- আফফান উসামা
- ২১ জুন ২০২২, ১৯:১১
‘আহত বাঘ হিংস্র বড়, যাস না তো কভু ভুলে;
প্রাণ হারাবি বাঘের লেজে কাটা কান চুলকালে!’
ঠিক সাত বছর আগের আজকের দিনটার মূল্যায়নে এর থেকে ভালো সমার্থক ছন্দ-বাক্য আর কিইবা হতে পারে? শুধুই বলা যায় অসাধারণ একটা অনুভূতি ছিল সেই ক্ষণে। জয় তো অনেক এসেছে, বড় দলের বিপক্ষেও বাঘেরা হেসেছে। কতবার রূপকথা লিখেছে, কিন্তু এই জয়টা নিঃসন্দেহে অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে বাঙালির কাছে।
সেদিনও দিনটা বিষন্ন ছিলো, নীল আকাশের মন খারাপ ছিল। তবে গোটা বাংলাদেশ হেসে উঠেছিল, উন্মাদনার উত্তাল স্রোতে ভেসে গিয়েছিল। এমন দিন কি বার বার আসে? এই মুহূর্তগুলো কে চাইবে হারাতে? প্রতিশোধে পরিতৃপ্ত তো সবাই হয়, ইটের জবাবে পাটকেলই তো উপযুক্ত হয়।
১৫-এর বিশ্বকাপে কেমন বিতর্কিত ছলচাতুরি করে কিভাবেই না মন ভেঙে কম্পন তুলেছিলো ব-দ্বীপের ১৬ কোটি অন্তরে। কাঁদিয়েছিল গোটা বাংলাদেশকে। কিন্তু কে জানত তা হিতের বিপরীত হয়ে তাদের দিকেই ধাবিত হবে। শোককে শক্তি করে তাদের দর্প চুর্ণ করল নিজ দেশে ডেকে এনে।
প্রতিশোধ আরো একটা ছিল, আগের ম্যাচে নাচিয়ে ছাড়া মুস্তাফিজ এই ম্যাচে ছিলেন আরো ভয়ঙ্কর ভূমিকায়। তার বলে ভারতীয় ব্যাটাররা এত চাপে ছিলেন যে সেই চাপে পড়ে ক্যাপ্টেন কুল খ্যাত ধোনিরও মাথা গরম হয়ে যায়। ধাক্কা মেরে বসেন মুস্তাফিজকে। আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে উঠে যেতে হয় তাকে। কিন্তু তাতে কি বাকিরা দমে যাবে?
বরাবরই চোখে চোখ রেখে কথা বলা প্রতিবাদী সাকিব যেন তা এই ধাক্কা সইতে পারলেন না। পরের ওভারেই বোলিংয়ে এসে ঘূর্ণি বিভ্রমে বোকা বানিয়ে ধোনিকে সাজঘরের পথ দেখিয়ে যেই কড়া উদযাপনটা করলেন, নিঃসন্দেহে বুঝতে বাকি নেই ক্ষেপে ছিলেন কতটা। বরাবরই ভিন্ন সাকিব চরিত্রটা। এ জন্যই তো সবার সেরা।
মুস্তাফিজের ৪৩ রানে ৬ উইকেট শিকারে ৬ উইকেটে জিতে যায় বাঙালিরা। পরিপূর্ণ হয় প্রতিশোধের ষোলকলা। জিতে যায় সাহসীরা, হেসে উঠে গোটা বাংলাদেশ।