মির্জা ফখরুলের জামিন নামঞ্জুর করে হাইকোর্টের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ

হাইকোর্ট ভবন
হাইকোর্ট ভবনফাইল ছবি

 

প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার অভিযোগে করা মামলায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিন প্রশ্নে রুল খারিজ করে হাইকোর্টের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশিত হয়েছে। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে আট পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়।

রুলের ওপর শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ১০ জানুয়ারি ওই রায় দেন।

ঘটনা পর্যালোচনা করে পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়, ‘অভিযুক্ত আবেদনকারী (মির্জা ফখরুল) দীর্ঘ সময় ধরে আন্দোলন করছেন, যাকে তিনি জনগণের ভোটাধিকার আদায়ের আন্দোলন দাবি করে আসছেন। দুর্ভাগ্যবশত, বিগত কয়েক মাসে দেখা গেছে যে কথিত ওই ভোটাধিকারের দাবি দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টিতে যুক্ত হয়েছে। যাতে প্রাণহানি, অগ্নিসংযোগ, হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্স এবং দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহনকারী সরকারি ও ব্যক্তিগত যানবাহন, পুলিশের গাড়িতে হামলার মতো ঘটনা রয়েছে। সংক্ষেপে বলা যায়, কথিত আন্দোলনকারীরাই ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। আমরা এসব অযৌক্তিক ও ধ্বংসাত্মক ঘটনা বিবেচনায় নিয়েছি, যেগুলো দৃশ্যত দেশে আতঙ্ক তৈরি করেছে। বস্তুত দেশ ও দেশের জনগণকে জাহান্নামে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’

রায়ে আদালত বলেছেন, ‘আবেদনকারী বিপর্যয়কর ও উচ্ছৃঙ্খল এসব ঘটনার পরিকল্পনাকারী বা তাঁর কোনো ভূমিকা ছিল কি না, সে বিষয়ে কেবল সুষ্ঠু তদন্তের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে। তদন্তের নিরপেক্ষতা নিশ্চিতে এই পর্যায়ে তাঁর মুক্তির জন্য জামিন দেওয়া সহায়ক হবে না বলে আমরা মনে করছি। (মামলায়) কিছু ধারা আছে জামিন অযোগ্য। প্রজাতন্ত্র ও জনগণের নিরাপত্তাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ—বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আমরা রুলটি খারিজ করছি।

মির্জা ফখরুলের জামিন আবেদনে যুক্তি হিসেবে তাঁর অসুস্থতার কথা উল্লেখ করা হয়েছিল। হাইকোর্ট তাঁর অসুস্থতার দিক বিবেচনা করে যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলায় গত ২২ নভেম্বর ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে মির্জা ফখরুলের জামিন আবেদন নামঞ্জুর হয়। এরপর জামিন চেয়ে গত ৫ ডিসেম্বর হাইকোর্টে আবেদন করেন তিনি। আবেদনের শুনানি নিয়ে ৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট জামিন প্রশ্নে রুল দেন। মামলায় মির্জা ফখরুলকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় রুলে। রাষ্ট্রপক্ষকে এক সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

গত ১৭ ডিসেম্বর মির্জা ফখরুলের আইনজীবীদের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের একই বেঞ্চ রুল শুনানির জন্য ৩ জানুয়ারি তারিখ ধার্য করেন। সেদিন মির্জা ফখরুলের আইনজীবীর পক্ষে সময়ের আরজি জানানো হয়। আদালত ওই সপ্তাহের জন্য শুনানি মুলতবি করে আদেশ দেন। এর ধারাবাহিকতায় ১০ জানুয়ারি রুলের ওপর শুনানি শেষে তা খারিজ করে রায় দেন হাইকোর্ট।

প্রথম আলো