মিয়ানমার নিয়ে আন্তর্জাতিক প্রচারমাধ্যমগুলো বেশ ‘উদ্দীপ্ত’ এ মুহূর্তে। এই উদ্দীপনার জোয়ারে অনেকগুলো বাস্তব প্রশ্নের সঠিক উত্তর হাবুডুবু খাচ্ছে। প্রথম প্রশ্ন উঠেছে, দেশটির গৃহযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনী হেরে যাচ্ছে কি না? দ্বিতীয় প্রশ্ন, দেশটি চীনের প্রভাব থেকে মুক্তি পেয়ে পশ্চিমের প্রভাববলয়ে ঢুকে পড়ছে কি না?
এই দুই প্রশ্নের চেয়েও বাংলাদেশের জন্য জরুরি হলো পরের দুটি প্রশ্নের উত্তর অনুমান করা—মিয়ানমার বিভক্ত হয়ে পড়তে পারে কি না; এবং ওদিক থেকে আসা আরও আশ্রয়প্রার্থীকে জায়গা দিতে হবে কি না? কেন প্রথম দুটি প্রশ্নের উত্তর ‘না’ এবং পরের দুটি প্রশ্নের উত্তর ‘হ্যাঁ’ সে বিষয়ে আমরা কথা বলতে পারি। মিয়ানমার নিয়ে ঢাকায় কথা বলা জরুরি।
গৃহযুদ্ধে কি সামরিক বাহিনী হেরে যাচ্ছে?
আজ ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ‘তাতমাদো’র ক্ষমতা দখলের তিন বছর পূর্তি হচ্ছে। গত ৩৬ মাসের পুরোটাই তাদের গোলাগুলি ছুড়ে দেশ চালাতে হয়েছে। এর মধ্যে গত তিন মাস তাদের জন্য ছিল স্পষ্ট পিছু হটার সময়। তবে ব্যাপারটা এখনো এমন নয় যে দেশের ওপর তারা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছে। পিছু হটছে তারা মূলত প্রান্তিক প্রদেশগুলোতে। রাজধানী নেপিডো এবং প্রধান শহর ইয়াঙ্গুন এখনো প্রায় শান্ত।
যদিও ভৌগোলিক হিসাবে দেশটির ৬০-৭০ ভাগ এলাকায় সংঘাত ছড়িয়েছে; কিন্তু কেন্দ্রীয় অঞ্চলে তাতমাদোর নিয়ন্ত্রণ এখনো বেশ নিরঙ্কুশ। দেশটির প্রধান জনগোষ্ঠী বামাররা বেশি থাকে এই মধ্যাঞ্চলে। সেনাবাহিনীও যেহেতু প্রধানত বামারদের, সে কারণে এই অঞ্চলে শিগগিরই তারা প্রভাব হারাবে বলে মনে হয় না। প্রভাবশালী বৌদ্ধ ভিক্ষুরাও এখনো তাদের সঙ্গে আছেন।
বর্তমানে বাংলাদশসহ বহির্বিশ্বে মিয়ানমার সেনাবাহিনী কোণঠাসা হওয়ার যেসব সংবাদ মিলছে, তা মূলত আঞ্চলিক গেরিলা দলগুলোর দ্বারা ঘটছে। মিয়ানমারে এদের বলা হয় ইএও বা এথনিক আর্মড অর্গানাইজেশন বা এথনিক রেজিস্ট্যান্স ফোর্স। ইএওর সঙ্গে তাতমাদো-বিরোধী সশস্ত্র বামারদের সামরিক সমঝোতা থাকায়, প্রথমোক্তরা যত সফলতা পাচ্ছে, শেষোক্তরা তত বলীয়ান হচ্ছে।
পিডিএফ বা ‘পিপলস ডিফেন্স ফোর্স’ নামে পরিচিত বামার তরুণদের গেরিলা দলগুলোকে ইএও প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র জুগিয়ে যাচ্ছে। বিনিময়ে পিডিএফ অঙ্গীকার করেছে তাতমাদোকে হারাতে পারলে মিয়ানমারের প্রান্তিক জাতিগুলোর এলাকায় পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন দেওয়া হবে এবং দেশটিকে একটা বিকেন্দ্রীকৃত ফেডারেশন আকারে গড়ে তোলা হবে। আপাতত সেটি একটি স্বপ্ন। তবে সেই স্বপ্নকে মিয়ানমারে একদম অধরা কিছু মনে করা হয় না এখন আর। এই স্বপ্ন সফল হলে কেবল মিয়ানমারই পাল্টাবে না, আশপাশের ‘জাতিরাষ্ট্র’গুলোতেও তার ছাপ পড়বে।
আন্তর্জাতিক প্রচারমাধ্যমে, বিশেষ করে বাংলাদেশে, মিয়ামারের চলতি ঘটনাবলিতে চীনের অবস্থান নিয়ে কিছু বিভ্রান্তি আছে বলে মনে হয়। নেপিডোর এখনকার শাসকদের সামরিক ও কূটনৈতিক সহায়তা যে বহুকাল ধরে চীন থেকে এসেছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। অন্তত গত তিন বছর চীন ও রাশিয়া মিয়ানমারের জান্তাকে আন্তর্জাতিক পরিসরে প্রায় শর্তহীনভাবে মদদ দিয়ে গেছে। তবে চীন দেশটির প্রান্তিক সশস্ত্র গেরিলা দলগুলোকেও ‘সহায়তা’ দেয়। এই সহায়তার ভেতর বুদ্ধি-পরামর্শের বাইরে বাড়তি কিছুও থাকে। যেহেতু মিয়ানমার জুড়ে চীনের বহু ধরনের বিনিয়োগ আছে, সে কারণে বেইজিং বহুদিন হলো এই কৌশলে কাজ করে।
তবে দেশজুড়ে সামরিক শাসনবিরোধী সশস্ত্রতা যত বাড়ছে, চীন ইএওর সঙ্গে সম্পর্ক তত আরও নিবিড় করছে। এটা হলো আপাতত মিয়ানমারে চীনের একটি নতুন প্রবণতা। এই কৌশল গ্রহণ করে চীন তাতমাদো-বিরোধীদের এটা বোঝাতে চায়, পশ্চিমের দিকে সাহায্যের হাত বাড়ানোর দরকার নেই তাদের। বেইজিংয়ের এ রকম সবুজ সংকেত পাওয়ামাত্র ইএওর তিন-চারটি গ্রুপ তাতমাদোর বিরুদ্ধে বিপুল বিক্রমে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। আন্তর্জাতিক প্রচারমাধ্যম যাদের ‘ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স’ বলছে। বামার পিডিএফগুলো কিছু এলাকায় তাদের সহায়তা করেছে।
ইএওর সঙ্গে চীনের এ রকম কৌশল তাতমাদোর ‘র্যাঙ্ক অ্যান্ড ফাইল’-এর মনোবলে বেশ বড় রকমের চিড় ধরিয়েছে বলে দেখা যাচ্ছে। শত শত জওয়ান তাঁদের অবস্থান ছেড়ে বিভিন্ন দিকে সরে পড়েছেন। ফলে গত তিন মাসে প্রায় ৫০টি সীমান্তচৌকি ইএওগুলো দখল করেছে। অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ শহরও তাতমাদোর হাতছাড়া। যার মধ্যে পালেতোয়ার কথা বাংলাদেশে খুব আলোচিত হচ্ছে। সামরিক দিক থেকে আরাকানের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ এই শহর বাংলাদেশের বান্দরবান সীমান্ত থেকে মাত্র ১০-১৫ মাইল দূরত্বের মধ্যে।
শান-চীন সীমান্তে যদিও চীনের মধ্যস্থতায় ইএওগুলোর সঙ্গে জান্তার নড়বড়ে একটি যুদ্ধবিরতি চলছে; কিন্তু আরাকানে তার কোনো ছাপ দেখা যাচ্ছে না। অথচ এই প্রদেশের মূল গেরিলা আরাকান আর্মিরও অন্যতম ‘সাহায্যকারী’ গণচীন। আরাকানে নিজেদের বিনিয়োগ সুরক্ষার জন্য রাখাইন গেরিলাদের সহায়তা না দিয়ে চীনের উপায়ও নেই।
আন্তর্জাতিক পরাশক্তিগুলোর মধ্যে মিয়ানমারে চীনের ভূমিকাই সবচেয়ে বুদ্ধিদীপ্ত। যুক্তরাষ্ট্রের ‘বার্মা অ্যাক্ট’ নামের আইনি উদ্যোগ ছাড়া মাঠপর্যায়ে গেরিলাশক্তিকে উল্লেখযোগ্য কোনো সম্পদসহায়তা দিয়েছে বলে জানা যায় না; বরং বিরোধী দলের ‘ছায়া সরকার’ এবং যুদ্ধরত গেরিলাদের মধ্যে পশ্চিম থেকে সাহায্য পাওয়ার ব্যাপারে গভীর হতাশার কথাই শোনা যায়। ইউক্রেন ও মধ্যপ্রাচ্যে ওয়াশিংটনের সামরিক-সংশ্লিষ্টতা বর্তমানে যে মাত্রায় রয়েছে, তাতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় তাদের সামরিক সহায়তা বাড়ার আপাতত সম্ভাবনা কম বলেই মিয়ানমারের অনেকের অনুমান।
অন্যদিকে অতীতের মতো এখনো পরিস্থিতির ওপর চীনের নিয়ন্ত্রণ বেশ প্রবল এবং তারা কোনোভাবে সেই নিয়ন্ত্রণ হারাতে চাইছে না। তবে ইএওগুলোর কয়েকটিতে অনেক আগে থেকে ইউরোপ-আমেরিকার কিছুটা প্রভাব কাজ করছে। বিশেষ করে চিন ও কারেন অঞ্চলে। চিন, কারেন ও কাচিন অঞ্চলে স্থানীয় বাসিন্দারা চার্চগুলোর মাধ্যমে ইউরোপ-আমেরিকার কিছু ‘মানবিক সহায়তা’ পান বহুকাল ধরে। সেই সূত্রে ভবিষ্যতে এসব জনপদে সাংস্কৃতিক মাত্রায় হলেও চীন-যুক্তরাষ্ট্র কিছু টানাপোড়েন থাকবে। যার একটি রূপ হিসেবে কেন্দ্রীয় মিয়ানমারে তাতমাদো যত কোণঠাসা হতে থাকবে, উপরিউক্ত তিন অঞ্চল তত বেশি স্বশাসিত চেহারা নেবে।
বাংলাদেশের জন্য এবং নিশ্চিতভাবে থাইল্যান্ড-ভারত-লাওসের জন্য এ সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো, মিয়ানমার থেকে নতুন করে শরণার্থী এসব দেশে ঢুকবে কি না। সন্দেহ নেই যে সেটি ঘটবে। ভারত ও থাইল্যান্ডে তিমধ্যে অনেক শরণার্থী ঢুকেছে। ভারতের মণিপুর থেকে শরণার্থীদের তাড়িয়ে মিজোরামে আটকে রাখতে চাইছে। সীমান্তে বেড়া দেওয়ার কথাও ভাবছে। যা প্রায় অসম্ভব একটি প্রস্তাব। অন্তত নাগারা এটা হতে দেবে না। কারণ, নাগা জাতি ভারত ও মিয়ানমারে বিভক্ত হয়ে আছে। থাইল্যান্ডও আসিয়ান জোটের চাপে শরণার্থীদের সহজে সহায়তার জন্য মিয়ানমার-সংলগ্ন কিছু সীমান্ত এলাকা ‘নিরাপদ অঞ্চল’ হিসেবে গণ্য করতে রাজি হয়েছে। এ সপ্তাহের শুরুতে এ নিয়ে লাওসে আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠক বসেছিল।
বাংলাদেশ লাখ লাখ রোহিঙ্গার ভারে ক্লান্ত হলেও নতুন শরণার্থী আসা নিয়ে নিশ্চয়ই উদ্বিগ্ন। এই উদ্বেগ প্রকৃতই বাস্তব। সেখানকার সেনাবাহিনী কোণঠাসা হওয়ার মুখে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের টানাপোড়েনের ভেতরে মিয়ানমারের প্রদেশগুলো যত বেশি স্বশাসিত চরিত্র নেবে, তত বেশি সেখানে তাতমাদোর বিমান হামলা বাড়বে। ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতাগুলো সাক্ষ্য দেয়, বিরুদ্ধবাদীদের এলাকায় ‘জ্বালাও-পোড়াও নীতি’তে তাতমাদোর ‘দক্ষতা’ আছে। ফলে চিন, আরাকান ও কারেন এলাকায় বম্বিং বাড়লে স্থানীয় মানুষেরা আশপাশের দেশগুলোতে ঢুকে জান বাঁচাতে চাইবেন।
শরণার্থী আসার আরও একটি কারণ আছে। সেনাবাহিনীর ভূমিকা দুর্বল হওয়ামাত্র প্রান্তিক জনপদগুলোতে ইতিমধ্যে গেরিলা সংগঠনগুলোর ভেতরে ক্ষমতা প্রদর্শনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়ছে। চিন প্রদেশে চিন ন্যাশনাল আর্মির কর্তৃত্ব বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কয়েকটি স্থানীয় সংগঠনের ত্রিমুখী সংঘাত বেঁধেছে এ সপ্তাহে। এসব কারণেও চিন ও আরাকান থেকে বাংলাদেশে; চিন ও সাগাইং থেকে ভারতে; কারেন অঞ্চল থেকে থাইল্যান্ডে; শান এলাকা থেকে লাওসে মানুষ ঢুকবে।
এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ অস্থিরতার আরেকটি কারণ, সশস্ত্র প্রতিরোধ আন্দোলন তৃতীয় বর্ষে বাড়তি গতি পেলেও তার কোনো একক নেতা নেই মাঠে। অং সান সু চি ২৭ বছরের দণ্ড ভোগ করছেন কারাগারে। এমনকি যুদ্ধমাঠের প্রতিরোধ কর্মীদের মধ্যে তাঁর ভাবাদর্শিক প্রভাবও অতি সামান্য এখন। ইএও সু চিকে দেশের নেতা হিসেবে আবার দেখতে চাইছে না; বরং তারা ভবিষ্যতের মিয়ানমারে বামার আধিপত্য কমাতে তৎপর এবং সে লক্ষ্যে নতুন সংবিধান তৈরির ওপর জোর দিচ্ছে বেশি। সম্ভাব্য সেই সংবিধান তৈরি এবং ‘ফেডারেল-মিয়ানমার’ গড়ার কাজে ৭৮ বছর বয়সী অং সান সু চি গুরুত্বপূর্ণ কোনো ভূমিকা রাখতে পারবেন বলে মিয়ানমারে এখন আর কেউ মনে করছেন না। বরং গেরিলাযুদ্ধের ভেতর দিয়ে ক্রমে নতুন একদল তরুণ নেতা তৈরি হচ্ছে।
অং সান সু চির মতোই যুদ্ধের অপর পক্ষ তাতমাদোতে তাদের প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের প্রভাবও বেশ কমে গেছে সম্প্রতি। সশস্ত্র বাহিনীর প্রভাবশালী একটি অংশ বর্তমান প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইংকে সরিয়ে দিতে পারে বলেও গুঞ্জন বাড়ছে। যদিও জেনারেল মিন তাঁর সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জারদের বহু আগে নানাভাবে বাহিনী থেকে সরিয়েছেন; কিন্তু গত কয়েক মাসের যুদ্ধে ক্ষয়ক্ষতি বেড়ে যাওয়ায় তাঁকে পরিবর্তনের কথা জোরেশোরে শোনা যাচ্ছে।
কেবল জানুয়ারিতে জান্তা কারেন ও কাচিন বিদ্রোহীদের কাছে দুটি বিমান ও একটি হেলিকপ্টার হারিয়েছে। গৃহযুদ্ধে মিয়ানমার বিমানবাহিনী এ পর্যন্ত তিনটি যুদ্ধবিমান এবং পাঁচটি হেলিকপ্টার হারাল। যা গেরিলাদের উন্নত সংগ্রহ বাড়ছে বলে ধারণা দিচ্ছে; তাতমাদোর জন্য যা বাড়তি উদ্বেগের। বলাবাহুল্য, ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের সময় এ রকম ভবিষ্যতের কথা তারা একদম ভাবেনি। তিন বছর পর সেই দোষের পুরো ভাগীদার হচ্ছেন এখন জেনারেল মিন।
বাহিনীর একটি অংশ এ রকমও ভাবছে, জেনারেল মিনের ভূমিকায় সাধারণ বামারদের কাছে তাদের এত দিনের অজেয় ভাবমূর্তি ঘা খেয়েছে। বামার এলাকাগুলোতে সৈনিক সংগ্রহ প্রক্রিয়াতেও তার নেতিবাচক ছাপ পড়েছে। আবার সশস্ত্র বাহিনীর বামার জাতীয়তাবাদীরা শান অঞ্চলে ইএওকে চীনের প্রকাশ্য সহযোগিতায় ক্ষুব্ধ এবং ক্ষোভের উত্তাপও জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের গায়ে লাগাচ্ছে।
গৃহযুদ্ধে উভয় পক্ষের ভরকেন্দ্রে সুচি ও জেনারেল মিনকে ঘিরে নেতৃত্ব-পর্যায়ের ব্যক্তিগত ভাবমূর্তির এ রকম সংকটও মিয়ানমারে আঞ্চলিক বিচ্ছিন্নতাবোধ বাড়াচ্ছে। প্রবণতা হিসেবে এটি দেশটির সব প্রতিবেশীর বাড়তি মনোযোগ দাবি করে।
তবে বিষয়টি এমন নয় যে বাংলাদেশে কেবল রোহিঙ্গা শরণার্থীরা আসবেন। আরাকানের রাখাইনরাও আসতে পারেন। পালেতোয়া দখলের পর আরাকান আর্মি তাদের সদর দপ্তর আরাকানের ম্রাক-উতে নিয়ে আসার চিন্তা করছে হয়তো। পুরোনো দিনের স্বাধীন আরাকানে ম্রাক-উ ছিল রাজধানী। আরাকান আর্মির স্বপ্ন হলো, কাচিন থেকে আরাকানের ভেতরে তাদের সদর দপ্তর আনা। সেটি ঘটার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। তাতমাদো এটি হয়তো সহজে হতে দেবে না।
এই হওয়া না-হওয়ার মাঝে আরাকান থেকে অনেক উদ্বাস্তু তৈরি হতে পারে। প্রশ্ন হলো, বাংলাদেশ কি তাদের সবাইকে বাধা দেবে? প্রতিবেশীর বাড়িতে আগুন লাগলে কি দরজা বন্ধ করে থাকা সম্ভব? নাকি প্রতিবেশীর ঘরের ভেতরের পরিস্থিতি সম্পর্কে সরেজমিন খোঁজখবর বাড়ানো দরকার? রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে রাখাইনদের না দেওয়ার খবর ভালো শোনাবে কি না?
- আলতাফ পারভেজ দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক গবেষক
- prothom alo