- ২০ মার্চ ২০২৩, ২৩:০১
শতক তো বিশ্ব ক্রিকেটে অনেক হয়, বাংলাদেশেও হয়েছে; কিন্তু এমন খাঁদহীন শতক দেখা মেলা ভাগ্যেরই ব্যাপার বটে। মুশফিকুর রহিমের এই শতক প্রতিপক্ষ তো বটেই, চমকে দিয়েছে তার সতীর্থদেরও। এমনকি ম্যাচ শেষে লিটন দাস তো অকপটে বলেই দিলেন ‘এমন শতক তিনি আগে কখনো দেখেননি!’
মাঠে নেমেছিলে ৩৩.২ ওভারে। সেখান থেকে ইনিংসের শেষ বলে শতক, মাত্র ৬০ বলে ১৪ চার আর ২ ছক্কায় তিন অঙ্কের ঘরে! ব্যাকরণসম্মত ব্যাটিং বলতে যা বুঝায়, তারই যেন প্রদর্শনী চলল মুশফিকের ব্যাটে। তার ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিল, যেন আলাদিনের চেরাগ পেয়েছেন, যখন যেভাবে যা করতে চাচ্ছেন, সবই হয়ে যাচ্ছে, পেয়ে গেছেন শতকও।
সংবাদ সম্মেলনে তাই মুগ্ধতা ঝরল লিটনের কণ্ঠে। লিটন জানালেন, ‘অনেক ভালো অনুভূতি হচ্ছে। সত্যি কথা বলতে আমি যতদিন যাবত খেলতেছি, বাংলাদেশের কোনো খেলোয়াড় শেষ দিকে গিয়ে ১০০ করেনি। যখন দল থেকে কেউ এরকম একটা সেঞ্চুরি করে, দেখলে অনেক ভালো লাগে। সিনিয়ররা কেউ করলে তো আরো ভালো লাগে।’
মুশফিকের আগে ছয় নম্বরে বা তার পরে নেমে শতক করেছেন আরো পাঁচজন। তারা হলেন অলক কাপালি, নাসির হোসেন, মাহমুদউল্লাহ, সাব্বির রহমান ও মেহেদী হাসান মিরাজ। মিরাজের সেই শতক তো এখনো স্মৃতিতে বাঁধা, মাস তিনেক আগে ভারতের বিপক্ষে এই কীর্তি গড়েন তিনি। যাহোক, বাকি পাঁচজনের শতক থেকেও কেন মুশফিকেরটা একটু ভিন্ন, যদিও প্রতিপক্ষ হতে পারে সহজলভ্য।
এর আগে পাঁচজন শেষ দিকে নেমে শতক পেলেও সবার সাথে মুশফিকের ভিন্নতা আছে। মুশফিক এইদিন মাঠে নেমেছিলেন ৩৪তম ওভারে। এত কম ওভার হাতে রেখে শতক ছোঁয়ার রেকর্ড আর একটাও নেই এদেশের ক্রিকেটে; বিশ্ব ক্রিকেটেও তা বিরল।
সিরিজের প্রথম ম্যাচেও দুর্দান্ত ছিলেন মুশফিক। তার বদলে যাবার শুরুটা সেখানেই, সেদিনই দেখা গিয়েছিল তার এমন ভিন্নরূপ। ২৬ বলে খেলেছিলেন ৪৪ রানের ইনিংস, যেই ইনিংস কতটা মূল্যবান ছিল তা ম্যাচ শেষে সেদিনি বলেছিলে অধিনায়ক তামিম ইকবাল। বলেছিলেন ছোট হলেও মুশফিকের এই ইনিংসটাই ম্যাচের চিত্র পাল্টে দিয়েছে।
আগের ম্যাচে যেখানে শেষ করেছিলেন, আজ যেন সেখান থেকেই শুরু করলেন মুশফিক। মেটালেন সব আক্ষেপ, সব অভিযোগ; ছুয়েছেন শতক। তবে লিটনের মুখে তবুও শোনা গেল আগের ম্যাচেরই সুর। বলেছেন আজকের ম্যাচ নিয়েও। তবে ফলাফল না আসায় হতাশ তিনি।
লিটন বলেন, ‘মুশফিক ভাইয়ের শুধু আজকের ইনিংস না, আগের ইনিংসটাও দেখেন; অসাধারণ ছিল। যদিও রান বেশি না, ৪০ বা এর বেশি ছিল; কিন্তু সেটাই বিগ মার্জিন তৈরি করে দেয় ৩০০ প্লাস করতে। আজকের ইনিংসটা তো ডিফারেন্ট বল গেম করে দিয়েছে মুশফিক ভাইয়ের ইনিংসটা। ম্যাচটা হলে অবশ্যই ভালো লাগতো। কিন্তু তা তো আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই।’