- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৯ নভেম্বর ২০২২, ২১:২৫
প্রতিটি বিশ্বকাপেই চলে রেকর্ড ভাঙা-গড়ার খেলা। এবারের বিশ্বকাপও তার ব্যতিক্রম হবে না। রেকর্ড তৈরিই হয় ভাঙার জন্য। প্রতি বিশ্বকাপ আসরেই একাধিক রেকর্ড ভাঙা হয়, তৈরি হয় নতুন নতুন রেকর্ড। ভাঙা-গড়ার এই খেলায় এবারের বিশ্বকাপেও ভাঙতে পারে পুরনো কিছু রেকর্ড। যেই রেকর্ডগুলোতে মিশে থাকতে পারে লিওনেল মেসির নাম। চলুন জেনে নিই সে রেকর্ডগুলো কী?
এক. বিশ্বকাপের একাধিক আসরে অংশ নেয়া নিঃসন্দেহে মর্যাদার ব্যাপার। সেই মর্যাদার খুব কাছেই আছেন লিওনেল মেসি। এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপের পাঁচটি আসরে খেলেছেন অ্যান্তোনিও কারভাজল, লোথার ম্যাথিয়াস, রাফায়েল মার্কুয়েজ। এদিকে আর্জেন্টাইন সুপারস্টার লিওনেল মেসি অংশ নিয়েছেন চারটি বিশ্বকাপে। তাই এই বিশ্বকাপে মাঠে নামা মাত্রই মেসির ক্যারিয়ারে যোগ হবে নতুন এই রেকর্ড। তার নামটিও যুক্ত হয়ে যাবে ম্যাথিউস-মার্কুয়েজদের পাশে।
দুই. এবার বিশ্বকাপে খেলতে আসা সব ফুটবলার থেকে মেসি বেশি ম্যাচ খেলেছেন বিশ্বকাপে, ১৯টি। তার ঠিক পেছনেই রয়েছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। তিনি মেসির চেয়ে দুটো ম্যাচ কম খেলেছেন। যদি এবারের বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা পর্তুগালের চেয়েও বেশিদূর পর্যন্ত পৌঁছায় এবং লিওনেল মেসি সবগুলো ম্যাচই খেলেন, তবে স্বাভাবিকভাবেই তিনি চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর থেকে এগিয়ে থেকে রেকর্ড অক্ষত রেখেই এবারের বিশ্বকাপ শেষ করবেন।
তিন. আর্জেন্টিনার হয়ে বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ডটি দিয়েগো ম্যারাডোনার। ম্যারাডোনা বিশ্বকাপে মোট ২১টি ম্যাচ খেলেছেন। এবারের বিশ্বকাপে অন্তত তিনটি ম্যাচ খেললেই ম্যারাডোনাকে ছাড়িয়ে যাবেন মেসি। অর্থাৎ শুধু গ্রুপ পর্বের তিনটি ম্যাচ খেললেই ম্যারাডোনার এ রেকর্ড অনায়াসে ভাঙতে পারবেন তিনি।
চার. শুধু আর্জেন্টিনার হয়ে বেশি কিংবা এই বিশ্বকাপে খেলতে আসা অন্য ফুটলারদের তুলনায় বেশি নয়, মেসির সামনে রয়েছে বিশ্বকাপ ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড তৈরির সুযোগও। তবে সেজন্য অবশ্য আর্জেন্টিনার ফাইনালে পৌঁছানো চাই। আর্জেন্টিনা যদি ফাইনাল খেলে এবং মেসি ৭টি ম্যাচেই খেলেন, তবে তিনি টপকে যাবেন লোথার ম্যাথিউসকে। বিশ্বকাপের ইতিহাসে এখনো পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছেন লোথায় ম্যাথিউস, জার্মানির জার্সিতে ২৫টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি।
পাচ. বিশ্বকাপে এখনো পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ম্যাচ জিতেছেন মিরোস্লাভ ক্লোসা। তিনি বিশ্বকাপে মোট ১৭টি ম্যাচ জিতেছেন জার্মানির হয়ে। এদিকে লিওনেল মেসি বিশ্বকাপে এখনো পর্যন্ত মোট ম্যাচ জিতেছেন ১৩টি। অর্থাৎ বিশ্বকাপে অন্তত কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত যদি আর্জেন্টিনা অপরাজিত থাকে কিংবা গোটা বিশ্বকাপে মোট ৫টি ম্যাচ জিততে পারে, তাহলেই লিওনেল মেসি ক্লোসাকে ছাড়িয়ে গিয়ে তৈরি করবেন নতুন রেকর্ড।
ছয়. আর্জেন্টিনার হয়ে বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি গোল করার রেকর্ডটি গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতার দখলে। তিনি বিশ্বকাপে ১২ ম্যাচ খেলে গোল করেছিলেন ১০টি। মেসির গোল সংখ্যা ৬টি। এবারের বিশ্বকাপে পাঁচটি গোল করলেই বাতিস্তুতার রেকর্ডটি ভেঙে দিতে পারবেন তিনি।
সাত. যদিও বিশ্বকাপে মেসি এখন পর্যন্ত ৬টি গোল করেছেন, কিন্তু আফসোসের ব্যাপার হলো তিনি কোনো বিশ্বকাপেই নক আউট পর্বে কখনো গোল করতে পারেননি। যদি এবারে আর্জেন্টিনা নক আউট পর্বে পৌঁছায় এবং লিওনেল মেসি দু’একটি গোল করতে পারেন, তাতে নতুন কোনো রেকর্ড না হলেও আর্জেন্টাইন ভক্ত-সমর্থকদের দীর্ঘদিনের আক্ষেপটা মিটে যাবে বটে।
আট. সবশেষে যেটি না বললেই নয়— যদি এবারে আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জিতেই যায়, তবে সেটিই হবে লিওনেল মেসির সবচেয়ে বড় রেকর্ড এবং সবচেয়ে বড় অর্জন।