মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে সিরিজ জয়ের হাতছানি

মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে সিরিজ জয়ের হাতছানি

মাউন্ট মঙ্গানুই– এক বছর আগে যেখানে ‘জয়’-এর বীজ পুঁতে এসেছিলেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। তারই শিকড় প্রসারিত হয়েছে নেপিয়ারে। যেখানে জয়ের জোড়া ফুল ফুটেছে এবার। সেই নেপিয়ার থেকে গতকাল শান্তরা পাড়ি জমান পাহাড়ি শহর মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে। পরিপাটি এ শহরের বে ওভাল স্টেডিয়ামেই হবে সিরিজের বাকি দুই টি২০ ম্যাচ। যে ম্যাচ ঘিরে জয়ের স্বপ্ন উঁকি দিচ্ছে বাংলাদেশ শিবিরে। প্রথম জয়ের জন্মভিটায় আরেকটি প্রথমের জন্মও হতে পারে। অর্থাৎ নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রথমবারের মতো সিরিজ জিতে আরেকটি ইতিহাস গড়ে ফেলতে পারে টিম বাংলাদেশ।

নিউজিল্যান্ডের ওয়ানডে দলে বিশ্বকাপ খেলা ১১ জন না থাকলেও টি২০ খেলছে সেরা দল নিয়ে। কেন উইলিয়ামসন ও ডেভন কনওয়ে ছাড়া বাকিরা ২০ ওভারের ক্রিকেটের নিয়মিত মুখ। সেই দলকেই নেপিয়ারের স্পোর্টিং কন্ডিশনে পাঁচ উইকেটে হারায় বাংলাদেশ। সমন্বিত বোলিং আক্রমণ দিয়ে নিউজিল্যান্ডকে বেঁধে রেখেছিল ১৩৪ রানে। ৮ বল হাতে রেখে ম্যাচটি জিতে নেয় তারা। সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে আজ দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে স্বাগতিকদের মুখোমুখি হবে টাইগাররা। নেপিয়ারের চেয়ে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে বাতাস বেশি থাকে। পেস, বাউন্স, সুইংয়ের স্বর্গে খেলা; যে ভেন্যুতে টেস্ট জিতে ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছিলেন পেসার এবাদত হোসেন। কী আগুনে বোলিংই না করেছিলেন তিনি। স্বাভাবিকভাবে টি২০ ম্যাচেও নজর থাকবে পেস বোলারদের ওপর।

শরিফুল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান, তানজিম হাসান সাকিব, সৌম্য সরকারকে ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারলে বাজিমাত হলেও হতে পারে। শরিফুলকে অকার্যকর করে দিতে কিউই কোচ বিশেষ কোনো পরিকল্পনা করে থাকলে তানজিমকে বিশেষ কৌশল দেবেন টাইগার কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। অভিজ্ঞদের কাছ থেকে সঠিক  দিকনির্দেশনা পেলে বলের সুইং কাজে লাগিয়ে সফল হতে পারবেন তরুণ এ ফাস্ট বোলার। শুধু লাইন-লেন্থ ঠিক রাখলেও ভালো কিছু হতে পারে। সৌম্য স্লো মিডিয়াম বল করলেও আঁটসাঁট লাইন-লেন্থের কারণে ইকোনমি ভালো রাখার সুযোগ থাকবে। এককথায় সিরিজ জিততে হলে মাউন্ট মঙ্গানুইয়েও নেপিয়ারের মতো বোলারদের জাদুর ঝাঁপি খুলে দিতে হবে।

একজন স্পিনার খেলালে স্বাভাবিকভাবেই শেখ মেহেদিকে বেছে নেবেন কোচ। স্পোর্টিং কন্ডিশনেও আঁটসাঁট বোলিং করতে জানেন তিনি। নেপিয়ারে বোলিং ওপেন এবং ব্রেকথ্রু দিয়ে নিজের সামর্থ্য দেখিয়েছেন টাইগার এ অফস্পিনার। এ ছাড়া শেখ মেহেদির ব্যাটিং সামর্থ্য যথেষ্ট ভালো। নিউজিল্যান্ডে প্রথম টি২০ জয়ের এ নায়ক অলরাউন্ড নৈপুণ্য দেখান। চার ওভারে ১৪ রান দিয়ে দুই উইকেটের পাশাপাশি লিটন কুমার দাসের জুটিতে ১৯ রান করে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন।

বাংলাদেশের বোলিং লাইনআপ নিউজিল্যান্ডে দুর্দান্ত সময় পার করছে। ডুনেডিন আর নেলসনে প্রথম দুই ওয়ানডেতে খুব একটা সুবিধা করতে না পারলেও পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার পর জমাট বোলিং হয়েছে পরের দুই ম্যাচে। ৫০ ও ২০ ওভারের শেষ দুই ম্যাচে ব্যাটাররাও ভালো করেছেন। কোনো একক ব্যাটার বড় ইনিংস খেলেননি, সমন্বিত পারফরম্যান্সে জিতেছে দল।

টপ থেকে মিডল অর্ডারে রান করার একটা ক্ষুধা ছিল। বল ডট না করে রান তোলায় ফোকাস ছিল বেশি। প্রথম টি২০ ম্যাচে অ্যাংকর ভূমিকা নেওয়া লিটন কুমার দাস এ ম্যাচে নাও খেলতে পারেন। গতকালও তাঁকে খোঁড়াতে দেখা গেছে বলে জানান সিরিজ কাভার করতে যাওয়া সাংবাদিকরা। টি২০ ম্যাচের শেষদিকে দৌড়ে রান নেওয়ার সময় পা পিছলে ঊরুর পেছনের পেশিতে চোট পান তিনি। ম্যাচ শেষে বরফ থেরাপি দিতে দেখা গেছে উইকেটরক্ষক এ ব্যাটারকে। শেষ পর্যন্ত তিনি খেলতে না পারলে কিপিং করবেন রনি তালুকদার। বিপিএলে উইকেট কিপিং করেন তিনি। লিটনের জায়গায় ব্যাটিং ওপেন করাতে সৌম্যকে প্রমোশন দিতে পারেন কোচ।

সমকাল