ঢাকা
বোমার আওয়াজ নেই, কিন্তু বোমাবাজির মামলা হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেছেন, কোনো কোনো জায়গায় গায়েবি বোমাও ফোটে! বোঝাও যায় না।
বুধবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন মির্জা আব্বাস। পুলিশের মিথ্যা ও গায়েবি মামলা এবং পুলিশের নির্যাতন ও গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এ সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর বিএনপি।
সমাবেশে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে দেখেছি গায়েবি মামলা। কোথা থেকে মামলা নাজিল হয়, আল্লাহ জানে। এখন দেখছি, নাটুকে মামলা অর্থাৎ নাটক করে প্রথম, মামলা দেয় পরে।’
জনগণ এই সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেন মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, ‘আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশের স্থল নিয়ে নাটক করা হচ্ছে। এই নাটক বাদ দেন। নাটকের কথাবার্তা বাদ দেন।’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘গুলি খেয়ে, মামলা খেয়েও দলের নেতা–কর্মীরা বিএনপির সভায় আসছেন। তাঁরা রাতে বাসায় ঘুমাতে পারেন না। পুলিশ বাড়ি বাড়ি গিয়ে হামলা চালাচ্ছে। ঘুম নেই। আমার প্রশ্ন হলো, আওয়ামী লীগের ভাইয়েরা তো বাসায় থেকেও ঘুমাতে পারছেন না। বাসায় আরামদায়ক বিছানায় ঘুমাতে পারছেন না। কিন্তু কেন? কী কারণে আপনাদের ঘুম হচ্ছে না। ভাবছেন, এই তো ক্ষমতা গেল। বিএনপি জনগণ একসঙ্গে আছে। ঐক্যবদ্ধ আছে। এই জনগণের জোয়ারে ভেসে যাবেন। টের পেয়ে গেছেন।’
সমাবেশে বক্তব্য দেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি অভিযোগ করেন, নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের অনুমতি না দেওয়ার পেছনে সরকারের অশুভ উদ্দেশ্য আছে। তিনি বলেন, নয়াপল্টনেই বিএনপির সমাবেশ হবে। এটাই বিএনপির সিদ্ধান্ত। এখানে সমাবেশ নিয়ে বিএনপি অটল। কারণ, দলের নেতা-কর্মীরা নিরাপদ বোধ করেন নয়াপল্টনের সামনে।
রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, এর আগেও তো নয়াপল্টনে সমাবেশ হয়েছে। এখনো সমাবেশ হচ্ছে। তাহলে ১০ তারিখে দিতে সমস্যা কোথায়?
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির বলেন, গায়েবি মামলা দিয়ে সরকারের শেষ রক্ষা হবে না। ১০ তারিখে জনগণ শেখ হাসিনাকে লাল কার্ড দেখাবে।
সমাবেশে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম বলেন, ‘১০ তারিখ সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে করতে চাই। আমাদের অন্য দিকে ঠেলে দেবেন না। নিজেরা বোমা ফুটান আর বোমার মামলা দেন। নিজেরা গাড়ি জ্বালিয়ে দেন আর বলেন আগুন–সন্ত্রাস। ধৈর্যের একটা সীমা আছে। ধৈর্যের বাঁধ যাতে না ভাঙে।’
এ সময় সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ অভিযোগ করে বলেন, ‘বাড়ি বাড়ি পুলিশ যাচ্ছে, আন্দোলন বন্ধ করার জন্য। শেখ হাসিনা মনে করেছেন, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো দমননীতি চালিয়ে ২০২৩ সালে আরেকটি নির্বাচন করবেন। আমাদের সভা সমাবেশ করতে দেবেন না।’
গায়েবি মামলা ও গ্রেপ্তার বন্ধের আহ্বান জানিয়ে আমান উল্লাহ দলের নেতা–কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘যাঁরা গ্রেপ্তার করতে যাবেন, তাঁদের ঘেরাও করবেন। কাউকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যেতে দেবেন না।’
সমাবেশ সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুল হক ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব রফিকুল আলম। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম।