বেডরুমেও কেউ নিরাপদ না : নুর

  • অনলাইন প্রতিবেদক
  •  ১৭ ডিসেম্বর ২০২২, ২০:৩৮, আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২২, ২১:১৩
বেডরুমেও কেউ নিরাপদ না : নুর – ছবি : নয়া দিগন্ত

সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকতে বেপরোয়া উন্মাদের মতো আচরণ করছে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। তিনি বলেন, জনগণ যদি এদেরকে প্রতিহত করতে না পারে, জনগণ যদি এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে না পারে, তাহলে বেডরুমেও কেউ নিরাপদ না।

শনিবার বিকেল ৩টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গণঅধিকার পরিষদের বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। গতকাল ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের শ্রদ্ধা নিবেদন কর্মসূচিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের ওপর আওয়ামী সন্ত্রাসীদের বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

দলটির সদস্য সচিব নুরুল হক নুর আরো বলেন, সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকতে বেপরোয়া উন্মাদের মতো আচরণ করছে। এই সরকারের হাতে দেশের কিংবা বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশীরা কেউ নিরাপদ নয়। এতো দিন এইদেশে বিরোধী মতের মানুষের ওপর হামলা-মামলা হত, গুম করা হতো। এই সরকারের মন্ত্রীদের পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে ওঠা মায়ের কান্না নামক সংগঠনের লোক ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা, বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী, বাংলাদেশের গণতন্ত্র, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও মানবাধিকার সুরক্ষায় কাজ করা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের ওপর হামলা করে কয়েকদিন আগে, এর আগেও ২০১৮ সালে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বার্নিকাটের ওপর হামলা করে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতারা।

আওয়ামী লীগ তাদের র‍্যালির নামে সারা ঢাকা দখলে নিয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, রাস্তাঘাটে মানুষের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ১০ ডিসেম্বর বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে সরকার কতটা বেপরোয়া হয়েছে, পাড়া, মহল্লায় গুণ্ডা, মাস্তান ও সন্ত্রাসীদের টহল দিয়েছে, যাতে সমাবেশে কেউ যোগ না দিতে পারে। এমনি তারা মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা লঙ্ঘন করে মানুষে মোবাইলের গ্যালারিতে থাকা ছবিও চেক করেছে। আমরা আজকে জনগণকে সতর্ক করে দিয়ে বলতে চাই, আওয়ামী লীগ ও তার উচ্ছিষ্ট ভোগীরা অবৈধভাবে ক্ষমতায় দখল করার জন্য যেভাবে বেপরোয়া উন্মাদে পরিণত হয়েছে। জনগণ যদি এদেরকে প্রতিহত করতে না পারে, জনগণ যদি এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে না পারে, তাহলে কেউ বেডরুমেও নিরাপদ না।

তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনিকে বেডরুমে ঢুকে হত্যা করেছিলো, সেই হত্যার প্রতিবেদন জমা দেয়ার তারিখ ৯৩ বার পিছিয়েছে কিন্তু প্রতিবেদন জমা হয়নি। বুয়েটের মেধাবী ছাত্র ফারদিন হত্যা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নাটক সাজাচ্ছে। একবার বলছে আসামিরা চিহ্নিত, শীঘ্রই একশনে যাবো। আবার বলছে ফারদিন আত্মহত্যা করেছে। যেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী একেক সময় একেক কথা বলে তাদের ওপর আমাদের কোনো আস্থা নেই। প্রশাসনে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের লোকদের নিয়োগ দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দলীয় বাহিনীতে পরিণত করেছে। আর সামরিক বাহিনীর মেরুদণ্ড তো ভেঙ্গে দিয়েছে ২০০৯ সালে। এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিডিআর বিদ্রোহের নামে মেধাবী ও চৌকস অফিসারদের হত্যার মধ্য দিয়ে সামরিক বাহিনীর মাজা ভেঙ্গে দিয়েছে।

নুর আরো বলেন, গণঅধিকার পরিষদ সারাদেশে যখন সুসংগঠিত হচ্ছে, যখন দেশের মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য লড়াই করছে, যখন যুগপৎ আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে তখন সারাদেশে আমাদের নেতাকর্মীদের ভয় দেখাচ্ছে। বিজয় দিবসেও আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা দেশের বিভিন্ন স্থানে গণঅধিকার পরিষদের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করছে। সরকার আন্দোলনকে ভয় পেয়ে বিএনপির অফিসে পরিকল্পিত বোমার নাটক সাজিয়ে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের আটক করেছে। জামায়ত যুগপৎ আন্দোলনের ঘোষণা দেয়ার পর তাদের আমিরকে আটক করেছে, আর এখন পুলিশ বলছে জামায়তের আমির নাকি জঙ্গিবাদের সাথে জড়িত।

বিক্ষোভ সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান, মাহফুজুর রহমান ফারুক হাসান, সোহরাব হোসন, আবু হানিফ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. মালেক ফরাজী, সাদ্দাম হোসন, শাকিলউজ্জামান, যুগ্ম সদস্য সচিব তারেক রহমান, ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদিব, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন, সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা সম্পদ, পেশাজীবী অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ডাক্তার জাফর প্রমুখ।