সি বলেন, দেশে বিশালবহুল গাড়ির আমদানি বাড়ছে। সবশেষ বন্দরে আমদানিকৃত গাড়ি নিয়ে আসা জাহাজ থেকে খালাস কার্যক্রম চলছে।
 
এর আগে ডলার সংকটের কারণে গত বছরের আগস্ট থেকে ব্যাংকগুলো এলসি খোলার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করায় বিলাসবহুল পণ্য হিসাবে গাড়ি আমদানি বন্ধ ছিল।
 
এদিকে গাড়ির বিশাল এই চালান আমদানির সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছেন ঢাকা ও চট্টগ্রামের ১২ থেকে ১৫ জন ব্যবসায়ী। বিশেষ করে আসন্ন বাজেটে আমদানি করা গাড়িতে শুল্কহার বাড়তে পারে- এই তথ্য থেকেই বেশি লাভের আশায় বাড়ছে গাড়ি আমদানি।
 
তবে এমন অভিযোগ মানতে নারাজ গাড়ি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস্ ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) বর্তমান ও সাবেক নেতারা।
 
বারভিডার সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বলেন, দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে হলে গাড়ির ব্যবহার সচল রাখতে হবে। আর বারভিডার নির্বাহী সদস্য কাওসার হামিদ বলেন, গত বছরের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত হওয়া এলসিগুলোতে এসব গাড়ি এসেছে। নতুন করে বাজেটকে কেন্দ্র করে এখন পর্যন্ত কোনো গাড়ি আসেনি।
 
 
এদিকে গত ৮ মাস ধরে আমদানি বন্ধ থাকায় একদিকে যেমন শোরুমগুলোতে গাড়ির সংকট ছিল, তেমনি সংকটের মুখে দামও ছিল লাগামহীন। এ অবস্থায় গাড়ি আমদানি পুনরায় শুরু হওয়ায় গাড়ির দাম কমবে বলে আশা সাধারণ ব্যবসায়ীদের। আর এই চালান থেকে সরকারের রাজস্ব আদায় হবে অন্তত ২০০ কোটির টাকার বেশি।
 
বারভিডার সাবেক কোষাধ্যক্ষ জুনায়েদ মো. হেলাল বলেন, গাড়ি সহজলভ্য হয়ে আসলে গাড়ির দাম কমে ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে চলে আসবে।
 
আর চট্টগ্রাম ম্যাক্সিম কার সেন্টারের পরিচালক মো. রোকন উদ্দিন বলেন, ডলারের ঊর্ধ্বগতির কারণে প্রচুর ডলার খরচ করে গাড়ি কিনতে হয়েছে। এখন গাড়ির দাম কিছুটা বাড়ায় লোকসান সাময়িকভাবে কিছুটা পুষিয়ে নেয়া যাবে।