যোগ্যতাভিত্তিক পেশাগত দক্ষতা উন্নয়ন

  • মুহাম্মদ মিজানুর রহমান
  •  ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৬:৫৮, আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৭:০০
যোগ্যতাভিত্তিক পেশাগত দক্ষতা উন্নয়ন – ফাইল ছবি

৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ খুলনা, চট্টগ্রাম ও রংপুর বিভাগে নায়েমের আয়োজন ও ইউনিসেফের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হলো ‘একুশ শতকের শিক্ষক-যোগ্যতাভিত্তিক পেশাগত দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক ধারণায়ন’ আঞ্চলিক কর্মশালা। এই কর্মশালার মূল উদ্দেশ্য ছিল জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা-২০২১, শিক্ষায় রূপান্তর, টেকনোলজিক্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট ও শিক্ষা কার্যক্রমে এর ব্যবহার, জাতীয় উন্নয়ন অগ্রাধিকার ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত এবং স্মার্ট বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষকের যোগ্যতাভিত্তিক পেশাগত দক্ষতা উন্নয়ন কাঠামো সম্পর্কে মতবিনিময় ও ধারণা তৈরীকরণ। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শিক্ষকের দায়িত্ব-কর্তব্য, ক্যারিয়ার পাথওয়ে এবং ভবিষ্যতের শিক্ষক, শিক্ষক নিয়োগ ও শিক্ষকের পেশাগত দক্ষতা উন্নয়ন কাঠামো সম্পর্কে মতবিনিময় ও ধারণা প্রণয়ন।

মূল প্রতিবাদ্য বিষয় ছিল- ‘পরিবর্তিত শিক্ষা পরিস্থিতিতে কেমন শিক্ষক চাই’। শিক্ষার গুণগত মান পরিবর্তে শিক্ষা সম্পর্কিত অন্যান্য বিষয়গুলো সম্পর্কেও এখানে একটি খসড়া ধারণাপত্র তৈরি করা হয়েছে। সেখানে মতামত দিয়েছেন বোর্ডের চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে খুলনা ও বরিশালের শ্রেষ্ঠ সরকারি কলেজের প্রিন্সিপালসহ টিচার্স ট্রেনিং কলেজের প্রিন্সিপালরাও। বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের জেলা শিক্ষা অফিসার, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকরাও উপস্থিত ছিলেন। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে আগত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সমন্বয়ে এই ধারণাপত্র তৈরি করা হয়েছে। এখানে নায়েমের প্রশিক্ষণ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর শাহিদা আফরোজ, পরিকল্পনা ও উন্নয়নের পরিচালক মো: সেলিমুজ্জামানসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন। আশা করা হচ্ছে, নায়েম এগুলো থেকে বিচার-বিশ্লেষণ করে একটি চূড়ান্ত সুপারিশ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে।

আজকের এই নিবন্ধে ওই কর্মশালার আলোচিত বিষয়গুলো নিয়েই কথা হবে। তার আগে শিক্ষা নিয়ে একটু আলোচনা করা যাক। শিক্ষা হলো জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনের নাম যা ব্যক্তির অন্তর্নিহিত গুণাবলির পূর্ণ বিকাশে উৎসাহ দেয়। তাকে সমাজ বা রাষ্ট্রের একজন উৎপাদনশীল সদস্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভের জন্য যে দক্ষতার প্রয়োজন সেগুলো অর্জনেই ব্যক্তিকে সহায়তা দিয়ে থাকে। শিক্ষা সর্বজনীন, সহজলভ্য, বৈশি^ক পরিবর্তিত পরিস্থিতি মোকাবেলায় জ্ঞান ও দক্ষতায় পারদর্শী দক্ষ মানবসম্পদ গড়ার অবিরত প্রচেষ্টার নাম। মানবিক মূল্যবোধ-বিবর্জিত শিক্ষাপদ্ধতি কখনোই দায়িত্বশীল ও নৈতিকতাগুণসম্পন্ন মানুষ তৈরি করতে পারে না। শিক্ষা তখনই মানুষকে পূর্ণতা দান করে যখন জ্ঞানের মাধ্যমে সে নিজের মধ্যে ন্যায়-অন্যায় বোধ তৈরি করতে সক্ষম হয়।

শিক্ষা মুখস্থ করার কোনো বিষয় নয়, এটি আত্মস্থ বা উপলব্ধির বিষয়। বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তি ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের উৎকর্ষে বৈশ্বিক পরিস্থিতি এমন একটি অবস্থার দিকে এগিয়ে চলেছে, আগামী দিনগুলোকে মানুষের পেশার সঠিক রূপরেখা আসলে কী হতে পারে, তা এখনো অনেকেরই ধারণা নেই। চ্যাটজিপিটির মতো প্রযুক্তির উদ্ভাবন সত্যিই আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে। এটি মানুষের কাজকে অনেক সহজ করে দিয়েছে। সময়ের সাশ্রয় করছে। হয়তো বিদ্যমান অনেক পেশাই একদিন হারিয়ে যাবে বা আগের মতো জনবলের প্রয়োজন হবে না। এর পরিবর্তে নতুন কোনো পেশার সূচনা হবে। সুতরাং আমাদের সেই বিশ^মানের নাগরিক তৈরির কথা ভাবতে হবে, যারা দেশীয় পরিমণ্ডল ছাপিয়ে ইউরোপ-আমেরিকার মতো দক্ষ মানবসম্পদের সাথে নিজের সফল অস্তিত্বের জানান দিয়ে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারবে। আমাদের প্রতিযোগী পাশের প্রতিবেশী মানুষটি নয়; বরং সে হবে ইউরোপ বা আমেরিকার কোনো দক্ষ নাগরিক। সুতরাং শিক্ষাক্রমকে সেভাবে সাজিয়েই আমাদের অগ্রযাত্রা শুরু হতে হবে।

তাই মুখস্থনির্ভরতার পরিবর্তে অভিজ্ঞতা ও কার্যক্রমভিত্তিক শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়ে নতুন কারিকুলাম প্রণয়ন করা হয়েছে। এই কারিকুলামে মূলত একজন শিক্ষার্থীকে জ্ঞান, দক্ষতা, মূল্যবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গির সমন্বয়ে যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। পুরো শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালিত হবে আনন্দময় পরিবেশের মধ্য দিয়ে। শিক্ষার্থীরা সক্রিয়ভাবে সেশনগুলোতে অংশগ্রহণ করবে। গভীর শিখনের মাধ্যমে তারা যোগ্যতাগুলো অর্জন করবে।

অতসব পজিটিভ দিকগুলোর ভেতর থেকে যে কথাটি মুখ্য হয়ে উঠে তা হলো- এরকম এক ভালো উদ্যোগকে শিক্ষা ও সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় সম্পৃক্ত করার জন্য আমরা কতটুকু প্রস্তুত। সীমাবদ্ধতা আমাদের থাকবে, তা মেনে নিয়েই কীভাবে একে বাস্তবায়ন করা যায় সে পরিকল্পনা করতে হবে। পরিবর্তিত শিক্ষা পরিস্থিতিতে এমন শিক্ষক প্রয়োজন যারা নতুন এই চিন্তাধারাকে নিজের মধ্যে লালন করার সক্ষমতা রাখেন। যারা নিজেরা স্বপ্ন দেখেন; অন্যকে স্বপ্ন দেখাতে পারেন। মানুষকে সৃষ্টিশীল কাজে তারাই উদ্বুদ্ধ করতে পারেন, যারা নিজেরা সৃষ্টিশীল কিছু করতে জানেন। নতুন এই কারিকুলামের একটি বড় অংশজুড়েই ক্রিয়েটিভ থিংকিংকে ফোকাস করা হয়েছে।

যে কথাটি এখন শেষ কথা হয়ে দাঁড়িয়েছে- আগে শিক্ষককে বিষয়টি ভালো করে বুঝতে হবে। তবেই না তিনি শিক্ষার্থীদের এ সম্পর্কে সঠিক ধারণা দিতে পারবেন। মজার বিষয়- অনেক শিক্ষক এ কারিকুলাম নিয়ে সমালোচনার ঝড় তোলেন, আসলে তারা নিজেরাও কারিকুলামের গভীর দিকটি ভেবে দেখতে চান না। আমরা রেডিমেড বিষয়গুলোতে এতটা অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি যে, নিয়মিত স্টাডি, গবেষণা- এগুলো প্রায় অনেকের কাছেই অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে। বৈশি^ক শিক্ষাপদ্ধতি এখান থেকে অনেক এগিয়ে। ফলে আজকে তারা যেটি কল্পনা করছে, আমরা সেটিকে অবাস্তব বলে উড়িয়ে দিচ্ছি। সুতরাং সময়ের সাথে শিক্ষকের আপডেট হওয়াটা অনেক বেশি জরুরি। শিক্ষা ডিপার্টমেন্টে এমন সব মুখগুলোকে নিয়ে আসতে হবে, যারা সমাজের আইকন হয়ে দাঁড়াতে পারেন।

শিক্ষা পেশার প্রতি যদি মানুষের আগ্রহ তৈরি করা না যায়, তাহলে মেধাবীরা এখানে কেন আসবেন? অন্যান্য পেশার মতো শিক্ষাকে একটি ট্র্যাডিশনাল ধারায় চিন্তা করা হলে শিক্ষায় কাক্সিক্ষত পরিবর্তন কখনোই সম্ভব নয়। মর্যাদাগত দিক থেকে এটিকে অবশ্যই একটি ভালো জায়গায় দাঁড় করাতে হবে। আজকে যদি আপনি মুক্তভাবে শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন করেন, তুমি কী হতে চাও? হয়তো তার পছন্দমতো লোভনীয় পেশাগুলোর কথা সে বলবে। কারণ সেখানে সে জীবনের একটি অপার সম্ভাবনা দেখতে পায় যেগুলো মানুষের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধিতে সহায়ক। রাষ্ট্র যদি শিক্ষাকে সেই জায়গায় নিয়ে আসতে পারে, আগামী প্রজন্ম একদিন স্বপ্ন দেখবে, তাকে শিক্ষক হতে হবে। যে ছেলেটি আজকে প্রশাসনের বড় ক্যাডার হতে চাইছে, সে-ই শিক্ষক হতে চাইবে যার কিছু অভিজ্ঞতা আমাদের সামনে রয়েছে। সেরাদের সেরারাই বিশ^বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার পেশাকে বেছে নিচ্ছেন। অনেক লোভনীয় অফার ছেড়েও তারা পাবলিক বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়াকে সৌভাগ্য মনে করছেন। কারণ এটি মানুষের মনে একটি গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করেছে।

সুতরাং শিক্ষাকে শিক্ষার জায়গায় রেখে এর মানোন্নয়নে কাজ করতে হবে। ভাবতে হবে অনাগত জাতির ভবিষ্যতের কথা। কে কতটুকু লাভবান হলো এই চিন্তা মাথায় রেখে এ খাতের প্রভূত উন্নতি সাধন করা খুবই দুরূহ ব্যাপার। একটি সিস্টেম ও কোয়ালিটির আওতায় একে নিয়ে আসতে হবে, যাতে এটি মেধাবীদের বিচরণক্ষেত্রে পরিণত হয়; হায়ার এডুকেটেড, কোয়ালিফাইড ও ক্রিয়েটিভ চিন্তাসম্পন্ন মানুষগুলোর মূল্যায়ন বাড়ে। শিক্ষকের মান ও কোয়ালিটির ব্যাপারে আপসহীন থাকতেই হবে। শিক্ষকের ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ রেখে একুশ শতকের যোগ্যতাভিত্তিক পেশাগত দক্ষতা উন্নয়ন কোনোভাবেই সম্ভব নয়। মানবিক মূল্যবোধ ও দায়িত্বজ্ঞানের জায়গায় যতক্ষণ শিক্ষককে দেখা না যাবে, আদর্শিক একটি পরিবর্তনের কথা ততক্ষণে চিন্তা করা একটু কঠিন ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে।

একুশ শতকের শিক্ষককে শিক্ষার্থীসমাজ কীভাবে গ্রহণ করবে সেটি এখনি আমাদের চিন্তা করতে হবে। যদি একটি সুনিশ্চিত ও সুন্দর জীবনের নিশ্চয়তা দেয়া না যায়, এই পেশার প্রতি কখনোই মানুষ আগ্রহ অনুভব করবে না। আর্থিক ও সামাজিক সুন্দর জীবনের নিশ্চয়তা কে না চায়? বিতর্কিত বিষয়গুলো বাদ দিয়ে যদি আমরা শিক্ষকের আর্থিক ও সামাজিক মর্যাদার দিকটি হিসাব করি, তাহলে শিক্ষক সমাজের অবস্থান কোথায়? শ্রেণিবৈষম্যের তফাতে শিক্ষকের কাছে শিক্ষকের মর্যাদাও প্রশ্নবিদ্ধ। আর্থিক বৈষম্যের কথা তো আছেই। শিক্ষককে কেন নিছক শিক্ষক হিসেবে ভাবতে পারলাম না?

একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় যোগ্য শিক্ষক প্রয়োজন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে যারা শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন হয়তো খুব কম সংখ্যক নিজের ইচ্ছাতেই এই পেশায় এসেছেন। কারণ এখন পর্যন্ত এটি সাধারণ মানুষের কাছে আকর্ষণীয় পেশা হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি। হয়তো ভাবাবেগের জায়গায় পক্ষে-বিপক্ষে কথা হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ যদি আমরা মাধ্যমিক স্তরের কথাই ধরি, এটি আমাদের বড়ই আশাহত করেছে। এখানে উল্লেখযোগ্য কোনো পদসোপান নেই। মাত্র দু’টি পদ। সহকারী শিক্ষক ও সিনিয়র শিক্ষক। সদিচ্ছা থাকলে এন্ট্রি পদ নবম গ্রেড ধরে এখানে চারটি পদসোপান করা যেত। অদ্যাবধি সে কাজটি হয়নি। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পদবিন্যাস ও মর্যাদাগত সঙ্কীর্ণ চিন্তাগুলো বিশাল এক বৈষম্য সৃষ্টি করে শিক্ষা পরিবেশে। যোগ্যতা ও দক্ষতাকে ক্রাইটেরিয়া রেখে একটি বেতন স্কেলের কথা আমরা এখনো কল্পনাও করতে পারিনি। আমরা শুধু প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজ ইগোতে পড়ে আছি। যে ছেলে বা মেয়েটি দক্ষতা প্রমাণের মাধ্যমে শিক্ষার ন্যূনতম স্তরেও প্রবেশের যোগ্যতা রাখে না, সে-ও কিছু দিন আগ পর্যন্ত একটি ভালো অবস্থানে বসার জায়গা করে নিতে পারত। সামগ্রিকভাবে এটি জাতিকে কী দিলো?

আমরা মনে করি, একটি শিক্ষক নিয়োগ কমিশন থাকা উচিত, যাদের মাধ্যমে পুরো নিয়োগ, পদায়ন ও প্রমোশনের কাজটি সম্পন্ন করা হবে। প্রত্যেকটি শিক্ষা ডিপার্টমেন্টে ডিপার্টমেন্টাল পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকবে। সেখানে যারা অপেক্ষাকৃত ভালো করবে তাদের উপরের দিকে পূর্ববর্তী স্তরে উন্নীত করা হবে। ফলে একজন প্রাথমিকের শিক্ষক যোগ্যতা প্রমাণের মাধ্যমে ধাপে ধাপে মাধ্যমিক, কলেজ ও বিশ^বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করার অধিকার রাখতে পারবেন। এটি শিক্ষার মানোন্নয়নে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হতে পারে। অন্য দিকে এটিও হতে পারে, একজন শিক্ষক খুব ভালো মানের, যার একাডেমিক সর্বোচ্চ যোগ্যতা ও বিষয়ভিত্তিক গবেষণাসহ সব ধরনের যোগ্যতা রয়েছে, তার বেতন কাঠামো সেই মানেরও করা যেতে পারে। তিনি যে স্তরেই কাজ করতে চান না কেন, সেটি তার ফিল্ড হিসেবে বিবেচিত হবে।

শিক্ষকের মানোন্নয়নে প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। এ জন্য প্রত্যেকটি স্তরের জন্য বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ অপরিহার্য। যেটি হতে হবে একটি মানসম্পন্ন, সুন্দর পরিবেশ ও আবাসন সুবিধা নিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে। কাজের প্রেরণা বা প্রণোদনা না থাকলে কাজের প্রতি মানুষের আগ্রহ তৈরি হয় না বা ভালো লাগার জায়গাটি উপলব্ধি করা যায় না। সৃষ্টিশীল কাজের একটি বড় বিষয়ই হলো, থিংকিং আইডিয়াকে ক্রমাগত ডেভেলপ করা। আর এটি সম্ভব, কেবল গবেষণা কর্মের মধ্য দিয়ে। কিন্তু শিক্ষার সর্বস্তরে রাষ্ট্রীয়ভাবে সেই ধরনের সুযোগ-সুবিধা সমানভাবে নেই। মাধ্যমিকে এ বিষয়টি এতই সঙ্কীর্ণ যে, কেউ আগ্রহী হয়ে কাজ করতে চাইলেও রাষ্ট্রীয়ভাবে তেমন কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই; বরং পদে পদে বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। ‘একুশ শতকের শিক্ষক-যোগ্যতাভিত্তিক পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নে’ এই প্রতিবন্ধকতাগুলো যদি আমরা দূর করতে না পারি, আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা পদ্ধতিতে আমরা কতটুকু সম্পৃক্ত হতে পারব, সেটি দেখতে সময়ের অপেক্ষা মাত্র।

লেখক : গল্পকার, প্রাবন্ধিক ও গবেষক