মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন শুরু

Bangla Tribune

কক্সবাজার প্রতিনিধি
২৯ জুলাই ২০২৩

পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়েছে কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায় নির্মিত কয়লাভিত্তিক মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট। এই ইউনিটের উৎপাদন ক্ষমতা ৬০০ মেগাওয়াট। শনিবার (২৯ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে এই ইউনিটে পরীক্ষামূলকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করা হয়।

মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ প্রকল্পের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেন মজুমদার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, পরীক্ষামূলক উৎপাদনের শুরুতে ৩৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। বিকাল থেকে এর উৎপাদন ১২৫ থেকে ১৫০ মেগাওয়াট পর্যন্ত হতে পারে।  এই ইউনিটে ১২৫ থেকে সর্বোচ্চ ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুতই পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদন করা হবে। উৎপাদিত এই বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হবে।

আগামী ডিসেম্বর নাগাদ কেন্দ্রের এই ইউনিটে পুরো সক্ষমতা অনুযায়ী ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করার আশা করছেন কর্মকর্তারা।

কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ মাতারবাড়ি ও ধলঘাটা ইউনিয়নের মাঝামাঝি এক হাজার ৬০৮ একর জমির ওপর বিস্তৃত ১২শ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন এই বিদ্যুৎকেন্দ্র। কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিএল) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।

প্রকল্পের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেন মজুমদার জানিয়েছেন, দুটি ইউনিটের মধ্যে প্রথমটি শনিবার পরীক্ষামূলকভাবে চালু হলো। ইউনিটটির উৎপাদন ক্ষমতা ৬০০ মেগাওয়াট হলেও প্রাথমিকভাবে ১২৫ থেকে ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদন শুরু হলো।

দ্বিতীয় ইউনিটের পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে আগামী ডিসেম্বর মাসে। সেটিতেও শুরুতে ১২৫ থেকে ১৫০ মেগাওয়াট উৎপাদন করে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা হবে।

এই বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের নির্বাহী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলতি বছরের ডিসেম্বরে ইউনিটটি নিয়মিত উৎপাদনের জন্য উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। প্ল্যান্টের সম্মিলিত উৎপাদন ক্ষমতা এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট, আগামী মার্চ বা এপ্রিল মাসে পুরোদমে বাণিজ্যিক উৎপাদনের যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে এটি পুরোপুরি চালুর পরিকল্পনা আছে।

সরকারের মেগা প্রকল্পগুলোর অন্যতম এই বিদ্যুৎকেন্দ্র। এটি জাপানের আর্থিক সহায়তার প্রায় ৫১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতে, পুরো কেন্দ্রে প্রতিদিন ১০ হাজার টন ও প্রতিটি ইউনিটে পাঁচ হাজার টন কয়লা প্রয়োজন হবে। এখন পর্যন্ত তিন লাখ টন কয়লা সংরক্ষণ করা হয়েছে এবং আরও ৬৫ হাজার টন নিয়ে আগামী ৭ আগস্ট আসবে।

প্রকল্প পরিচালক আরও জানান, জাহাজ থেকে সরাসরি ট্যাঙ্কে কয়লা আনলোড করার জন্য প্রকল্প এলাকায় দুটি জেটির পাশাপাশি ১.৭ মিলিয়ন টন স্টোরেজ ক্ষমতার চারটি ট্যাঙ্ক ইতোমধ্যে নির্মিত হয়েছে। ট্যাঙ্কগুলোর ৬০ দিনের জন্য কয়লা সংরক্ষণের সক্ষমতা রয়েছে। জাহাজ থেকে কয়লা আনলোড করতে দেড় থেকে দুদিন সময় লাগে। কয়লা উত্তোলনের জন্য দুটি জেটি এবং কয়লা সংরক্ষণের জন্য চারটি ট্যাংক নির্মাণসহ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর ও বিদ্যুৎকেন্দ্র সাইটের কাছে এলএনজি ও এলপিজি টার্মিনাল নির্মাণ করা হচ্ছে।