মিল্ক ভিটার ৪ হাজার একর জমি বেদখলে
বাংলাদেশ দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লিমিটেডের (মিল্ক ভিটা) ৫ হাজার একর গো-চারণ ভূমির মধ্যে ৪ হাজার একরই বেদখল হয়ে গেছে। এই জমি উদ্ধারে তৎপর হতে বলেছে জাতীয় সংসদের সরকারি প্রতিষ্ঠান কমিটি। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত দুর্নীতিবাজ ও অদক্ষ কর্মচারীদের চিহ্নিত করে তাঁদের ছাঁটাই করার সুপারিশ করেছে কমিটি।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ ভবনে সরকারি প্রতিষ্ঠান কমিটির বৈঠকে মিল্ক ভিটা নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠক সূত্র জানায়, বৈঠকে বলা হয় যে পাবনা, সাঁথিয়া ও বেড়া এলাকায় গো-চারণ ভূমি হিসেবে ৫ হাজার একর ভূমি মিল্ক ভিটাকে দেওয়া হয়। এর মধ্যে এখন মিল্ক ভিটার দখলে আছে মাত্র ১ হাজার একর জমি। বেদখল হয়ে যাওয়া জমি নিয়ে কিছু মামলা আছে। তবে জমি উদ্ধারে আইনি লড়াইয়ে যেতে মিল্ক ভিটা যথেষ্ট তৎপর নয় বলে মনে করে সংসদীয় কমিটি। এ কারণে কমিটি উষ্মা প্রকাশ করে।
বৈঠকে বলা হয়, গত বছর ‘মিল্ক ভিটার দুরবস্থা’ ঠেকাতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ১৪ দফা সুপারিশ দিয়েছিল। কিন্তু এগুলো বাস্তবায়নে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। প্রতিষ্ঠানটি লাভে থাকলেও ক্রমে লাভের পরিমাণ কমছে। দুধের উৎপাদন ২ লাখ লিটার থেকে ৯০ হাজার লিটারে নেমে এসেছে। এসব নিয়ে কমিটি ক্ষোভ প্রকাশ করে। আজকের বৈঠকে মিল্ক ভিটার চেয়ারম্যান শেখ নাদির হোসেন উপস্থিত না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন কমিটির সদস্যরা।
বৈঠকে মিল্ক ভিটার দুধের গুণগত মান নিয়েও আলোচনা হয়। মিল্ক ভিটা কর্তৃপক্ষ দেশি বিদেশে কয়েকটি পরীক্ষাগারে মিল্ক ভিটার দুধ পরীক্ষা করিয়ে তার ফলাফল বৈঠকে তুলে ধরে। সেসব প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে মিল্ক ভিটার দুধে যে পরিমাণে সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে তা সহনীয় মাত্রার চেয়ে অনেক কম।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি আ স ম ফিরোজ সাংবাদিকদের বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৫ হাজার একর খাস জমি বরাদ্দ দিয়েছিলেন। কিছু অসাধু সরকারি কর্মকর্তার যোগসাজশে পর্যায়ক্রমে ৪ হাজার একর জমি বেদখল হয়ে গেছে। অনেক জমি ব্যক্তির নামে চলে গেছে। এসব জমি উদ্ধারে তৎপর হতে বলেছে কমিটি। তিনি বলেন, মিল্ক ভিটাও স্বীকার করেছে কিছু ক্ষেত্রে অনিয়মের কারণে লাভের পরিমাণ কমছে। তাঁরা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের ছাঁটাই করতে বলেছেন। কমিটি বলেছে, মিল্ক ভিটাকে লাভেও থাকতে হবে, গুণগত মান সম্পন্ন পণ্যও সরবরাহ করতে হবে।
আ স ম ফিরোজের সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান, ওমর ফারুক চৌধুরী, ইসমাত আরা সাদেক, নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, মাহবুব উল আলম হানিফ, মির্জা আজম, মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম ও জিল্লুল হাকিম বৈঠকে অংশ নেন।