- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৫ মে ২০২২, ১৭:৩৮, আপডেট: ১৫ মে ২০২২, ২০:৪৮
চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনটা অনুমিতভাবে নিয়ে নিল শ্রীলঙ্কাই। দিন শেষে দলটির সংগ্রহ ৪ উইকেটে ২৫৮ রান। সেঞ্চুরি করেও অপরাজিত আছেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস। তার সঙ্গে অপরাজিত আছেন অভিজ্ঞ দিনেশ চান্দিমাল।
দিনটি বাংলাদেশের বোলারদের জন্য হতাশারই। বিশেষ করে পেসারদের জন্য। দুই পেসার শরিফুল ইসলাম ও খালেদ আহমেদ পাননি কোন উইকেটের দেখা। চার উইকেট নিতে পেরেছে বাংলাদেশ, এই চারটিই নিয়েছেন তিন স্পিনার। সব মিলিয়ে প্রথম টেস্টের প্রথম দিন শেষে বেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে সফরকারী শ্রীলঙ্কা।
দিনের শুরুতে টস জিতে ব্যাট করতে নামে শ্রীলঙ্কা। ফার্নান্দোর সাথে অধিনায়ক করুনারত্নে শুরু থেকে দেখেশুনে খেলছিলেন। তারপরও জুটি বড় হয়নি। দলীয় ২৩ রানের মাথায় বাংলাদেশ পায় প্রথম উইকেটের দেখা। মিরাজের বদলে স্কোয়াডে আসা নাঈম ইসলামের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফিরেছেন লঙ্কান অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নে। ১৭ বলে ৯ রান করেন করুনা।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে কুশল মেন্ডিজের সাথে হাল ধরেন ওপেনার ওশাদা ফার্নান্দো। এই জুটি বেশ জমে গিয়েছিল। তবে শেষ অবধি এই জুটি ভাঙেন স্পিনার নাঈম হাসানই। তার বলে উইকেটের পেছনে লিটনের হাতে ক্যাচ দেন ফার্নান্দো। ৭৬ বলে ৩৬ রান করে ফেরেন তিনি। তিন চারের পাশাপাশি তিনি হাঁকান এক ছক্কা। শ্রীলঙ্কার দলীয় রান তখন ৬৬।
এরপর আরেকটি রিভিউতে অসফল বাংলাদেশ। শরিফুলের বলে ম্যাথুসের এলবিডব্লিউর আবেদন সাড়া মেলেনি। এর কিছুক্ষণ পর নাঈমের বলে হাঁকাতে গিয়ে কুসলের ব্যাট চলে গিয়ে লাগে লিটনের হেলমেটে। ভাগ্য ভালো, আঘাত পাননি তিনি খুব একটা।
প্রথম সেশন শেষে শ্রীলঙ্কার হয়ে ক্রিজে অপরাজিত ছিলেন কুশল মেন্ডিস (২৭) ও অ্যাঞ্জোলো ম্যাথুস (০)। দ্বিতীয় সেশনে দুজনই পান ফিফটির দেখা। শ্রীলঙ্কার স্কোরও বেড়ে যায় আস্তে আস্তে। দ্বিতীয় সেশনে বাংলাদেশের বোলারদের উপর রীতিমতো ছড়ি ঘুড়িয়েছেন দুজন। কুশল মেন্ডিস পান টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৩তম ফিফটি। অন্যদিকে অভিজ্ঞ অ্যাঞ্জোলো ম্যাথুস পান টেস্ট ক্যারিয়ারের ৩৮তম ফিফটি।
৯২ রানের এই জুটি শেষ পর্যন্ত ভাঙতে পারে বাংলাদেশ তৃতীয় সেশনের শুরুতে। আগের দুটি উইকেট নিয়েছিলেন স্পিনার নাঈম ইসলাম। এবার ব্রেক থ্রু এনে দেন আরেক স্পিনার তাইজুল ইসলাম। তার বলে নাঈম ইসলামের হাতে ক্যাচ দেন কুশল। ১৩১ বলে ৫৪ রানের চরম ধৈর্যশীল ইনিংস খেলেন তিনি। কুশলের ইনিংসে ছিল তিনটি চারের মার।
চা-বিরতির পর বল হাতে নিয়েই সাফল্য পান সাকিব আল হাসান। চমৎকার এক ডেলিভারিতে বিদায় করে দেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাকে। পা বাড়িয়ে ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন ধনাঞ্জয়া। ঠিক মতো পারেননি, ব্যাটের কানা ছুঁয়ে প্যাডে লেগে ক্যাচ যায় স্লিপের দিকে। প্রথম স্লিপ থেকে কিছুটা সামনের দিকে এগিয়ে ঝাঁপিয়ে মুঠোয় নেন মাহমুদুল হাসান জয়।
আম্পায়ার আউট না দিলে রিভিউ নেন মুমিনুল হক। দুটি ব্যর্থ রিভিউয়ের পর এবার সফল হয় বাংলাদেশ। আল্ট্রা এজে ব্যাটে বল স্পর্শ করার প্রমাণ মেলার পর পাল্টায় সিদ্ধান্ত। ভাঙে ২৫ রানের জুটি। ২৭ বলে ধনাঞ্জয়া করেন ৬ রান।
তবে অপর প্রান্তে অ্যাঞ্জোলো ম্যাথুস ছিলেন দৃঢ়চেতা। ফিফটির পর ক্রমশ এগিয়ে যান সেঞ্চুরির দিকে। এক সময় পেয়েও যান। শরিফুলকে চমৎকার এক ফ্লিকে চার মেরে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস পৌঁছে যান নতুন উচ্চতায়। আগের সেরা ৮৬ ছাপিয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম সেঞ্চুরির স্বাদ পান অভিজ্ঞ এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। ১৮৩ বলে ক্যারিয়ারের দ্বাদশ সেঞ্চুরি পান ম্যাথুস। তার ফিফটি এসেছিল ১১১ বলে।
দিন শেষে ম্যাথুস থাকেন অপরাজিত ১১৪ রানে। ২১৩ বলের ইনিংসে তিনি হাকান ১৪টি চার ও একটি ছক্কা। তার সঙ্গে চান্দিমাল আছেন ৩৪ রানে। ৭৭ বলের ইনিংসে তিনি হাকান দুটি চার।
বল হাতে বাংলাদেশের হয়ে নাঈম হাসান নেন দুটি উইকেট। একটি করে উইকেট পান সাকিব আল হাসান ও তাইজুল ইসলাম। দুই পেসার শরিফুল ইসলাম ও খালেদ আহমেদ থাকেন উইকেটশূন্য।