মাঠেই জন্মদিনের উপহার পেলেন ক্রেইগ ব্রাফেট! ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ককে সেই উপহার দিলেন প্রতিপক্ষ বাংলাদেশের অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। তাইজুল ইসলামকে অনসাইডে খেলতে চেয়েছিলেন ব্রাফেট। টাইমিংয়ে গড়বড় হয়ে বল চলে গেল উল্টোদিকে শর্ট একস্ট্রা কাভারের দিকে। অপ্রস্তুত মিরাজের বাড়িয়ে দেওয়া ডান হাতটি বলটি ছুঁতে পারলেও মুঠোবন্দী করতে পারল না। ফল, জন্মদিনে ক্রিকেটীয় জীবন উপহার পেয়ে গেলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে টানা ৮৬ টেস্ট খেলে রেকর্ড গড়া ব্রাফেট।
ব্রাফেট জীবন পেয়েছেন ২৬ রানে। এরপর আরও ৬ রান যোগ করার পর সেই মিরাজের করা প্রথম ওভারে এলবিডব্লুর আবেদনে আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা আঙুল তুলে দিয়েছিলেন। তবে তাৎক্ষিণক রিভিউ নিয়ে টিকে যান ব্রাফেট। বলটির ইমপ্যাক্ট যে ছিল অফ স্টাম্পের বাইরে। উইকেটটি নিয়ে মিরাজ প্রায়শ্চিত্ত করতে পারলে দারুণ একটি ব্যাপারই হতো। ৩২তম জন্মদিনে ঠিক ৩২ রানেই ফিরতেন ব্রাফেট।
৩২–এ ৩২–এ না আটকে তিন বল পরেই ৩৩ পেয়ে যান ব্রাফেট। ক্যারিবীয় অধিনায়ক আলোকস্বল্পতায় আগেভাগেই শেষ হওয়া দিনটা শেষ করলেন ১১৫ বলে ৩৩ রানেই অপরাজিত থেকে। ৪৫ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তাঁর সঙ্গী কিসি কার্টি অপরাজিত ৬০ বলে ১৯ রান করে। তাঁর দল দিন শেষ করেছে ৩৭ ওভারে ১ উইকেটে ৭০ রান তুলে। বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসের চেয়ে ৯৪ রানে পিছিয়ে আছে দলটি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের একমাত্র উইকেটটি তুলে নেওয়া নাহিদ রানাই দিনে বাংলাদেশের সেরা পারফর্মার। গতির ঝড়ের সঙ্গে নিখুঁত লাইন–লেংথের সমন্বয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যানদের বড় পরীক্ষাই নিয়েছেন। নিয়মিতই ১৪৫ কিলোমিটারের বেশি গতিতে বল করা নাহিদ রানা দারুণ এক ডেলিভারিতেই ফিরিয়েছেন মিকাইল লুইকে।
নাহিদ রানার ১৪৭ কিলোমিটার গতির বলটিতে ড্রাইভ করতে গিয়েছিলেন লুই। তাঁর ব্যাটের কিনারা ছুঁয়ে বলটি আশ্রয় নেয় উইকেটকিপার লিটন দাসের গ্লাভসে। ৪৭ বলে ১২ রান করেছেন লুই। নিজের তৃতীয় ওভার ওই উইকেটটি পাওয়া নাহিদ রানা সব মিলিয়ে করেছেন ৯ ওভার। তাতে তাঁর খরচ ২৮ রান।
মিরাজের ব্যর্থতায় উইকেট নিতে ব্যর্থ তাইজুল বাঁহাতি স্পিনে ১০ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ৭ রান। ১০ ওভারের ৭টিই মেডেন পেয়েছেন তিনি। কিপটে বোলিং করেছেন অধিনায়ক মিরাজও, ৩ ওভারে দিয়েছেন ২ রান। খারাপ করেননি বাংলাদেশের অন্য দুই পেসার হাসান মাহমুদ ও তাসকিন আহমেদও। হাসান ৭ ওভারে ১৬ ও তাসকিন ৮ ওভারে দিয়েছেন ১১ রান।
কিংস্টন টেস্টের দ্বিতীয় দিনে অবশ্য শুধু বাংলাদেশের বোলাররাই কিপটে ছিলেন না। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের বিপক্ষে রান তুলতে পারেননি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরাও। জেইডেন সিলস তো ১৫.৫ ওভারে ৫ রান দিয়েই নিলেন ৪ উইকেট। বাংলাদেশ আজ ৪১.১ ওভারে তুলেছে ৯৫ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩৭ ওভারে ৭০ রান। দু্ই দল মিলে সারাদিনে ৭৮.১ ওভারে রান করেছে মাত্র ১৬৫।
বাংলাদেশ দিনটা শুরু করেছিল ২ উইকেটে ৬৯ রান তুলে। প্রথম দুই সেশনেই ৪টি করে উইকেট হারিয়ে সফরকারিরা অলআউট ১৬৪ রানে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৭১.৫ ওভারে ১৬৪ (মাহমুদুল ৩, সাদমান ৬৪, মুমিনুল ০, শাহাদাত ২২, লিটন ১, জাকের ১, মিরাজ ৩৬, তাইজুল ১৬, তাসকিন ৮, হাসান ৫*, রানা ০; রোচ ২/৪৫, সিলস ৪/৫, শামার ৩/৪৯, আলজারি ১/২৯, গ্রিভস ০/১৪, হজ ০/১৪, ব্রাফেট ০/১)। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ৩৭ ওভারে ৭০/১ (ব্রাফেট ৩৩*, লুই ১২, কার্টি ১৯*; হাসান ০/১৬, তাসকিন ০/১১, রানা ১/২৮, তাইজুল ০/৭, মিরাজ ০/২)। (দ্বিতীয় দিন শেষে)
prothom alo