বোল্ড হলেও কোহলি কেন আউট হলেন না?

  • নয়া দিগন্ত অনলাইন
  •  ২৩ অক্টোবর ২০২২, ২১:৫৭
ম্যাচ শেষে জয়ের উল্লাসে ভারতীয় ক্রিকেটারেরা। – ছবি : সংগৃহীত

ভারত-পাকিস্তানের খেলা মানেই দর্শকদের মাঝে বাড়তি উত্তেজনা। সেই উত্তেজনা আরো বহুগুণ বেড়ে যায়, মাঠের কিছু সিদ্ধান্তের ফলে। এমন-ই এক সিদ্ধান্ত ছিল আজকের ম্যাচে। খেলার শেষ ওভারে বোল্ড হয়ে যান ভিরাট কোহলি। কিন্তু আউট হননি তিনি। যার ফলে উঠেছে সমালোচনার ঝড়।

রোববার অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে টি-টোয়ান্টি বিশ্বকাপ-২০২২-এর ১৬তম ম্যাচে মাঠে নামে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত-পাকিস্তান।

ম্যাচের শেষ ওভারে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জয়ের জন্য ১৬ রান দরকার ছিল ভারতের। চতুর্থ বলটি উচ্চতার কারণে ‘নো বল’ হয়। স্বভাবতই পরের বলটি ফ্রি-হিট দেয়া হয়। কিন্তু ফ্রি-হিটে বোল্ড হয়ে যান বিরাট কোহলি। দৌড়ে তিন রান নিয়ে নেন বিরাট ও দীনেশ কার্তিক। তা নিয়েই তুমুল প্রতিবাদ শুরু করেন পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা।

বোল্ড হওয়া বলে রান নেয়া নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। ‘ওটা ডেড বল ছিল’- ভারতের বিরুদ্ধে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে হারের এমনই দাবি করতে শুরু করলেন পাকিস্তানের নেটিজেনদের একাংশ। যদিও আইসিসির নিয়ম থেকে স্পষ্ট যে আম্পায়াররা কোনো ভুল সিদ্ধান্ত নেননি। শুধু তাই নয়, কয়েকদিন আগেও অস্ট্রেলিয়ায় একই ঘটনা হয়েছিল। তাতে ফ্রি-হিটে বোল্ড হয়েও চার মিলেছিল।

ফ্রি-হিটে যদি বল স্টাম্পে লাগে, তাহলে কি হবে? তা নিয়ে সরাসরি আইসিসির নিয়মে কিছু বলা নেই। তবে ফ্রি-হিট এবং ডেড বলের নিয়ম দেখলেই পুরো বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যাবে।

প্রথমত, আইসিসির ২১.১৯.২ ধারা অনুযায়ী, নো বলে কোনো ব্যাটার যেভাবে আউট হতে পারেন, শুধুমাত্র সেভাবেই ফ্রি-হিটে কোনো ব্যাটার আউট হতে পারেন। (অর্থাৎ শুধুমাত্র রান-আউট হতে পারেন)।

দ্বিতীয়ত, আইসিসির ২০.১.১.৩ ধারা অনুযায়ী, ব্যাটার আউট হয়ে গেলে ডেড বল ঘোষণা করা হবে। যে মুহূর্তে ব্যাটার আউট হবেন, তখন থেকেই বল ডেড বলে বিবেচিত হবে।

অর্থাৎ আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, ব্যাটার আউট হলে তবেই সেই ডেড বল বলে হিসেবে বিবেচিত হবে। কিন্তু ফ্রি-হিটে বোল্ড হওয়ার ঘটনাকে ‘আউট’ হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। তাই বলটি ‘ডেড বল’ হওয়ার প্রশ্নই উঠছে না। সেই পরিস্থিতিতে রান নেয়া ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই। বলটা তখনই ‘ডেড’ হত, যখন বোলার বা উইকেটকিপারের হাতে এসে পৌঁছাত (আইসিসির ২০.১.১.৩ ধারা অনুযায়ী,যখন উইকেটকিপার বা বোলারের হাতে এসে পৌঁছায় বল, তখন সেটি ডেড হয়)।

ফ্রি-হিটে বোল্ড হয়ে যাওয়া বিরাট কোহলি দৌড়ে তিন রান নিয়ে নেন। তা নিয়েই প্রতিবাদ শুরু করেন পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা।

সোশ্যাল মিডিয়ায় একই দাবি করতে থাকেন পাকিস্তানের নেটিজেনরাও। তারা দাবি করতে থাকেন, ‘নো বল ছিল না’, ‘স্টাম্পে বল লাগলে ডেড বল হয়ে যায়’। বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা আইসিসি এবং ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ তোলেন পাকিস্তানিরা। যদিও পালটা ভারতীয় নেটিজেনরা খোঁচা দেন, ‘কান্নাকাটি বন্ধ কর।’

তিনদিন আগেই একই ঘটনা
কাকতলীয় যে অস্ট্রেলিয়ায় ডেড বল নিয়ে এত বিতর্ক হচ্ছে, সেই অস্ট্রেলিয়ার মাটিতেই তিন দিন আগে একই ঘটনা ঘটেছিল। নারীদের বিগ ব্যাশ লিগে (WBBL) মেলবোর্ন স্টারস এবং পার্থ স্কচার্সের ম্যাচে ফ্রি-হিটে বোল্ড হয়েছিলেন ব্যাটার। কিন্তু ফ্রি-হিট হওয়ায় আউট হননি ব্যাটার। বল স্টাম্পে ধাক্কা খেয়ে বাউন্ডারি চলে গিয়েছিল। চার রান যোগ হয়েছিল পার্থের স্কোরের সাথে।