- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২৩:১৭
সিরিজের প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ৪ উইকেটের বড় জয় অস্ট্রেলিয়ার। ম্যাথু ওয়েড আর ক্যামেরন গ্রিনের ব্যাটে অনায়াসেই টপকে যায় ভারতের রান পাহাড়। দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ে সর্বোচ্চ ২০৭ রান তুলেও হার এড়াতে পারেনি ভারত। মঙ্গলবারের এই জয়ে ভারতের মাটিতে টানা চার টি-টোয়েন্টি ম্যাচে জয় পেল ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া।
বিশ্বকাপের আগে নিজেদের শেষ সিরিজ খেলতে ভারত সফরে টিম অস্ট্রেলিয়া। সিরিজের প্রথম ম্যাচে পাঞ্জাব ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় অ্যারন ফিঞ্চ। আগে ২২ বারের মুখোমুখি দেখায় ৯ জয়ের পাঁচবারই পরে ব্যাট করে জয়ের বন্দরে পৌঁছায় ক্যাঙ্গারুরা। ভারতের মাটিতে তাদেরই বিপক্ষে শেষ তিন দেখায় তিনবারই জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। আর প্রতিবারই রান তাড়া করে জয় ছিনিয়ে এনেছে বেশ দাপটের সাথে। ফলে টস জিতে ফিল্ডিং নেয়াটাই আবশ্যক ছিলো বটে।
দুই দলের একাদশই ছিলো চমকে ভরা। ভারতের একাদশে নেই আশ্বিন, পান্থ, বুমরাহ। একাদশে ফিরেছেন হার্ষাল প্যাটেল ও উমেশ যাদব। প্রায় ৩ বছর পর টি-টোয়েন্টি দলে ফিরেছেন উমেশ, সর্বশেষ ২০১৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেই খেলেছিলেন তিনি। অপরদিকে অস্ট্রেলিয়া দলে নেই ডেভিড ওয়ার্নার। তবে ডেভিড ওয়ার্নারের অনুপস্থিতিতে আরেক ডেভিড জায়গা করে নিয়েছেন একাদশে। সিংগাপুর জাতীয় দলে খেলা টিম ডেভিড দল বদলে আজই প্রথম খেলছেন অস্ট্রেলিয়ার জার্সিতে। মারকুটে পরীক্ষিত এই ব্যাটার অস্ট্রেলিয়ার জন্য আশীর্বাদ নিঃসন্দেহে।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে তৃতীয় ওভারে দলীয় ২১ রানে হ্যাজলোডের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন রোহিত শর্মা। থিতু হতে পারেননি শেষ ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান বিরাট কোহলিও। নাথান এলিসে বোকা হয়ে ফিরেছেন ৭ বলে মাত্র ২ রান করে। পাওয়ার প্লে শেষে সেরা দুই ব্যাটারকে হারিয়ে ৪৬ রান ভারতের স্কোরবোর্ডে৷ তবে দুই কান্ডারীকে হারালেও পথ হারায়নি ভারত, বরং আরো ঘুরে দাঁড়িয়ে অস্ট্রেলিয়ার ওপরই চাপ সৃষ্টি করে ভারত তৃতীয় উইকেট জুটিতে। পাওয়ার প্লের পরের চার ওভারে রাহুল-সূর্যকুমার জুটি রান তুলে ওভার প্রতি ১০ গড়ে।
ইঞ্জুরির পরের জড়তা ছাড়িয়ে লোকেশ রাহুল ফিরেছেন দারুণ ছন্দে। এশিয়া কাপের শেষ ম্যাচের পর আজও খেলেন তিন ছক্কা আর চার চারে ৩৪ বলে ৫৫ রানের ইনিংস। ২৫ বলে ৪৬ রানের আগ্রাসী এক ইনিংস খেলেন সূর্যকুমার। তবে হার্দিক পান্ডিয়ার ইনিংস দেখে মনে হতেই পারে এতোক্ষণ ছিলো শুধুই ট্রেইলার। ৩০ বলে সাত চার আর পাঁচ ছক্কায় ২৩৬.৬৫ স্ট্রাইকরেটে ৭১ রানের অপরাজিত ইনিংসটা দারি করতেই পারে, পিকচার আভি বাকি হ্যাঁয়! হার্দিকের ইনিংসের শেষ তিন বলে তিন ছক্কায়, মোট ১৬ চার আর ১৩ ছক্কায় ৬ উইকেটে ২০৮ রান তুলে ভারত তখন পাহাড়সম চূড়ায়।
জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে ছক্কা মেরে ইনিংসের শুরু করেন অজি অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। বিপরীতে নিজের খেলা প্রথম চার বলের চারটিতেই বাউন্ডারি হাঁকান ক্যামেরম গ্রিন। কেন তিনি সময়ের অন্যতম সম্ভাবনাময়, তারই যেন প্রদর্শনী সাজালেন। আউট হবার আগে খেলেন আট চার আর চার ছক্কায় ৩০ বলে ৬১ রানের নান্দনিক ইনিংস। ৩৫ রান করে স্টিভেন স্মিথও সাজঘরের পথ ধরেন। ম্যাক্সওয়েলও এদিন ব্যর্থ হয়েছেন, ৩ বলে মাত্র ১ রান করেছেন। দুজনকেই উমেশ যাদব ফিরিয়েছেন। যখনই মনে হচ্ছিলো অস্ট্রেলিয়া জিতে যাবে অনায়াসে, তখনই যেন উত্তেজনার এমন বিস্ফোরণ।
তবে ম্যাথু ওয়েডের দায়িত্বশীল ২১ বলে ৪৫ রানের ইনিংসে ৪ বল বাকি থাকতেই জয় নিশ্চিত করে সফরকারীরা। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে অভিষিক্ত ম্যাচে ১৪ বলে ১৮ রান করেন টিম ডেভিড। এর আগে ১০ বলে ১৭ রানের কার্যকরী বিস্ফোরক ইনিংস খেলেন জস ইংলিশ। ৪ ওভারে মাত্র ১৭ রান দিয়ে আক্সার প্যাটেল ৩ উইকেট শিকার করে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তুললেও বাকি বোলারদের ব্যর্থতায় চোখে চোখ রেখেই অস্ট্রেলিয়া জিতে যায়। ৪ ওভারে ৫২ রান দেন ভুবনেশ্বর কুমার।