দেশের বেশির ভাগ ব্যাংকেরই আয় সেভাবে বাড়েনি। যদিও ব্যয় বেড়েছে ব্যাপক মাত্রায়। এর প্রভাব পড়েছে ব্যাংকগুলোর কস্ট টু ইনকাম রেশিও বা আয়-ব্যয় অনুপাতে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ‘বাংলাদেশ সিস্টেম্যাটিক রিস্ক ড্যাশবোর্ড’ শীর্ষক প্রকাশনার সর্বশেষ সংখ্যার তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের জুন শেষে দেশের ব্যাংক খাতের আয়-ব্যয়ের অনুপাত ছিল ৭১ শতাংশ। বিষয়টি উদ্বিগ্ন করে তুলছে ব্যাংক খাতসংশ্লিষ্টদের। তারা বলছেন, ব্যাংক খাতের গুরুত্বপূর্ণ এ সূচকে এর আগে কখনই এতটা বেশি নাজুক পরিস্থিতি দেখা যায়নি। ২০২২ সালের জুনেও এ অনুপাত ৫৭ শতাংশে সীমাবদ্ধ ছিল। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে ব্যাংকগুলোকে ব্যয় কমানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও পরিসংখ্যানে এর কোনো প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না।
ব্যাংকগুলোকে ব্যয় কমানোর নির্দেশনা দিয়ে ২০২২ সালের ২৬ ও ২৭ জুলাই পৃথক দৃটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে একটি প্রজ্ঞাপনে জ্বালানি ব্যয় ১০ শতাংশ ও বিদ্যুৎ ব্যয় ২৫ শতাংশ কমিয়ে আনার নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। অন্য প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ২০২২ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত ব্যাংকের জন্য কোনো ধরনের গাড়ি কেনা যাবে না। আর জরুরি ও অপরিহার্য ক্ষেত্র বিবেচনায় আপ্যায়ন, ভ্রমণ, কম্পিউটার ও আনুষঙ্গিক, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম, আসবাব ও অন্যান্য মনিহারি খাতে বরাদ্দ করা অর্থের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ব্যয় করা যাবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ নির্দেশনা সত্ত্বেও এ সময় ব্যাংকগুলোর আয়-ব্যয় অনুপাত ব্যাপক মাত্রায় বেড়েছে, যা অস্বাভাবিক বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
একটি ব্যাংকের প্রতি ১০০ টাকা আয়ের জন্য কত ব্যয় করতে হয়, সেটিকেই আয়-ব্যয় অনুপাতের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, দেশের ব্যাংকগুলোর প্রতি ১০০ টাকা আয়ের বিপরীতে ৭১ টাকা ব্যয় হচ্ছে। এক্ষেত্রে পরিচালন মুনাফা হিসাবে থাকছে মাত্র ২৯ টাকা। এ মুনাফার বিপরীতে আবার ৩৭ দশমিক ৫০ থেকে ৪০ শতাংশ পরিশোধ করতে হয় সরকারের কর হিসাবে। এছাড়া রয়েছে খেলাপি ঋণের বিপরীতে সঞ্চিতি সংরক্ষণের চাপ। ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় অর্থ হলো ব্যাংকগুলো বড় অংকের পরিচালন আয় করেও নিট মুনাফা ঘরে তুলতে না পারা। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী কোনো ব্যাংকের আয়-ব্যয় অনুপাত ৪০ শতাংশের নিচে হলে সেটিকে সন্তোষজনক হিসেবে ধরা হয়।
আয়-ব্যয় অনুপাত বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি গত বছর ব্যাংক খাতের ইকুইটির বিপরীতে আয় (আরওই) ও সম্পদের বিপরীতে আয় (আরওএ) কমে গেছে। একই সময়ে ব্যাংকের মোট পরিচালন আয়ের মধ্যে সুদ খাতের অবদানও কমেছে। ব্যাংকের ঋণ ও আমানতের সুদহারের ব্যবধান (স্প্রেড) কমে যাওয়ার পাশাপাশি বিতরণকৃত ঋণ থেকে আদায় পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ এসব সূচকের অবনতি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
ব্যাংক নির্বাহীরা বলছেন, গত বছরের মাঝামাঝি থেকে দেশের ব্যাংকগুলোয় তারল্য সংকট শুরু হয়। সংকট কাটাতে উচ্চ সুদে আমানত সংগ্রহ করেছে বেশির ভাগ ব্যাংক। এ কারণে দেশের প্রায় সব ব্যাংকেরই তহবিল সংগ্রহ ব্যয় বেড়ে গেছে। ডলার সংগ্রহ করতে গিয়ে ব্যাংকগুলো ঘোষিত দরের চেয়ে অনেক বেশি অর্থ ব্যয় করেছে। আমদানি কমে যাওয়ার পাশাপাশি গত বছর রফতানি ও রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি ছিল বেশ শ্লথ। বিতরণকৃত ঋণের আদায় পরিস্থিতিও সন্তোষজনক ছিল না। বিপরীতে ব্যাংকের কর্মীদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধির পাশাপাশি অন্যান্য ব্যয় বেড়েছে। সব ধরনের ব্যয় বেড়ে যাওয়ার প্রভাবেই ব্যাংক খাতের আয়-ব্যয় অনুপাত এতটা খারাপ পরিস্থিতিতে পড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে দেশের ব্যাংক খাতে আয়-ব্যয়ের অনুপাত ছিল ৫২ শতাংশ। অর্থাৎ ওই সময় ব্যাংকগুলো ১০০ টাকা আয় করলে গড়ে ৪৮ টাকা পরিচালন মুনাফায় নেয়া যেত। এরপর থেকে এ অনুপাত বাড়ছে। ২০১৯ সাল শেষে আয়-ব্যয় অনুপাত ৫৩ শতাংশ, ২০২০ সাল শেষে ৫৫ শতাংশ এবং ২০২১ সাল শেষে ৫৬ শতাংশে উন্নীত হয়। ২০২২ সালের জুনে আয়-ব্যয়ের অনুপাত ৫৭ শতাংশ থাকলেও বছর শেষে সেটি ৬১ শতাংশে গিয়ে ঠেকে। তবে ব্যয়ের দিক থেকে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যায় ২০২৩ সালের প্রথমার্ধে। গত বছরের জুনে এসে ব্যাংকগুলোর আয়-ব্যয়ের অনুপাত অস্বাভাবিক বেড়ে ৭১ শতাংশ পর্যন্ত ওঠে।
সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসরুর আরেফিন বণিক বার্তাকে জানান, ‘আয় অনেক কমে গেলেও আমরা ব্যাংকের ব্যয় কমাতে পারিনি। উল্টো ব্যয় অনেক বেড়ে গেছে। মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করতে গিয়ে কর্মীদের ১০ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্ট দিতে হয়েছে। বাড়ি ভাড়াসহ অন্যান্য খাতের ব্যয়ও বেড়েছে।’
ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) ভাইস চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালন করা এ শীর্ষ নির্বাহী বলেন, ‘ব্যাংকের আয়ের প্রধান উৎস হলো প্রাপ্ত সুদ। স্প্রেড বেশি হলে সুদ আয় ভালো হয়। তারল্য সংকটের কারণে গত বছর ব্যাংকের আমানত সংগ্রহ ব্যয় বেড়ে গেছে। একই হারে ঋণের সুদহার বাড়ানো সম্ভব হয়নি। এ কারণে স্প্রেড অনেক কমে গেছে। এতে সুদ খাতের আয়েও বড় পতন হয়েছে। আমদানি কমে যাওয়ায় ব্যাংকের কমিশন আয় কম হচ্ছে। রফতানি ও রেমিট্যান্সের কমিশন আয়ও সন্তোষজনক নয়। অনেক ঋণের সুদ আয় সাসপেন্ড অ্যাকাউন্টে চলে গেছে। এসব কারণে ব্যাংক খাতের অবয়ব ও ব্যবসার পরিধি বড় হলেও মুনাফা বাড়ছে না।’
যেকোনো দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ক্যামেলস রেটিংয়ের মাধ্যমে ব্যাংকের সার্বিক শক্তিমত্তা নিরূপণ করে। ক্যামেলস রেটিং অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি নির্দেশক হচ্ছে ব্যবস্থাপনা দক্ষতা। আর ব্যবস্থাপনা দক্ষতা নিরূপণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আয়-ব্যয়ের অনুপাত। বৈশ্বিক মান অনুসারে, আয়-ব্যয় অনুপাত ২৫ শতাংশ বা এর কম হলে সেটি প্রথম অবস্থানে থাকবে। ২৬ থেকে ৩০ শতাংশ হলে দ্বিতীয় অবস্থানে, ৩১ থেকে ৩৮ শতাংশে হলে সেটি তৃতীয় অবস্থানে, ৩৯ থেকে ৪৫ শতাংশ হলে সেটি চতুর্থ অবস্থানে এবং ৪৫ শতাংশ বা তার বেশি হলে সেটি থাকবে পঞ্চম বা একেবারে শেষ অবস্থানে।
যদিও বাংলাদেশের বেশির ভাগ সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকেরই আয়-ব্যয় অনুপাত পরিস্থিতি খুবই খারাপ। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে এ অনুপাত প্রায় ৯০ শতাংশ। অর্থাৎ ব্যাংকগুলোর ১০০ টাকা আয় করতে করতে ৯০ টাকাই ব্যয় হয়ে যায়। এর মধ্যে বেসিক ব্যাংকসহ সরকারি বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো মুনাফা না করে উল্টো লোকসান দিয়ে যাচ্ছে। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে ১০-১২টির আয়-ব্যয় অনুপাত ৫০ শতাংশের মধ্যে রয়েছে। বাকি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে এ অনুপাত ৬০-৮০ শতাংশ।
দেশের বেশির ভাগ ব্যাংকের আয়-ব্যয় অনুপাত অস্বাভাবিক বলে মনে করছেন ব্যাংকার ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষক ফারুক মঈনউদ্দীন। তার ভাষ্যমতে, কিছু ব্যাংক বিদেশী ব্যাংক থেকে ব্যাংকারদের উচ্চ বেতন দিয়ে নিয়ে আসে। এ কারণে এসব ব্যাংকের বেতন-ভাতা বাবদ ব্যয় অনেক বেশি। আবার কিছু ব্যাংকের ভবন ভাড়াসহ আনুষঙ্গিক ব্যয় দেশের আর্থসামাজিক পরিস্থিতির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। অনেক ক্ষেত্রে পরিচালকদের ভবন বেশি ভাড়ায় ব্যাংকের কাছে ভাড়া দেয়া হয়। এসব কারণে ব্যাংকের ব্যয় অনেক বেড়ে যায়।
ট্রাস্ট ব্যাংকের সাবেক এ ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘যেসব ব্যাংকের করপোরেট সুশাসন আছে সেগুলোর আয়-ব্যয় অনুপাত অনেক কম। তার মনে ব্যাংকের ব্যয়ের ক্ষেত্রেও সুশাসনের যথেষ্ট ঘাটতি আছে। সামগ্রিকভাবে ব্যাংক খাতের আয়-ব্যয় অনুপাত ৭১ শতাংশে উঠে যাওয়ার কথা অতীতে শুনিনি। খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়াসহ সুশাসনের ঘাটতি তীব্র হওয়ার কারণেই এমনটি হয়েছে।’
প্রত্যাশা অনুযায়ী আয় করতে না পারায় দেশের ব্যাংকগুলোর ইকুইটির বিপরীতে আয় কমে যাচ্ছে। ২০২৩ সালের জুনে ব্যাংকগুলোর গড় আরওই ছিল ৭ শতাংশের ঘরে। ২০২২ সালের জুনে আরওই ৮ শতাংশের বেশি ছিল। একইভাবে ব্যাংকগুলোর সম্পদের বিপরীতে আয়ও কমে যাচ্ছে। গত জুন শেষে ব্যাংক খাতের গড় আরওএ ছিল শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে গড় আরওএ দশমিক ৬ শতাংশের বেশি ছিল।
বিতরণকৃত ঋণ আদায় না হওয়ায় ব্যাংকগুলোর পরিচালন আয়ের মধ্যে সুদ খাতের অবদানও এখন ধারাবাহিকভাবে কমছে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ব্যাংকগুলোর মোট পরিচালন আয়ের ৫০ শতাংশই এসেছিল সুদ খাত থেকে। কিন্তু টানা কমে ২০২৩ সালের জুনে তা ৩৬ শতাংশে নেমে এসেছে। এ সুদ খাতের আয়কেই ব্যাংকের আয়ের প্রধান উৎস মনে করা হয়। কিন্তু এটি কমতে থাকায় দেশের ব্যাংকগুলো বৈদেশিক বাণিজ্যের কমিশনসহ অন্যান্য খাতের ওপর নির্ভরশীল হয়ে উঠেছে।
দেশের একাধিক ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহী জানান, ২০২৩ সালের জুনের পর থেকে ব্যাংক খাতে তারল্যের সংকট আরো তীব্র হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকও নীতি সুদহার (রেপো রেট) ৫ থেকে বাড়িয়ে এখন ৮ শতাংশে উন্নীত করেছে। দেশের প্রথম সারির বেসরকারি ব্যাংকও এখন ১১-১৩ শতাংশ সুদেও আমানত সংগ্রহ করছে। সে হিসেবে বর্তমানে ব্যাংকগুলোর আয়-ব্যয় অনুপাত আরো বেড়েছে।
তবে নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে দেশের দ্বিতীয় প্রজন্মের একটি বেসরকারি ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহী বলেন, ‘বেসরকারি ব্যাংকগুলোয় চাকরি করা কর্মীদের বেশির ভাগই পরিচালকদের আত্মীয়-স্বজন। কেউ কেউ অর্থের বিনিময়ে ব্যাংকে চাকরি পেয়েছেন। এ কারণে অযোগ্য হওয়া সত্ত্বেও পরিচালকদের পক্ষ থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর চাপ থাকে। এ শ্রেণীর কর্মীরা ব্যাংকের অর্থের অপচয়ও বেশি করেন। এসব কারণে অনেক ব্যাংকের আয়-ব্যয় অনুপাত বেড়েই চলছে।’
শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোসলেহ্ উদ্দীন আহমেদ বণিক বার্তাকে বলেন, ‘ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়ে যাচ্ছে। ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের পরিমাণও অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন নীতিমালা তৈরি করে ব্যাংকে সুশাসন ফেরানোর তাগিদ দিচ্ছে। সঞ্চিতি সংরক্ষণের হার বাড়ানোর পাশাপাশি খেলাপি ঋণ গণনার মেয়াদও আন্তর্জাতিক মনদণ্ডে উন্নীত করতে যাচ্ছে। এসব কারণে ব্যাংকের প্রকৃত মুনাফা বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না।’
মোসলেহ্ উদ্দীন আহমেদ জানান, ‘শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের আয়-ব্যয় অনুপাত ৪১ শতাংশে সীমাবদ্ধ থাকলেও দেশের অনেক ব্যাংকে এ অনুপাত অস্বাভাবিক বেশি। ওই ব্যাংকগুলোর ব্যয় কমানোর দিকে নজর দেয়া দরকার। অন্যথায় ভবিষ্যতে ব্যাংক খাতের সামগ্রিক পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে।’
দেশের ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা দক্ষতা মোটেই সন্তোষজনক নয় বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘ব্যাংকগুলো সাজসজ্জায় বিপুল অপব্যয় করে। অনেক ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ও শাখায় গেলে মনে হয় রাজপ্রাসাদ। বিভিন্ন ধরনের অপব্যয়ের মাধ্যমে ব্যাংকগুলো আয়ের বড় অংশই ব্যয় করে ফেলে। এর প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ে ব্যাংকের গ্রাহক ও বিনিয়োগকারীদের ওপর।’
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ব্যাংকগুলো আয় বাড়ানোর জন্য গ্রাহকদের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের অযাচিত ফি আরোপ করছে। আমানতকারীদের সর্বনিম্ন সুদ দিয়ে বঞ্চিত করার পাশাপাশি ঋণগ্রহীতাদের কাছ থেকে বেশি সুদ আদায় করছে। ১০০ টাকা আয় করতে গিয়ে যদি ৭১ টাকাই ব্যয় হয়ে যায়, তাহলে বুঝতে হবে ব্যবস্থাপনায় বড় ত্রুটি আছে। দেশের ব্যাংকগুলোর ক্যামেলস রেটিংয়ে উন্নতির জন্য ম্যানেজমেন্ট এফিশিয়েন্সি বাড়াতে হবে।’
Bonikbarta