বেচাকেনার হাটের মতো দলকে নির্বাচনে আনা হচ্ছে: ইসলামী আন্দোলন

আগামী ৭ জানুয়ারি পাতানোর নির্বাচনে সহযোগিতা করা থেকে এবং ভোটদান থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানি বলেছেন, বেচাকেনার হাটের মতো প্রার্থী ও দলকে নির্বাচনে আনা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের রাশেদ খান মেনন ও হাসানুল হক ইনু খুব পেরেশানিতে আছেন তাদের সিট কনফার্ম না পেয়ে। এসময় আগামী ১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় পতাকা র‌্যালী কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি।

শুক্রবার বাদ জুমা বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগরের উদ্যোগে ‘বিতর্কিত নির্বাচন কমিশন কর্তৃক একতরফা নির্বাচনী তফসিল বাতিল, সকল রাজবন্দীদের মুক্তি, বর্তমান সংসদ ভেঙে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে’ বিক্ষোভ পূর্ব সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। সমাবেশ শেষে একটি বিশাল মিছিল বায়তুল মোকাররম উত্তর গেট থেকে শুরু হয়ে পল্টন মোড়, বিজয়নগর পানির ট্রাংকি হয়ে পুনরায় বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে গিয়ে শেষ হয়।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানি বলেন, বিরোধী দলবিহীন প্রহসনের নির্বাচন দেশবাসী রুখে দেবে। সুতরাং অবৈধ সংসদ ভেঙে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় দেশের জনগণ যেভাবে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠছে, তাতে সরকারের আখের রক্ষা হবে না।

তিনি বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগ জনসমর্থন হারিয়ে দেউলিয়া হয়ে পরেছে। সরকার দল প্রশাসন নিভার হয়ে পরছে। জনগণের সঙ্গে তাদের কোন সম্পর্ক নেই। সরকার দেশকে ধ্বংস করে দিয়েছে। দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রচন্ড বিরোধীতা এবং আন্তর্জাতিক মহলের মতামতকে উপেক্ষা করে সরকার একতরফা প্রহসনের নির্বাচন করার অপরিণামদর্শী খেলায় মেতে উঠেছে।

জনগণের রায়ের বিরুদ্ধে গিয়ে নির্বাচন করলে এটা দেশবাসী মানবে না। প্রহসনের নির্বাচনের আয়োজন থেকে সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে ফিরে আসতে হবে।

জাতীয় পার্টি ও তৃণমূল বিএনপি প্রসঙ্গে মাদানি বলেন, জাতীয় পার্টিকে গৃহপালিত বিরোধী দল বানিয়েছে। জাতীয় পার্টি জাতির জন্য একটা বিষফোঁড়া। ২০১৪ সালে আবার ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের সঙ্গে নির্বাচন করে বৈধতা দিয়েছে। ওরা অংশীদার, মন্ত্রী হয়, তারা বিরোধী দল হয় কীভাবে? এটা তো ধোঁকাবাজি। আর তৃণমূল বিএনপি আওয়ামী লীগের তল্পিবাহক। টাকা ও সিট  ছেড়ে দিয়ে আওয়ামী লীগ তাদের নিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ইসলামী আন্দোলন মানুষের সঙ্গে আছে, প্রয়োজনে রক্ত দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার উৎখাত করবে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল বাতিল করতে হবে। সবার সঙ্গে আলোচনা করে স্বচ্ছ নির্বাচন করতে হবে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মত নির্বাচন আমরা চাই না। ৭ জানুয়ারির নির্বাচন থেকে সরকারকে ব্যাক করানোর জন্য ইসলামী আন্দোলন রাজপথে নেমেছে। সরকারকে বলবো ফিরে আসুন। আগামীতে যে রক্তপাত, গৃহযুদ্ধ হবে এর দায়-দায়িত্ব আওয়ামী লীগ সরকারকে নিতে হবে। ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি প্রিন্সিপাল মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদের

সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কেএম আতিকুর রহমান, প্রচার ও দাওয়াহ সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মাওলানা মোহাম্মদ নেছার উদ্দিন, মাওলানা আরিফুল ইসলাম, মাওলানা নূরুল ইসলাম নাঈম, ডা. শহিদুল ইসলাম, নুরুজ্জামান সরকার।