বৃষ্টিভাগ্যে আশা জিইয়ে রইল পাকিস্তানের

একেই বুঝি বলে কপাল! নিউজিল্যান্ড ৪০১ রান করেও ম্যাচটা হারল ২১ রানে। কী অদ্ভুত তাই না! হ্যাঁ, অদ্ভুত মনে হলেও এটাই নিয়ম, এটাই নিয়তি। যার পূর্ণ সুবিধা নিয়ে সেমির আশা বাঁচিয়ে রাখল পাকিস্তান।

বেঙ্গালুরুতে শনিবার আগে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ৪০১ রান করে নিউজিল্যান্ড। এমন রানের পাহাড় সামনে রেখে পাকিস্তানের শুরুটাও মন্দ হয়নি। কিন্তু বৃষ্টি এসে সব হিসাব এলোমেলো করে দেয়। প্রথম দফায় একটা টার্গেট দেওয়া হয় পাকিস্তানকে। জিততে হলে করতে হবে ৪১ ওভারে ৩৪২ রান। এমন কঠিন লক্ষ্য মাথায় রেখে যে কোনো দলই তেড়েফুঁড়ে খেলবে। ফখর জামান ও বাবর আজম সেটাই করেছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয় দফার বৃষ্টিতে আর কোনো সমীকরণ টিকল না। কেবল একই ওভারে নিউজিল্যান্ড কত করেছিল আর পাকিস্তান কত করল, সেটার ব্যবধান বের করার পরই দেখা গেল পাকিস্তান এগিয়ে। শেষ পর্যন্ত তারাই ২ পয়েন্ট পেল। আর তাদের জয়ে ভারতের পর দ্বিতীয় দল হিসেবে সেমির টিকিট নিশ্চিত করল দক্ষিণ আফ্রিকাও। পাশাপাশি জমে উঠল শেষ চারের লড়াই। এখন বাকি দুই টিকিটের জন্য নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান যুদ্ধটা চালিয়ে যাবে।

তবে নিউজিল্যান্ড হারলেও দিনটি রাচিন রবীন্দ্রর জন্য ছিল স্পেশাল। চলমান বিশ্বকাপে নিজের তৃতীয় সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই ব্যাটিং অলরাউন্ডার। সেই সঙ্গে চোট কাটিয়ে ফেরা কেন উইলিয়ামসনও খেলেছেন দারুণ। ৭৯ বলে ৯৫ রান করেন তিনি। নিউজিল্যান্ডের এমন দিনে পাকিস্তানের মোহাম্মদ ওয়াসিম বল হাতে ঝলক দেখান। ১০ ওভার করে ৬০ রান খরচায় নেন তিনটি উইকেট।

বাকিরা খুব একটা সফলতা পাননি, উল্টো রান দিয়েছেন অনেক।

রবীন্দ্র-উইলিয়ামসনের পর পাকিস্তানের বাবর-ফখর খেলেছেন সতর্ক হাতে। প্রতি বলে বাউন্ডারি কিংবা অহেতুক কিউই বোলারদের চার্জ করেননি তারা। বরং মাথা ঠান্ডা রেখে ধীরে ধীরে রানের গতি বাড়িয়ে দেন। তাতে ওপেনার আবদুল্লাহ শফিক আউট হলেও পাকিস্তান ছিল ঠিক পথে। অধিনায়ক বাবর করেন ৬৬ আর ফখর ১২৬। এই দু’জনের ১৯৪ রানের অপরাজিত জুটিতে হয়েছে বহু রেকর্ডও। এক দিনের ক্রিকেটে পাকিস্তানি ব্যাটার হিসেবে এদিন সবচেয়ে বেশি ১১ ছক্কা হাঁকান ফখর। শুধু তাই নয়, বিশ্বকাপেও পাকিস্তানিদের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৮ ছক্কার মালিক এখন তিনি। রেকর্ড গড়েন বাবরও। বিশ্বকাপে পাকিস্তানিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৯ বার ৫০ প্লাস রান করেছিলেন জাভেদ মিয়াঁদাদ। যেখানে এখন দুইয়ে বাবর। তাঁর হলো আটটি ৫০ প্লাস ইনিংস।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
নিউজিল্যান্ড : ৪০১/৬ (রবীন্দ্র ১০৮, উইলিয়ামসন ৯৫, কনওয়ে ৩৫, মিচেল ২৯, চ্যাপম্যান ৩৯, ফিলিপস ৪১, স্যান্টনার ২৬*; ওয়াসিম ৩/৬০, হাসান ১/৮২, ইফতেখার ১/৫৫, রউফ ১/৮৫)
পাকিস্তান : ২০০/১ (শফিক ৪, ফখর ১২৬*, বাবর ৬৬*; সাউদি ১/২৭)
ফল : বৃষ্টি আইনে পাকিস্তান ২১ রানে জয়ী
ম্যাচসেরা : ফখর জামান।