মন্ত্রীর গাড়িচালকের ফোনে থানায় আটকা কৃষক

 

24 Live Newspaper
by নিজস্ব প্রতিবেদক

08 October 2022

ঘাস কাটা নিয়ে সমাজকল্যাণমন্ত্রীর গাড়িচালকের সঙ্গে তর্ক করায় এক কৃষককে তিন ঘণ্টা থানায় আটকে রাখা হয়েছে। শুক্রবার রাত ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ থানায় ফুল কমল (৪০) নামে ওই কৃষককে আটকে রাখা হয়।

lalmonirhat
মন্ত্রীর গাড়িচালকের ফোনে থানায় আটকা কৃষক

ফুল কমলের বাড়ি কালীগঞ্জের দলগ্রাম ইউনিয়নের শ্রীখাতা গ্রামে। তার পাশেই কাশিরাম গ্রামে সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের বাড়ি। তার গাড়িচালক হলেন আতিয়ার রহমান।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন কালীগঞ্জের কাকিনা উত্তর বাংলা কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক ও কাশিরাম গ্রামের বাসিন্দা এস তাবাসসুম রায়হান মুসতাযীর।

তিনি লেখেন, গাড়িচালক আতিয়ার রহমান প্রতিদিনের মত শুক্রবার সকালেও হাঁটতে বের হন। ওই সময় শ্রীখাতা মৌজার সড়কে এসে দেখেন কয়েকজন কৃষক রাস্তার পাশে ঘাস কাটছে। আতিয়ার তাদেরকে ঘাস কাটতে নিষেধ করেন। তখন কৃষক ফুল কমল বলেন- ‘আমরা আপার (এস তাবাসসুম রায়হান) জায়গার ঘাস কাটতেছি। আপনার সমস্যা কী? আপনি নিষেধ করার কে?’ তখন আতিয়ার বলেন- ‘আমি কে, তা বিকেলের মধ্যে জানতে পারবি।’

এরপর রাত ৯টার দিকে কৃষক ফুল কমলকে বাড়ি থেকে ধরে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। সেখানে ফুল কমলকে ভয়ভীতি দেখিয়ে গাড়িচালক আতিয়ারের কাছে ক্ষমা চাইতে বলেন কালিগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরুজ্জামান। থানায় প্রায় তিন ঘণ্টা ফুল কমলকে আটকে রাখার পর রাত ১২টার দিকে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

ফুল কমল বলেন, ‘থানায় নিয়ে এসআই নুরুজ্জামান আমাকে মারধর করেছেন, হুমকি দিয়ে বলেছেন, মন্ত্রীর ড্রাইভারের কাছে গিয়ে হাত-পা ধরে ক্ষমা চাইবি, নয়তো জেলে পঁচে মরবি। এখন আমি ভয়ে আছি, কখন কী হয়।’

কালীগঞ্জ থানার এসআই মো. নুরুজ্জামান বলেন, ‘মন্ত্রী মহোদয়ের গাড়ির ড্রাইভার আতিয়ার রহমানের মৌখিক অভিযোগে ফুল কমলকে থানায় আনা হয়েছিল। রাত পৌনে ১২টার দিকে তাকে আবার ছেড়ে দেওয়া হয়।’

গাড়িচালক আতিয়ার রহমান বলেন, ‘রাস্তার পাশের ঘাস কাটতে দেখে আমি তাদের মানা করি, কিন্তু ওরা আমার কথা না শুনে আমার সঙ্গে তর্ক করে গেছে। তাই আমি থানায় ফোন করেছি।’

এদিকে ওই জমির মালিক এস তাবাসসুম রায়হান নিজেই। তিনি বলেন, ‘এটা আমার জমি। এখান থেকে এলাকার গরীব মানুষরা গরুর জন্য ঘাস কেটে নিয়ে যায়, এতে আমার কোনো সমস্যা নেই। তাহলে মন্ত্রীর গাড়ি চালকের কেন এতো সমস্যা? তাকে ওই দায়িত্ব কে দিয়েছেন?’