রপ্তানিতে শুল্ক ছাড় চায় বাংলাদেশ

Transparent Newspaper Clipping Clipart - Prothom Alo Logo ...

ফখরুল ইসলাম

ঢাকা

বাংলাদেশের চাওয়া

এবারের বৈঠকে অংশ নিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যে প্রস্তুতি নিয়েছে, তাতে দেখা যায়, বাংলাদেশের আলোচ্যসূচি রয়েছে সাতটি।

সূত্রগুলো জানায়, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক এখন যে হারে শুল্ক দিয়ে রপ্তানি হচ্ছে, বাংলাদেশ সেখানে একটু ছাড় চায়। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আরও বেশি পণ্য যাতে রপ্তানি করা যায়, সে জন্য একটু অগ্রাধিকারও চায় বাংলাদেশ। দেশটি থেকে আমদানি করা তুলায় বাংলাদেশের রপ্তানির পোশাক তৈরি হয়। এ পোশাক শুল্কমুক্তভাবে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করতে চায় বাংলাদেশ।

বাংলাদেশি ওষুধ যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে (এফডিএ) নিবন্ধন পাওয়ার ক্ষেত্রে সময় বেশি লাগে। প্রক্রিয়াটিও জটিল। বাংলাদেশ চায় এ প্রক্রিয়া সহজ হোক।

বৈঠকে বাংলাদেশ মানসম্মত সনদ দেওয়ার জন্য অবকাঠামো তৈরিতে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে কারিগরি সহায়তাও চাইবে। আর চাইবে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হওয়ার পর সম্ভাব্য যেসব ঝুঁকির মধ্যে পড়বে, সেগুলো থেকে উত্তরণের জন্য সহায়তা।

টিকফা সই হওয়ার পর ৯ বছরে যতগুলো ফোরাম বৈঠক হয়েছে, তাতে কী লাভ হয়েছে—এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘উল্লেখযোগ্য কিছু হয়নি। তবে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। অন্য বারের মতো এবারও আমাদের পক্ষের বিষয়গুলো যুক্তি দিয়ে আলোচনায় তুলব।’

যুক্তরাষ্ট্র যা চায়

টিকফা ফোরামের বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচ্যসূচি ১১টি। বাংলাদেশ মোট তুলা আমদানির ১১ শতাংশ করছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। দেশটি বাংলাদেশে তুলা রপ্তানি বাড়াতে চায়। সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানি করার পর পোকা দমনের জন্য এগুলো কিছুদিন ওষুধ দিয়ে রেখে দিতে হয়। দেশটি এ ব্যবস্থার প্রত্যাহার চায়। যুক্তরাষ্ট্রের যুক্তি হচ্ছে, এতে খরচ ও সময় বেশি লাগছে বলে বাংলাদেশি আমদানিকারকেরা কম তুলা আমদানি করছেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে।

বাংলাদেশে বীজ রপ্তানি সুবিধা পেতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। এ জন্য দেশটি বীজ আইন প্রভিশন নিয়ে আলোচনা করবে। ডেটা সুরক্ষা আইন ও ডিজিটাল বিধির খসড়া, সোশ্যাল মিডিয়া, ইন্টারনেটের মাধ্যমে সরাসরি দর্শকদের কাছে যাওয়া ওভার দ্য-টপ (ওটিটি) প্ল্যাটফর্মস এবং অন্যান্য ডিজিটাল মাধ্যমও রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচ্যসূচিতে।

এ ছাড়া বাংলাদেশে মার্কিন বিনিয়োগ, রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে শ্রমিক অধিকার, শ্রম সংগঠন করার স্বাধীনতা, কারখানায় নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর কর্মপরিবেশ, শিশুশ্রম, মেধাস্বত্ব ইত্যাদি বিষয় রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচ্যসূচিতে।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পোশাক খাতের জন্য সুবিধা তো বটেই, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এখন চাওয়া উচিত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে দেশটির বিনিয়োগ কীভাবে আসতে পারে, সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।

মোস্তাফিজুর রহমান আরও বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণের পর সম্ভাব্য ঝুঁকি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক যে সমর্থন চাচ্ছে বাংলাদেশ, তাতে বিরোধিতা করছে যুক্তরাষ্ট্র। আলোচনার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন আদায়ে বাংলাদেশকে চেষ্টা করতে হবে। আর চীনের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশের জন্য একটা সুযোগ।