- জিয়া হাসান
- ০৬ জানুয়ারি ২০২৩, ২০:০৫
বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি সাধারণ মানুষের জীবনে কী ভয়ঙ্কর প্রভাব রেখেছে সেটি আমরা আগের লেখায় দেখেছি। আজ আমরা আলোচনা করব মূল্যস্ফীতি কেন তৈরি হয় ও মূল্যস্ফীতি তৈরি হওয়ার অনেকগুলো কারণের মধ্যে মার্কেট পাওয়ার বা অল্প কিছু ব্যবসায়ীর হাতে ব্যবসায় এবং ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশন কুক্ষিগতকরণ কিভাবে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখে।
মূল্যস্ফীতি নিজে থেকে অর্থনীতি প্রবণতার কোনো মূল সূত্র নয়; বরং মূল্যস্ফীতি অর্থনীতির অন্যান্য প্রবণতার একটি আউটকাম মাত্র। ধরুন যখন আপনার জ্বর হলো আপনার তখন তাপমাত্রা বেড়ে যায়। কিন্তু এই তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়াটা কিন্তু অসুখ নয়, আপনার অসুখের সূত্র অন্য জায়গায়। মূল্যস্ফীতির বিষয়টিও তাই।
আমরা আগের আলোচনায় দেখেছি, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান ভারতসহ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি অনেক বেশি। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, কেন মূল্যস্ফীতি বেশি ছিল? আমরা যে বিষয়টি আজ আলোকপাত করতে চাই সেটি হচ্ছে মার্কেট পাওয়ার। মার্কেট পাওয়ার অর্থাৎ বাজার কাদের নিয়ন্ত্রণে আছে সেটি কিন্তু পণ্যমূল্য বৃদ্ধিকে প্রভাবিত করে।
বাজারে যদি অলিগোপলি থাকে যার মানে হচ্ছে কয়েকটি বড় কোম্পানি কোনো একটি পণ্যকে নিয়ন্ত্রণ করে অথবা বাজারে যদি মনোপলি থাকে অর্থাৎ একটি বড় প্রতিষ্ঠান পুরো বাজারকে নিয়ন্ত্রণ করে, তবে দ্রব্যমূল্য বাড়বে। এটি অর্থনীতিতে সর্বজনস্বীকৃত। কারণ একজন অলিগোপলিজ বা একজন মনোপলিস নানা মেকানিজম করে বাজারে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করতে পারে। বিগত এক দশকে বাংলাদেশের পরিবারকেন্দ্রিক অলিগারগুলো বাংলাদেশের ট্রেড, ব্যবসায়-বাণিজ্য ও ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশনের বড় একটি অংশ কুক্ষীগত করেছে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত আমার বই ‘উন্নয়ন বিভ্রমে’ দেখিয়েছি, ২০১২ থেকে ২০১৯ সালে দেশের মোট শিল্প উৎপাদনে বৃহৎ আকারের প্রতিষ্ঠানের হিস্যা ৪৬ শতাংশ থেকে ৬৯ শতাংশে পৌঁছেছে এবং এই একই সময়ে মাঝারি আকারের প্রতিষ্ঠানের হিস্যা ২৫ শতাংশ থেকে ৪ শতাংশে নেমে এসেছে। অর্থাৎ এই সময়টিতে বৃহৎ আকারের প্রতিষ্ঠানগুলো মাঝারি আকারের প্রতিষ্ঠানের বাজার গ্রাস করে নিয়েছে বা খেয়ে ফেলেছে। এই ৬৯ শতাংশ ব্যবসায় মাত্র তিন হাজার ফ্যাক্টরির হাতে কেন্দ্রীভূত।
বিশ্বব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশনের একটি রিসার্চের ভিত্তিতে আমার গবেষণায় আমি দেখিয়েছি, এই তিন হাজার ফ্যাক্টরির বড় অংশের মালিকানা মাত্র ১০০টি পরিবারকেন্দ্রিক অলিগারের হাতে কেন্দ্রীভূত। বিগত দশকে আমরা দেখেছি, চাল-ডাল খাদ্যপণ্যসহ অন্যান্য অনেক পণ্যে ছোট ছোট যে প্রতিষ্ঠানগুলো ছিল তার মধ্যে অনেকগুলো বিলুপ্ত হয়ে গেছে এবং বড় বড় করপোরেট এখন বাজারকে ডমিনেট করছে। এই বড় কোম্পানিগুলো বিগত ১০ বছরে আরো বড় হয়েছে। তারা এখন অলিগোপলির মতো মার্কেটে বিহেব করে। তারা চাইলে নিজেদের ইচ্ছামতো পণ্যের দাম বাড়াতে পারে। এর একটি উদাহরণ আমরা দেখতে পাই, বাংলাদেশের চালের মূল্য ভারত থেকে ৭০ শতাংশ বেশি। এটি এফএওর একটি গবেষণায় এসেছে এবং মার্কিন কৃষি বিভাগও জানিয়েছে যে, ভারতের তুলনায় বাংলাদেশের চালের মূল্য ৭০ শতাংশ বেশি। কিন্তু কেন বেশি?
কেন বেশির পেছনে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট-ব্রি সম্প্রতি একটি গবেষণা প্রকাশ করেছে জানিয়ে প্রথম আলোতে একটি প্রতিবেদন এসেছিল। সেখানে ব্রির গবেষকরা বলছেন, চাল উৎপাদন থেকে ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছাতে পাঁচবার হাতবদল হয় এবং প্রতিবার হাতবদলের সময় একটি খরচ হয় ও একটি প্রফিট হয়। এ গবেষণায় ব্রি দেখিয়েছে, সবচেয়ে বেশি মুনাফা করেছে মিল-মালিকরা। তারা প্রতি কেজি চাল ও চালের উপজাত বিক্রি করে আট টাকা থেকে ১৩ টাকা ৬৬ পয়সা মুনাফা করছেন। কিন্তু চালকলের মালিকরা একটি রিপোর্টে বণিক বার্তাকে খুব ইন্টারেস্টিং একটি কথা বলেছেন। তারা বলেছেন, দেখেন কিছু মুনাফাখোর ব্যবসায়ী ও মজুদদারের কারণে বাংলাদেশের চালের দাম ভারতের চেয়ে বেশি। কিন্তু আরেকটি ঘটনা আছে সেটি হচ্ছে- আগে ব্যবসায় ছিল অনেক লোকের হাতে, কিন্তু এখন হাতেগোনা কয়েক ব্যক্তির কাছে ব্যবসায় চলে গেছে এবং এর প্রধান কারণ ব্যাংকের অসহযোগিতা। কারণ কিছু কিছু কোম্পানিকে ব্যাংক ৫০০ কোটি টাকা হাজার কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে। আবার কিছু কিছু কোম্পানি পাচ্ছে হয়তো পাঁচ কোটি বা ২০ কোটি টাকা।
ফলে যারা কম টাকা ক্যাশ নিয়ে মার্কেটে নামছে তারা কিন্তু বড়দের সাথে প্রতিযোগিতা করে টিকতে পারছে না। রাইস মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বলছেন, ২০০৯ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত কিন্তু চালের দাম বেশি বাড়েনি। কারণ সে সময় একটি প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ ছিল এবং অনেকগুলো মিল মার্কেট অপারেট করছিল। কিন্তু মার্কেটে যখনই ফাইন্যান্সিংয়ের এই বৈষম্য তৈরি হয়, তখন একেকজন ব্যবসায়ী ব্যাংকের দুই হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে মাঠে নামতে পারে। উৎপাদনের পণ্য যখন বাজারে আসছে তখনই সেটি তারা কিনে নিতে পারছে। এ অবস্থায় বাকিরা এই প্রতিযোগীদের সাথে পেরে উঠছে না। অটো-রাইস মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বলেছেন, এই বড় ব্যবসায়ীদের সাথে প্রতিযোগিতার কারণে অনেক ব্যবসায়ী এখন আর মাঠে নেই। অনেকগুলো মিলমালিকরা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন এবং এই বন্ধ মিলগুলো ভাড়া নিয়ে চালাচ্ছেন বড় মুনাফাখোর কিছু ব্যবসায়ী। আর এরাই কিন্তু চালের দাম বাড়িয়ে নিতে পারছেন।
বছর দুয়েক আগে বোরো মৌসুমে একটি গবেষণা হয়েছিল। আর সেখানে দেখা গিয়েছিল, ৬১ শতাংশ ধান ও চাল মজুদ করে চালকল মালিকরা, ২০ শতাংশ করে বড়-মাঝারি কৃষক ও ১৯ শতাংশের এর মধ্যে রয়েছে কিছু ব্যবসায়ী। সুতরাং আলটিমেটলি চালকলের মালিকরাই বেশি প্রফিট করছেন। তারাই বেশি মজুদ করছেন এবং চালকলমালিকদের মধ্যেই এখন বড় ব্যবসায়ীরা প্রধানত মার্কেটটিকে ডমিনেট করছেন আর এই ডমিনেট কারা করছে সেটিও কিন্তু আমরা জানি। ১৯৯৭ সালের দিক থেকে বাংলাদেশের প্রথম চালের বাজার জাতীয়করণ করা শুরু করে প্রাণ। এর পরে অনেকগুলো কোম্পানি মাঠে আসে। যার মধ্যে রয়েছে ইস্পাহানি গ্রুপের পার্বণ, স্কয়ার গ্রুপের চাষি, টিকে গ্রুপের পুষ্টি, এসিআই গ্রুপের প্রিয়, আকিজ গ্রুপের এসেন্সিয়াল, সিটি গ্রুপের তীর এবং মেঘনা গ্রুপের ফ্রেশ। এই কোম্পানিগুলোর হাতে রয়েছে বিশাল পুঁজি। এই কোম্পানিগুলো এখন সরকারকেও ডমিনেট করতে পারে। এই কোম্পানিগুলোর হাতে এখন রয়েছে ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ। ফলে এই মুহূর্তে ৯-৬ শতাংশ সুদের হারের কারণে তারা কিন্তু অত্যন্ত কম ইন্টারেস্ট রেটে টাকা কালেক্ট করতে পারে। যখনই চালের একটি মৌসুম শেষে উৎপাদন কমপ্লিট হচ্ছে সাথে সাথে বাজারে গিয়ে তারা সেটি কিনে নিয়ে স্টক করে ফেলতে পারছে এবং পরবর্তীতে দাম বাড়িয়ে ফেলতে পারছে।
এখানে আমরা দেখতে পাচ্ছি, মার্কেট পাওয়ার ব্যবহার করে অলিগাররা কিভাবে বাজারের বড় একটি অংশ দখল করে নিয়েছে আর যেহেতু তারা সহজে ব্যাংক ঋণ পায় ও অনেকগুলো ব্যাংকের মালিক তারা, ফলে তারা সেই টাকা দিয়ে আবার অন্যান্য মাঝারি সাইজের কোম্পানিগুলোকে মার্কেট থেকে সরিয়ে দিতে পারছে। এভাবে তারা বাংলাদেশের চালের দাম ভারতের চেয়ে ৭০ শতাংশ বাড়িয়ে নিচ্ছে। যার রেফারেন্সটা আমরা ব্রি-এর গবেষণায় দেখতে পেয়েছি।
চাল গম ময়দা আটা সুজি ও ভোজ্যতেল ইত্যাদি খাদ্যশস্য থেকে তৈরি বিভিন্ন ধরনের প্যাকেজ পণ্যের বাজার বিগত দশকগুলোতে ছোট ছোট অনেক প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণ করত। গত এক দশকে এই পণ্যগুলো প্যাকেটজাত হওয়ায় হাতেগোনা পাঁচ-ছয়টি প্রতিষ্ঠানের হাতে চলে গেছে, যাদের বার্ষিক আয় এখন ২০ হাজার থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকার উপরে। তাদের স্কেলিং ইকোনমিক্স আছে, তাদের এফিসিয়েন্ট প্রসেসিং আছে, তাদের কারো কারো নিজস্ব জাহাজ আছে, অনেকের ঢাকার কাছে নিজস্ব নদীবন্দর এবং একটি নিজস্ব ব্যাংকও আছে। তারা খুব সহজেই পণ্য সম্পর্কিত খরচগুলো কমিয়ে ফেলতে পারে এবং সরকারের কাছ থেকে সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন রকম সুবিধা তারাই পায়। এই সুবিধাগুলো ছোট কোম্পানিগুলো পায় না। ফলে এই মার্কেট পাওয়ার ব্যবহার করে এই প্রতিষ্ঠানগুলো যখন প্রথমে পণ্যমূল্য কমায়, তখন কম্পিটিশনে টিকতে না পেরে ছোট কোম্পানিগুলো বের হয়ে যায় আর পরে তারা আবার মূল্য বাড়িয়ে দেয়।
তাহলে এখন প্রশ্ন হচ্ছে, সরকার কি ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণ করছে না বা করতে পারছে না? আমার প্রশ্ন হচ্ছে- সরকার কেন এদের নিয়ন্ত্রণ করবে? কারণ এরাই তো সরকার। বাংলাদেশের মতো উপনিবেশ-উত্তর রাষ্ট্রে যখন প্রাথমিকভাবে ব্যবসায় শুরু হয় তখন অনেকগুলো ছোট ছোট কোম্পানির কাছে মার্কেট পাওয়ার ডিসট্রিবিউটেড থাকে। তখন তারা একেকজন চাইলেই সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। যারা ব্যবসার সাথে জড়িত তারা সবাই সর্বোচ্চ মুনাফা চায় এবং এই সর্বোচ্চ মুনাফা চাওয়াটা আসলে কিন্তু কোনো দোষের বিষয় নয়। কিন্তু মুনাফা করার উদ্দেশ্যে ব্যবসায় করতে নেমে কেউ যদি মার্কেট কন্ট্রোল করা শুরু করে, এর কিন্তু অর্থনীতিতে খারাপ প্রতিক্রিয়া হয়। তাদের এই মনোপলি এবং অলিগোপলি পণ্যমূল্য বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখে। উন্নয়ন অর্থনীতিতে খুব স্পষ্টভাবে বলা আছে, একটি কোম্পানি যখন অনেক বড় হয়ে যায় তখন যেরকম সরকারের ও অর্থনীতির ওপরে তাদের নির্ভরতা আসে ঠিক তেমনি সেই প্রতিষ্ঠানগুলো কিন্তু তখন সরকার ও অর্থনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
আমাদের মন্ত্রণালয়গুলো দেখে, হয়তো খাদ্যমন্ত্রী নিজেই খাদ্যপণ্যের একজন বড় ব্যবসায়ী। এভাবে বিভিন্ন নীতি প্রণেতাদের সাথে বিভিন্ন বড় বড় গ্রুপের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশের মতো দেশের জন্য এটিই স্বাভাবিক। বিগত সব দশক ধরেই বিভিন্ন ব্যবসায়ী গ্রুপ সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছে। তারা রাজনৈতিক দলগুলোকে চাঁদা দিয়েছে। এই ব্যবসায়ীরা তখন বিভিন্ন ধরনের পলিসির কারণে সরকারের ওপর নির্ভরশীল ছিল এবং সরকারকে বিভিন্নভাবে নিয়ন্ত্রণ করে তারা ব্যবসায়িক রেগুলেশনগুলো নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করত।
বিগত এক দশকে এই বড় প্রতিষ্ঠানগুলো এই ২০ হাজার ২৫ হাজার কোটি টাকার কোম্পানিগুলো কিন্তু এখন আমাদের রাজনীতিকেই নিয়ন্ত্রণ করছে এবং আমাদের রাজনীতি খুব আনন্দের সাথেই তাদের হাতে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। হয়তো এর কারণ এই হতে পারে যে, আমাদের সরকার আসলে সেভাবে ইলেকটেড সরকার নয়।
ফলে তারাও ব্যবসায়ীদের সিলেক্ট করছে দলীয়ভাবে। এমন ব্যবসায়ীরা সফল হচ্ছে যাদের আর্থিক সক্ষমতা আছে। অনেক ইন্ডাস্ট্রিতে দেখা যায়, ওই সেক্টরের সবচেয়ে বড় বড় ব্যবসায়ীই আলটিমেটলি সরকারি দলের বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্য। ফলে তারা ডিউটি স্ট্রাকচার, রেগুলেশন ও ব্যাংকের ওপর নিয়ন্ত্রণ, ব্যাংক লোনের সুবিধা ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা আদায় করতে পারছে। এ ধরনের সম্পর্কের কারণে যদি পণ্যমূল্য অনেক বেড়ে যায় তখন কিন্তু একটি গণঅসন্তোষ তৈরি হতে পারে।
বিগত বছরের মূল্যস্ফীতি বেশি হওয়ার কারণে দেখা গেছে, সরকার কিছুটা সচেতন হয়েছে। কিন্তু সরকার এখন চাইলেও ব্যবসায়ীদের আর নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না; বরং এখন যেটি হয়েছে, আপনি যাদেরকে ফ্রাঙ্কেনস্টাইন বানিয়েছেন সেই দানব তো চাইলেই আপনার কথা শুনবে না। কারণ ফ্রাঙ্কেনস্টাইন এখন আপনার চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী।
ফলে আমার মনে হয় না, বাংলাদেশের সরকার এই ব্যবসায়ীদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ; বরং আমার মত হচ্ছে, এই ব্যবসায়ীরাই সরকার, তারা এমন একটি অবস্থায় পৌঁছেছে যে, তারা এখন পাওয়ার, পলিটিক্স, মূল্যস্ফীতি- সব কিছুই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। ফলে এই মার্কেট পাওয়ার যদি অল্প কয়েকটি কোম্পানির হাতে কেন্দ্রীভূত হয়, এই কোম্পানিগুলো চাইলে পণ্যমূল্য বাড়িয়ে দিতে পারে। আর আমি মনে করি বাংলাদেশ মূল্যস্ফীতিতে মার্কেট পাওয়ারের এই কনসেন্ট্রেশন বড় একটি ভূমিকা রেখেছে।
ভিডিও লিঙ্ক : https://www.facebook.com/ zia.hassan.rupu/videos/5824557594275408
লেখক : সামস্টিক অর্থনীতি ও উন্নয়ন গবেষক