মর্টার শেলের শব্দে ফের কেঁপে উঠল টেকনাফ সীমান্ত

মর্টার শেলের শব্দে ফের কেঁপে উঠল টেকনাফ সীমান্ত

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির জান্তা নিয়ন্ত্রিত বাহিনী ও বিদ্রোহী আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘাত চলছেই। সোমবার মধ্যরাত ও মঙ্গলবার ভোরে গোলাগুলি ও মর্টার শেল বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত।

স্থানীয়রা জানান, রাখাইনের মংডুর উত্তরে নাকপুরা ও বলিবাজার এলাকায় সোমবার মধ্য রাতে থেমে থেমে ২০-২৩টি মর্টার শেলের বিস্ফোরণ ঘটে। এতে নাফ নদের এপারে টেকনাফের হ্নীলা ও হোয়াইক্যং ইউনিয়নের খারাংখালীসহ কয়েকটি এলাকায় ভূকম্পন দেখা দেয়।

জানা গেছে, রোববার রাতেও নাকপুরা ও বলিবাজার এলাকায় ৩৩ মিনিটে ২১টি মর্টার শেলের বিস্ফোরণ ঘটে। সোমবার রাত সোয়া ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত ওই দুই এলাকায় অন্তত ২২টি মর্টার শেলের বিস্ফোরণ ঘটে। এ ছাড়া মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত থেমে থেমে গোলাগুলি ও মর্টার শেল বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ভেসে আসে। তবে আগের চেয়ে সোমবার রাতে এই আওয়াজ ছিল অনেক বেশি। কয়েক দিন ধরে এসব এলাকায় দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সদস্যরা অবস্থান নেন এবং সেখানকার সীমান্তরক্ষী পুলিশের (বিজিপি) সেক্টর ও একাধিক সীমান্ত চৌকিতে হামলা চালাচ্ছেন। সরকারি বাহিনীও তাদের অবস্থান লক্ষ্য করে মর্টার শেল নিক্ষেপ করছে।

টেকনাফের হ্নীলা সীমান্তের ওয়াব্রাং এলাকার বাসিন্দা মো. রফিক বলেন, সোমবার রাতে থেমে থেমে বিস্ফোরণে বাড়িঘর কেঁপে ওঠে। হ্নীলা ইউনিয়নের চৌধুরীপাড়ার উঁছু তাং রাখাইন বলেন, মধ্যরাতের বিস্ফোরণে তাঁর ঘরও কেঁপে উঠেছিল।

হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, তারাবির নামাজ শেষ করে একটি দোকানে বসেছিলাম। হঠাৎ ওপার থেকে গুলি ও মর্টার শেলের বিকট আওয়াজ আসতে শুরু করে। সঙ্গে সঙ্গে মনে হলো, আমাদের এখানে মাটি কেঁপে উঠেছে।

হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, গত রাতে পরপর বিকট শব্দ ও মর্টার শেল বিস্ফোরণ এপারের লোকজনকে ভাবিয়ে তুলেছে।

টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, রমজানেও রাতে বিস্ফোরণের শব্দ এপারের লোকজনের উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলছে। গ্রেনেড ও মর্টার শেলের বিস্ফোরণে কাঁপছে টেকনাফ পৌরসভার নাইট্যংপাড়া, চৌধুরীপাড়া, জালিয়াপাড়া, হাঙ্গরডেইল, কুলালপাড়া, অলিয়াবাদসহ কয়েকটি গ্রাম। শিগগির যে এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ হবে, সে লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আদনান চৌধুরী বলেন, রাখাইন রাজ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটলেও টেকনাফ সীমান্তের প্রতি বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে।

samakal