মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সশস্ত্র বাহিনী ও ‘বিচ্ছিন্নতাবাদীদের’ গোলাগুলি ও সংঘর্ষে সীমান্তের কাছে বাংলাদেশের নাগরিক হতাহতের ঘটনায় আওয়ামী লীগ সরকারের ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করেছে বিএনপি।
দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটি বলেছে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী ডামি সরকার কেবল দেশে বিরোধী মত দমন করতে পারে। কিন্তু স্বাধীনতা অরক্ষিত হয়ে পড়েছে এবং সীমান্ত আক্রান্ত হলেও মিয়ানমারের বিরুদ্ধে সরকার পাল্টা কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না।
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটি এ কথা বলেছে। দলটি বলেছে, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সশস্ত্র সংঘর্ষের মর্টার শেল বাংলাদেশে এসে পড়েছে। এতে দুদিন আগে এক বাংলাদেশি ও এক রোহিঙ্গা নিহত হন।
বিবৃতিতে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সামরিক জান্তার সশস্ত্র বাহিনী ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের গোলাগুলি-সংঘর্ষে বাংলাদেশের নাগরিক হত্যা, ঘরবাড়ি দগ্ধ হওয়া, মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) শতাধিক সদস্যের পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া, অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় শত শত মানুষের সীমান্তে ভিড় জমানো, গোলাগুলির মুখে সীমান্তবর্তী এলাকায় বাংলাদেশের নাগরিকদের জীবনের নিরাপত্তাহীনতার উল্লেখ করা হয়।
স্থায়ী কমিটির বিবৃতিতে বলা হয়, রোববার ডামি সংসদে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন, মিয়ানমারের পরিস্থিতি সরকার নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে (বিজিবি) ধৈর্য ধারণ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিএনপি মনে করে, বাংলাদেশের জন্য অতি ঝুঁকিপূর্ণ এই অবস্থায় সরকারের অন্তঃসারশূন্য বক্তব্য এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে তীব্র প্রতিবাদ জানানো ও কার্যকর রাজনৈতিক কার্যক্রমের মাধ্যমে দ্রুত পরিস্থিতির মোকাবিলা করা প্রয়োজন ছিল। কিন্তু এর পরিবর্তে শুধু ধৈর্য ও সংযম প্রদর্শনের অবস্থান গ্রহণ নতজানু পররাষ্ট্রনীতির বহিঃপ্রকাশ।
বাংলাদেশের ধৈর্য ও সংযম প্রদর্শনের অবস্থান নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটি প্রশ্ন তুলে বলেছে, বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) দায়িত্ব কি কেবল বাংলাদেশিদের লাশ গ্রহণ করা?
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের ভূখণ্ডে দীর্ঘকাল ধরে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর অবস্থান একটি নতুন মানবিক সংকট হিসেবে বিদ্যমান। এ বিষয় নিয়ে সরকার ক্রমাগত কূটনৈতিক ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। মেরুদণ্ডহীন এই নতজানু সরকারের কারণেই জাতীয় সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে এবং জননিরাপত্তা অরক্ষিত।
এ প্রসঙ্গে জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার শাসনামলে অনুপ্রবেশকারী লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে দেশে ফেরত পাঠানোর ঘটনা উল্লেখ করা হয় বিএনপির বিবৃতিতে।
prothom alo