‘বৃহস্পতিবারের মহাসমাবেশ রুখে দিতে সরকার নতুন চক্রান্ত করছে’

মঙ্গলবার জুলাই ২৫, ২০২৩ ০৯:২৩ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: মঙ্গলবার জুলাই ২৫, ২০২৩ ০৯:২৩ অপরাহ্ন

আইনজীবীদের এক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

বৃহস্পতিবারের মহাসমাবেশ রুখে দিতে সরকার নতুন চক্রান্ত করছে অভিযোগ করে এর বিরুদ্ধে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে আইনজীবীদের এক আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের জবাবে বিএনপি মহাসচিব এই হুশিয়ারি দেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বাংলাদেশের এই যে রাজনৈতিক আন্দোলন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের যে আন্দোলন, মানুষের যে উত্থান, এটাকে রুখে দেওয়ার জন্য তারা (সরকার) একটা নতুন চক্রান্ত শুরু করেছে। ওবায়দুল কাদের একটি সভায় বলেছেন যে, বিএনপি বাংলাদেশে অরাজকতা সৃষ্টি করার জন্য সীমান্তে অস্ত্র জড়ো করছে।’

‘কী ভয়ংকর কথা। কোন সময়ে? যখন জনগণ জেগে উঠছে, যখন জনগণ তাদের চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু করেছে তাদের অধিকার আদায়ের জন্য, ঠিক সেই সময়ে এই কথা বলে তারা নতুন একটা চক্রান্ত, একটা ষড়যন্ত্র শুরু করার পায়তারা করছে। আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, এই সমস্ত কথা বলে আপনারা যদি আবার জনগণের ওপর অস্ত্র ব্যবহার করেন, তার সমস্ত দায়-দায়িত্ব আপনাদের বহন করতে হবে এবং জনগণ তার উত্তর দেবে’, বলেন তিনি।

সরকারের প্রতি হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা ২৭ জুলাই যে মহাসমাবেশ ডেকেছি, সেই মহাসমাবেশ হবে শান্তিপূর্ণ। কোনো চক্রান্ত করে, কোনো ষড়যন্ত্র করে, কোনো সহিংসতা করে এই মহাসমাবেশকে নস্যাৎ করা যাবে না।’

‘আমি আহ্বান জানাতে চাই কর্তৃপক্ষের কাছে, আমাদের শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করার সমস্ত ব্যবস্থা আপনারা করবেন। অন্যথায় সব দায়-দায়িত্ব সরকারকে, কর্তৃপক্ষকে এবং যারা দায়িত্বে আছেন তাদের বহন করতে হবে’, বলেন তিনি।

গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আইনজীবীদের শরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের ওপর যে পবিত্র দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে, এই দেশ ও দেশমাতৃকা আমাদের দায়িত্ব দিয়েছে যে, বাংলাদেশের জনগণকে মুক্ত করতে হবে, বাংলাদেশের মানুষকে আবারও স্বাধীনতা যুদ্ধের মতো আরেকটা যুদ্ধ করতে হবে, সেই যুদ্ধের মধ্য দিয়ে জনগণের একটা কল্যাণমূলক রাষ্ট্র নির্মাণ করতে হবে। আসুন সেই লক্ষ্যে আমরা সবাই সামনের দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ি।’

দেশের বিচার ব্যবস্থায় দলীয়করণসহ সরকারের কর্তৃত্ববাদী শাসনের চিত্রও এসময় তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।

রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ ইউনাইটেড লইয়ার্স ফ্রন্টের উদ্যোগে ‘গণতন্ত্র, আইনের শাসন, মানবাধিকার এবং ভোটাধিকার পুণঃপ্রতিষ্ঠা ও স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা’ শীর্ষক এই সমাবেশ হয়।

ইউনাইটেড লইয়ার্স ফ্রন্টের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনের সভাপতিত্বে এবং সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম সজল ও সৈয়দ মামুন মাহবুবের যৌথ সঞ্চালনায় সমাবেশে জেএসডির সভাপতি আসম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম, গণফোরামের অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, পিপলস পার্টির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ ও সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের এ জেড এম জাহিদ হোসেন বক্তব্য রাখেন।

এ ছাড়াও, সমাবেশে ইউনাইটেড লইয়ার্স ফ্রন্টের অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, মহসিন রশিদ, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, জসিম উদ্দিন সরকার, শাহ আহমেদ বাদল, আবদুল জাব্বার ভুঁইয়া, রুহুল কুদ্দুস কাজল, মহসিন মিয়া, খোরশেদ আলম, মোহাম্মদ আলী, ওমর ফারুক ফারুকী ও আবদুল লতিফ তালুকদার প্রমুখ আইনজীবীরা বক্তব্য দেন।