মার্কিন ভিসানীতি, অস্বস্তিতে ভারতও

  • আব্দুর রহমান
  •  ১১ জুলাই ২০২৩, ২০:৩৪, আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৩, ০৫:৫০

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন গত ২৪ মে শুধু বাঙালিদের জন্য প্রযোজ্য বিশেষ ভিসানীতি ঘোষণা করায় বাংলাদেশ সরকার যেমন অস্বস্তিতে আছে, অনুরূপ অস্বস্তিতে ভারতও পড়েছে বলে মনে হচ্ছে, যা বাংলাদেশীদের অবাক করেছে। কারণ বর্তমানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে ২০০৮ সালে ক্ষমতায় বসাতে ভারত ২০০৭ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে প্রভাবিত করায় সেনাপ্রধান জেনারেল মঈনকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন দেয়ায় তিনি ও তার সহযোগী রক্ষীবাহিনীর সাবেক ডেপুটি লিডার বর্তমানে জাপার এমপি নবম ডিভিশনের তৎকালীন জিওসি মেজর জেনারেল মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী তাদের সাবেক বস জেনারেল এরশাদের মতো সংবিধান লঙ্ঘন করে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি বঙ্গভবন দখল করে রাষ্ট্রপতি ড. ইয়াজউদ্দিনকে নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে তাদের মনোনীত ড. ফখরুদ্দিনকে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর অনুরূপ নির্বাহী ক্ষমতা দিয়ে দুই বছরের জন্য নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা পদে নিয়োগ করতে রাষ্ট্রপতিকে বাধ্য করতে পেরেছিল।

অতঃপর জেনারেল মঈন ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ভারত সফরে গেলে দুই হালি ঘোড়া উপহার পেয়ে তার মূল্য প্রদানকারী অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করলে তিনি জেনারেলকে দ্রুত নির্বাচন দিয়ে সরে পড়তে বলায় নির্বাচনে শেখ হাসিনা জয়ী হয়ে তাকে পদচ্যুত করতে পারেন বলে জেনারেল আশঙ্কা প্রকাশ করায়, প্রণব বাবু শেখ হাসিনাকে বলে জেনারেলের নিরাপদ প্রস্থানের আশ্বাস দেয়ায় জেনারেল মঈন দেশে ফিরে সেনাবাহিনীর সহায়তায় দ্রুত ফটোযুক্ত ভোটার তালিকা যা ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর আর ব্যবহারের প্রয়োজন পড়েনি, তা তৈরি করে ২৯ ডিসেম্বরে নির্বাচনের নামে ১৪ দলের হাতে ২৬৫ আসন তুলে দিয়ে স্বেচ্ছায় নির্বাসনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাওয়ার পর আওয়ামী লীগকে জনগণের ভোট পাওয়ার জন্য আর জনগণের দুয়ারে যেতে হয়নি। কারণ নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার দাবিতে ১৯৯৪ সালে ১৪ দলের ১২৭ জন ও জামায়াতের ২০ জন এমপি সংসদ থেকে পদত্যাগ করে মার্চ ১৯৯৬ পর্যন্ত ১৭৩ দিন হরতাল পালন করে সরকারি কর্মচারীদের বিদ্রোহ ঘটিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায়কারী ১৪ দল ৩০ জুন ২০১১ তারিখে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী পাসের মাধ্যমে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে ভূমি হুকুমদখলের মতো শতভাগ দলীয় সরকার ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করার সাংবিধানিক ক্ষমতা অধিগ্রহণ করার পাশাপাশি ভবিষ্যতে একতরফা নির্বাচন বন্ধে জেনারেল মঈনের মতো যাতে কেউ এগিয়ে আসতে সাহসী না হয় তা বন্ধে এরূপ অপচেষ্টাকারীর শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হবে বলে একই সংশোধনীতে সংযোজন করা হয়েছে। তারপর নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞা থেকে সেনাবাহিনীর নাম বাদ দেয়া হয়েছে।

নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার দাবিতে সংসদ থেকে পদত্যাগ করায় তা বাতিলের সংসদীয় ক্ষমতা আওয়ামী লীগের না থাকা সত্ত্বেও তা বাতিল করে দলীয় সরকারের অধীনে ২০১৪ সালে নির্বাচনের ঘোষণা দেয়ায় সব দলের বর্জনের মুখে নির্বাচন যখন ২০০৭ সালের মতো ভণ্ডুল হতে বসেছিল, তখন ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি তার পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিংকে ২০১৩ সালের ৪ ডিসেম্বর দুই দিনের মিশনে ঢাকায় পাঠিয়েছিলেন। তিনি ঢাকায় এসে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও সাবেক স্বৈরশাসক জেনারেল এরশাদের প্রথম স্ত্রী সাবেক ফার্স্টলেডি বেগম রওশন এরশাদের বাসভবনে দৌড়াদৌড়ি করে তাকে বিরোধী দলের নেতার মর্যাদা দেয়ার শর্তে নির্বাচনে রাজি করানোর কারণে ভোট গ্রহণের আগেই ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৪টি আসনের ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে যাওয়ায় জনগণ ১৯৯১ সালের পর প্রথমবারের মতো ভোটাধিকার হারা হওয়ায় সংখ্যাগুরু জনগণ ভারতের ওপর ক্ষুব্ধ। প্রণব বাবুর এই ভূমিকার পুরস্কারস্বরূপ ক্ষমতাসীন কংগ্রেস সরকার ২০১২ সালে তাকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করেছিলেন। ২০১৭ সালে রাষ্ট্রপতির মেয়াদ শেষে ‘দ্য কোয়ালিশন ইয়ারস’ নামক বই লিখে তাতে ২০০৮ সালে জেনারেল মঈনকে কিভাবে ম্যানেজ করেছিলেন তার বিস্তারিত বিবরণ থাকায় বইটি পড়ে বাংলাদেশী ভোটারদের ঠোঁট কামড়ানো ছাড়া কিছুই করার ছিল না। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদও বিশিষ্ট নাগরিকদের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি একতরফা নির্বাচন সফল করতে ভূমিকা রাখায় তাকেও ২০১৮ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করা হয়েছিল।

২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ নির্বাচনকালীন ক্ষমতায় না থাকায় প্রণব বাবুকে গোপনে সহায়তা করতে হয়েছিল। প্রকাশ্যে করলে তার ফল হিতে বিপরীত হতো। কারণ আমাদের পূর্বপুরুষরা ১৯৪৬ সালে ভোট দিয়ে পূর্ববঙ্গকে ভারতবর্ষ থেকে মুক্ত করে পূর্বপাকিস্তান করেছিল বলে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়েছিল। পূর্বপুরুষরা ভুল করলে আমাদের অবস্থা হতো হায়দরাবাদ বা কাশ্মিরের মতো। ২০১৪ সালে নির্বাচনকালীন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় ভারত প্রকাশ্যে হস্তক্ষেপ করতে পেরেছিল। কারণ ভোটের বাক্সে ওটার প্রতিবাদ জানানোর ক্ষমতা আওয়ামী লীগ ৩০ জুন ২০১১ তারিখেই ছিনিয়ে নিয়েছিল।

বাংলাদেশের সংখ্যাগুরু ভোটারদের জন্য দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে- ১৯৭৭ সাল থেকে ভারতের দিল্লিøতে ক্ষমতাসীন কংগ্রেস ও বিজেপি সরকার গত ৪৬ বছরেও লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গ প্রভাব খাটিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে দলীয় প্রার্থীদের ও বিধানসভার নির্বাচনে কংগ্রেস এবং বিজেপিও নিজ নিজ দলকে জয়ী করতে না পারলেও বাংলাদেশের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করে পছন্দীয় দল আওয়ামী লীগকে জনগণের ভোট ছাড়া ১৫ বছর যাবত ক্ষমতায় বসাতে ও রাখতে সক্ষম হওয়ায় সংখ্যাগুরু ভোটারদের মনে ভারত সম্পর্কে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। কারণ নির্বাচন দুটো ১৯৯৬ সালের ১২ জুন বা ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের মতো না হয়ে জেনারেল এরশাদের ৩ মার্চ ১৯৮৮ ও ৯ মে ১৯৮৬ সালের মতো হওয়ায় জনগণ ভোটাধিকারহারা হয়েছে। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর প্রশাসন, পুলিশ ও পোলিং অফিসারদের সহায়তায় দলীয় ক্যাডাররা রাতদুপুরে ৪২ হাজার ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৪০ হাজার ভোটকেন্দ্র দখল করে ৮০ শতাংশ থেকে শতভাগ পর্যন্ত অস্বচ্ছ ব্যালটে নৌকা ও লাঙলের সিল মেরে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স পূর্ণ করায় ১৪ দলের ২৯২ জন প্রার্থীর জয় নিশ্চিত হওয়ায় বিএনপির অংশগ্রহণের নির্বাচনেও সাবেক ফার্স্টলেডি বেগম রওশন এরশাদের বিরোধী দলের নেতার আসন অটুট থাকায় ওই নির্বাচন ভারত ও চীন ব্যতীত দেশে-বিদেশে কোথাও বিশ্বাসযোগত্যা পায়নি।

তারপরও গত চার বছর চার মাস ধরে সরকারি দলের নেতাদের আগামী নির্বাচন তাদের সরকারের অধীনেই সংবিধান মোতাবেক হবে- এই বাগাড়ম্বর অব্যাহতভাবে চলতে থাকায় অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করেছে। আগামী নির্বাচন যদি ১৯৯৬ সালের ১২ জুন বা ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের মতো হয় তাহলে ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পরাজয় শতভাগ নিশ্চিত এটি যেমন আওয়ামী লীগ বুঝতে পেরেছে, তেমনি ভারতও বুঝতে পেরেই দুই দেশের সরকারের মধ্যে একই রকম অস্বস্তি লক্ষণীয়। ভারতের কংগ্রেস ও বিজেপি সরকার আওয়ামী লীগ ব্যতীত বাংলাদেশের সব দলকে মৌলবাদী বলে মনে করে। তাদের বদ্ধমূল ধারণা, আসাম ত্রিপুরাসহ ভারতের পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্যের যে উপজাতীয় সঙ্ঘাত ১৯৭১ সালের আগে থেকেই চলে আসছিল তা বিএনপি সরকারের মদদে ২০০১ সালে আবার বৃদ্ধি পেয়েছিল। তা ডাহা মিথ্যা। বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষীদের একটি ফাঁড়ির বিপরীতে ভারতের বিএসএফের দু-তিনটি করে ফাঁড়ি থাকায় বাংলাদেশের একজন কৃষক গরু চরাতে বা ঘাস কাটতে সীমান্তে গিয়ে বিএসএফের রাইফেলের রেঞ্জে পড়লে তাদের গুলির খোরাক হতে হচ্ছে। উলফারা দলে দলে বাংলাদেশে এসে প্রশিক্ষণ নিয়ে ভারতে জঙ্গি হামলা করে নিরাপদে বাংলাদেশে ফিরে আসে বলে ভারত প্রচার করলেও তার মধ্যে সত্যের লেশমাত্র নেই। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে একজন উলফা জঙ্গিও বিএসএফের গুলিতে হত বা আহত বা জীবন্ত ধরা পড়ার ঘটনা ঘটল না কেন? গত ১০ বছরে আসাম ও ত্রিপুরায় যে জাতিগত দাঙ্গা হয়েছে ও বর্তমানে মনিপুর রাজ্যে যে উপজাতীয় সঙ্ঘাত চলছে, তার মদদ কোন রাষ্ট্র দিচ্ছে? মাওবাদীরা পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ও ঝাড়খণ্ড রাজ্যে প্রায়ই ১৫-২০ জনের পুলিশবাহিনীকে নিকেশ করে দিচ্ছে। সেই অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ মাওবাদীরা কোথায় পায়? ভারতের পূর্বাঞ্চলের রাজ্যের জঙ্গি হামলা বন্ধে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে বাংলাদেশের সংখ্যাগুরু জনগণকে ভোটাধিকারহারা হতে হবে কোন যুক্তিতে?

মধ্যপ্রাচ্যের ইসরাইলে যে দলই ক্ষমতায় আসুক না কেন, তাদের ফিলিস্তিননীতি একই থাকে বা আরো কঠোর হয়। তেমনি ভারতে কংগ্রেস বা বিজেপি যে দলই ক্ষমতায় থাকুক না কেন, তাদের বাংলাদেশনীতির ক্ষেত্রে কোনো পার্থক্য নেই। কংগ্রেস সরকার ২০০৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসাতে ও বিনাভোটে ক্ষমতায় রাখতে পারার ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালের নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদিকে শুধু অভিনন্দন জানানোর লিপ সার্ভিস দিতে হয়েছিল। নতুন মার্কিন ভিসানীতি আওয়ামী লীগের বাড়া ভাতে যেমন ছাই ঢেলে দিয়েছে তেমনি নরেন্দ্র মোদিকে অগ্নিপরীক্ষায় ফেলেছে। আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যদি জয়ী হতে না পারে তাহলে পাঁচ মাস পরে অনুষ্ঠিতব্য ভারতের লোকসভা নির্বাচনে রাহুল গান্ধী এটিকে নরেন্দ্র মোদি সরকারের পররাষ্ট্রনীতির ব্যর্থতা হিসেবে আখ্যায়িত করে ইস্যু সৃষ্টি করতে পারেন। আওয়ামী লীগ ও তাদের সমর্থক বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজ ও সাংবাদিকরা বাংলাদেশে ২০০৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনে ভারতের হস্তক্ষেপকে আদৌ হস্তক্ষেপ বলে মানতে নারাজ হলেও মার্কিন ভিসানীতিকে বাংলাদেশের নির্বাচনে মার্কিন হস্তক্ষেপ বলে অভিহিত করায় ভারত এবং চীনও তাতে সহমত পোষণ করেছে। কারণ ভারতের নরেন্দ্র মোদি সে দেশের সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে হিন্দুইজমের ডাক দিয়ে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিশাল জয় পাওয়ায় কংগ্রেসকে বিরোধী দলের মর্যাদাও হারাতে হয়েছে। ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পরাজয়ের ভয়ে আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৭ সালের মেয়াদোত্তীর্ণ করপোরেশনের নির্বাচন আট বছর আটকে রেখেছিল। সিটি করপোরেশনকে দ্বিখণ্ডিত করে ২০১৮ সালের মতো নির্বাচন ২০১৫ সালে করা হয়েছিল। ভারতের কাশ্মিরেও পাঁচ বছর ধরে নির্বাচন আটকে রেখে নরেন্দ্র মোদি সরকার রাজ্যকে দুই ভাগ করে সংখ্যাগুরু মুসলমানদের আসন সংখ্যা মাত্র একটি বৃদ্ধি করা হলেও সংখ্যালঘু হিন্দুদের আসন সংখ্যা ছয়টি বৃদ্ধি করা হয়েছে।

তারপরও নির্বাচন নিয়ে দোলাচলে বিজেপি সরকার (সূত্র : ২০ জুন দৈনিক প্রথম আলো)। যে সরকার নিজ দেশের সংখ্যালঘু নাগরিকদের কোণঠাসা করে রাখে সেই সরকার একই ধর্মাবলম্বী অন্য দেশে সংখ্যাগুরুদের স্বার্থে নির্বাচনে হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকবে- এটি বিশ্বাসযোগ্য নয়। চীন নিজ দেশে উইঘুর মুসলমানদের কনসেনট্রেন ক্যাম্পের বাসিন্দা বানিয়েছেন বলেই ভারতের সাথে একমত হয়েছে। ভারতের হস্তক্ষেপে বিনাভোটে এমন এমপি নির্বাচিত হয়েছেন তারা সংসদে দাঁড়িয়ে যিনি বলতে পারেন, ‘শেখ হাসিনা বেঁচে থাকতে ভারত ভাঙতে দেয়া হবে না’ ( সূত্র : ২৫ জুন দৈনিক প্রথম আলো)। ভারতের পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্যের ও পশ্চিমবঙ্গের মোট জনসংখ্যা বাংলাদেশের চেয়ে কম হলেও ভারত জনগণের অধিকার রক্ষায় আটটি রাজ্যে বিভক্ত করেছে। বাংলাদেশে নিজেদের একক ক্ষমতার ভাগ দিতে রাজি নন সবচেয়ে প্রবীণ সরকারের প্রধানমন্ত্রী। তাই জেলায় জেলায় বিভাগ ও ক্যান্টনমেন্ট স্থাপন করে জনগণকে দুধের বদলে ঘোল খাওয়াচ্ছেন। বাংলাদেশে চারটি প্রদেশ করা হলে আওয়ামী লীগ সরকারকে আজকের এই দিনটি দেখতে হতো না।