- ২৪ ডেস্ক
একাত্তরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নৃশংসতার সঙ্গে শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীদের অপরাধের তুলনাকে ‘ভুল’ হিসেবে আখ্যায়িত করে দুঃখ প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। মঙ্গলবার দুপুরে এক অনুষ্ঠানে দেওয়া তার একটি বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিলে সন্ধ্যায় তিনি ফেসবুক পোস্টে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন।

সন্ধ্যা ৭টা ৩১ মিনিটে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া এক পোস্টে অধ্যাপক নজরুল লেখেন, ‘শেখ হাসিনার নৃশংসতার সাথে একাত্তরে বাংলাদেশের মানুষের ওপর পাকিস্তানি বাহিনীর নৃশংসতার তুলনা করা ঠিক হয়নি আমার। দুটোই জঘন্যতম অপরাধ।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার কথায় যারা ভেবেছেন আমি একাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনীর হত্যাযজ্ঞকে ছোট করে দেখেছি তাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি।’
এর আগে, মঙ্গলবার দুপুরে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হওয়া হত্যাকাণ্ডের বিচার’ শীর্ষক এক আলোচনা ও তথ্য প্রদর্শনীতে অধ্যাপক নজরুল শেখ হাসিনাকে নিয়ে ওই বিতর্কিত মন্তব্যটি করেছিলেন। তার সেই বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা ও তার দোসররা যে অপরাধ বাংলাদেশে করেছে, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীও মনে হয় এত জঘন্য অপরাধ করে নাই।’
ফেসবুকে দেওয়া ব্যাখ্যায় আইন উপদেষ্টা শেখ হাসিনার শাসনামলের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি লেখেন, ‘শেখ হাসিনার নৃশংসতা অবিশ্বাস্য। লাশ ও আহত মানুষকে আগুনে পোড়ানো, নির্বিচারে নারী-কিশোর-শিশু হত্যা, হেলিকপ্টার দিয়ে গুলি করে বেসামরিক মানুষ মারা, মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতর তরুণকে গুলি করে মারা, হাসপাতালে চিকিৎসা না দিয়ে হত্যা করার নির্দেশদাতা ছিলেন শেখ হাসিনা।’
তিনি উল্লেখ করেন যে, এই ধরনের কর্মকাণ্ড যুদ্ধের ময়দানেও গুরুতর অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে তা সত্ত্বেও একাত্তরের ভয়াবহতার সঙ্গে এই তুলনা করাটা ঠিক হয়নি বলে তিনি স্বীকার করে নেন।
বিবিসি বাংলাকে অধ্যাপক নজরুল তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টের পোস্টটি নিজের বলে নিশ্চিত করেছেন। তার এই দ্রুত প্রতিক্রিয়া এবং দুঃখ প্রকাশকে অনেকেই ইতিবাচকভাবে দেখছেন, যা চলমান রাজনৈতিক বিতর্কে একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে।