এর আগে ওই মামলায় জামিন চেয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাস গতকাল সোমবার হাইকোর্টে আবেদন করেন, যা আজ শুনানির জন্য ওঠে। শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার বিকেলে রুলসহ তাঁদের জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
আদেশের পর অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর প্রথম আলোকে বলেন, মির্জা ফখরুল ও আব্বাসের জামিন মঞ্জুর করে হাইকোর্ট যে আদেশ দিয়েছেন, তা স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করা হবে। শিগগিরই এ আবেদন করা হবে। মহাসচিবের ড্রয়ারে দুই লাখ টাকা এবং তার কার্যালয়ে ককটেল পাওয়া গেছে। প্রাথমিক তদন্তে এসেছে যে তাঁরা পরিকল্পনাকারী ও উসকানিদাতা, যা আসামি চালানপত্রে (ফরোয়ার্ডিং লেটারে) উল্লেখ করা হয়েছে।
ওই মামলায় মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের জামিন আবেদন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে তিনবার নাকচ হয়। সর্বশেষ ২১ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতেও তাঁদের জামিন আবেদন নাকচ হয়। এ অবস্থায় গতকাল হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় তাঁদের জামিন চেয়ে আবেদনটি করা হয়।
আদালতে আজ জামিন আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী সগীর হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর। শুনানিকালে আবেদনকারীদের পক্ষে আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, মো. আসাদুজ্জামান, কায়সার কামাল, মো. রুহুল কুদ্দুস, মনিরুজ্জামান আসাদ প্রমুখ শুনানিতে ছিলেন।
আদেশের পর আইনজীবী কায়সার কামাল বলেন, হাইকোর্ট মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে ছয় মাসের জামিন দিয়েছেন। কেন তাঁদের নিয়মিত জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে চার সপ্তাহের রুল দিয়েছেন আদালত।
মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের বাসায় গত ৮ ডিসেম্বর গভীর রাতে পৃথক অভিযান চালায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। দুজনকে প্রথমে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে। ৯ ডিসেম্বর দুপুরে ডিবি আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়, ‘পুলিশের ওপর বর্বরোচিত হামলা, উসকানিদাতা, পরিকল্পনাকারী ও নির্দেশদাতা হিসেবে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’ এর পর থেকে তাঁরা কারাগারে।
৭ ডিসেম্বর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এতে একজন নিহত ও অর্ধশতাধিক আহত হন। সংঘর্ষের পর পুলিশ বিএনপির কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে তিন শতাধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে। বিএনপির কার্যালয়ে অভিযান ও নয়াপল্টনে সংঘর্ষের ঘটনায় পল্টন, মতিঝিল ও শাহজাহানপুর থানায় একটি করে এবং রমনা থানায় দুটি মামলা হয়।