বাংলাদেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষে চলছে ফল প্রকাশ। এ নির্বাচন ঘিরে আজ রোববার দিনভর খবরাখবর প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যম। দ্য নিউইয়র্ক টাইমস, ওয়াশিংটন পোস্ট, আল–জাজিরা, টাইমস অব ইন্ডিয়ার মতো শীর্ষস্থানীয় সব সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছে বাংলাদেশের নির্বাচনের চিত্র।
আজ রোববার আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে উঠে এসেছে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে ভোট পড়ার নিম্ন হারের কথা। বলা হয়েছে, বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি বিরোধী দলের বর্জনের মধ্য দিয়ে এবারের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচনার মুখে পড়েছে এ নির্বাচন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টানা চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় থাকা নিশ্চিত।
নির্বাচন নিয়ে প্রভাবশালী মার্কিন গণমাধ্যম দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের শিরোনাম—‘দমন-পীড়ন ও বর্জনে বিপর্যস্ত বাংলাদেশের নির্বাচন, ভোট গ্রহণ চলছে’। সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নির্বাচনের ফলাফল কী হবে, তা আগেই অনুমান করা যাচ্ছে। মোটাদাগে বলতে গেলে, এটি একটি একতরফা নির্বাচন। ভোট নিয়ে মানুষের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা কম দেখা গেছে।
‘বিরোধীদের নির্বাচন বর্জনের পর বাংলাদেশে ক্ষমতায় থাকতে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা’ শিরোনামে আরেক মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নির্বাচনের আগে অন্তত ১৮টি নাশকতার ঘটনা ঘটেছে। তবে নির্বাচনের দিন পরিস্থিতি বলতে গেলে শান্তিপূর্ণ ছিল। মোটামুটি ৪০ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে প্রাথমিকভাবে দাবি করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি)। প্রধান বিরোধীদের নির্বাচন বর্জনের কারণে টানা চার মেয়াদে আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় থাকার পথ সুগম হয়েছে।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে কয়েক দিন ধরেই খবর প্রকাশ করে আসছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরা। তাদের আজকের শিরোনাম—‘বিরোধীদের বর্জনের নির্বাচনে ভোটের হার কম, গণনা চলছে’। আল–জাজিরা বলছে, রোববারের নির্বাচনে বেশির ভাগ বাংলাদেশিই ভোটদানে বিরত ছিল। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, ভোট পড়ার হার কম হবে। যদিও নির্বাচনকে বৈধতা দিতে নানা প্রচার চালানো হচ্ছে।
বার্তা সংস্থা এএফপি ও রয়টার্সের আজকের প্রতিবেদনের সুরও একই। এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনাকে পঞ্চমবারের মতো ক্ষমতায় থাকার নিশ্চয়তা দেওয়া নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। এখন ভোট গণনা করছেন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা। আর রয়টার্স বলছে, ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার এক ঘণ্টা আগে বেলা ৩টায় ভোট পড়ার হার ছিল ২৭ দশমিক ১৫। অথচ এর আগে ২০১৮ সালের নির্বাচনে এই হার ছিল ৮০–এর বেশি।
জাপানের সংবাদমাধ্যম নিক্কেই এশিয়ায় ‘বাংলাদেশে উত্তেজনাপূর্ণ ভোটাভুটির পর এবার ফল প্রকাশের পালা, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সমালোচনা’ শিরোনামে খবরে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে এবারের নির্বাচনই কেবল ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েনি। ২০১৪ সালের নির্বাচনও বর্জন করেছিল বিএনপি। ওই নির্বাচনে ১৫৩ আসনে বিনা ভোটে জিতে সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিল আওয়ামী লীগ।
বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আজ দিনভর হালনাগাদ তথ্য দিয়েছে ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলো। টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন শুরু করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সচিত্র তথ্য উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে। সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনের শিরোনাম—‘বিরোধী দল ছাড়া নির্বাচনে ভোট গণনা চলছে’। দেশটির আরেক সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির শিরোনাম—‘ভোট পড়ার হার ৪০, গণনা চলছে।’