
রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় দুই সেনা সদস্যের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম রফিকের বিরুদ্ধে। এরপর এক সেনাসদস্যের ঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। গত সোমবার উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়নের হাতিনাদা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগীদের দাবি, পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা না দেওয়ায় এই হামলা করা হয়।
ভুক্তভোগী দুই সেনাসদস্য হলেন কক্সবাজারের রামু সেনানিবাসে কর্মরত তরিকুল ইসলাম ও রাজশাহী সেনানিবাসে কর্মরত আল-আমিন। তারা দুজন চাচাতো ভাই।
এই ঘটনায় অভিযুক্ত রফিকুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে পুঠিয়া থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলায় মোট ১০ জন আসামির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। সেনাসদস্য তরিকুলের বাবা আবদুল হান্নান মামলাটি করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম তার লোকজন নিয়ে সেনাসদস্য তরিকুল ইসলামের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় তারা ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। পরে বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। হামলাকারীরা চলে যাওয়ার সময় সেনাসদস্য আল-আমিনের বাড়ির কয়েকটি জানালার কাচও ভেঙে যান। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তরিকুলের বাড়ির আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
তরিকুল ইসলামের পরিবারের অভিযোগ, বানেশ্বর ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রফিকুল ইসলাম তাদের কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। চাঁদা না পেয়ে তিনি ক্ষুব্ধ ছিলেন। সোমবার দুপুরে এলাকার একটি চায়ের দোকানে তরিকুলের ভাই তুষার কোনো একটি বিষয় নিয়ে হাসাহাসি করছিল। এটি দেখে রফিকুল ইসলাম মনে করে তাকে নিয়ে হাসাহাসি করা হচ্ছে। এরপর তিনি তুষারকে মারধর করেন। তুষার বাড়িতে এসে বিষয়টি জানালে তার বাবা হান্নান রফিকুল ইসলামকে উদ্দেশ করে উচ্চৈঃস্বরে কিছু কথা বলেন। এর কিছুক্ষণ পরেই রফিকুল ইসলাম তার লোকজন নিয়ে তরিকুলের বাড়িতে হামলা করেন।
সেনাসদস্য তরিকুল ইসলাম বলেন, রফিকুল আমার বাড়িতে এসে একাধিকবার চাঁদা দাবি করেছেন। চাঁদা না দেওয়ায় তিনি ক্ষুব্ধ ছিলেন। হামলা করার সুযোগ খুঁজছিলেন। দোকানে আমার ভাইকে মারধরের পর তিনি দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাড়িতে হামলা চালান।
তরিকুলের বাবা আব্দুল হান্নান বলেন, রফিকুলের সঙ্গে আমাদের কোনো ব্যক্তিগত শত্রুতা নেই। তবুও কেন আমার বাড়িতে আগুন লাগানো হলো? আমার ছেলে সেনাবাহিনীতে চাকরি করে। ছুটিতে সে বাড়িতেই ছিল। তাকে নিয়ে আমরা চাতালে লুকিয়ে প্রাণ বাঁচাই। রফিকুল গালাগালি করেন এবং বলেন, তরিকুলকেও ধরে সাইজ করবেন।
ঘটনার পর থেকেই বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম আত্মগোপনে রয়েছেন। তার মোবাইল নম্বরও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। ফলে এ বিষয়ে তার বক্তব্য নেওয়া যায়নি।
পুঠিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) দুলাল হোসেন বলেন, সেনাসদস্য তরিকুল ইসলামের বাবা আবদুল হান্নান বাদী হয়ে মামলা করেছেন। মামলায় চাঁদা দাবির কথা বলা নেই। কথা কাটাকাটির জেরে হামলা বলে এজাহারে বলা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম। তিনিসহ অন্য আসামিরা পলাতক। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।