বিয়ের পিঁড়িতে সাফজয়ী স্বপ্না

বিয়ের পিঁড়িতে সাফজয়ী স্বপ্নাবধূবেশে শুক্রবার বরের সঙ্গে সাফজয়ী ফুটবলার স্বপ্না। ছবি: সমকাল

সিরাত জাহান স্বপ্না– সাফজয়ী ফুটবল দলের অন্যতম সদস্য। মাঠে আলাদাভাবে নজর কাড়ত তাঁর আক্রমণ। ১০ নম্বর জার্সিতে খেলতেন। বিশ্বদরবারে বাংলাদেশের বিজয় পতাকা ওড়ানো স্বপ্না গত ২৪ মে বাফুফের ক্যাম্প ছেড়ে রংপুরে চলে আসেন। এরপর আর ফুটবলে ফেরেননি। গতকাল শুক্রবার বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন স্বপ্না। পারিবারিক পছন্দে জীবনসঙ্গী করেছেন সৌদি প্রবাসী সুবেহ সাদিক মুন্নাকে।

রংপুর শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে সদর উপজেলার সদ্যপুষ্করণী ইউনিয়নের পালিচড়া জয়রাম গ্রামে স্বপ্নার বাড়ি। গতকাল বিয়ের সাজে ছিল পুরো বাড়ি। এসেছেন আত্মীয়স্বজনরা। বাড়ির এক পাশে বর-কনের আসনে বসে স্বপ্না নিজেই আগতদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করছেন। বরের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পায়রা চর গ্রামে। প্রবাসী বাবার মাধ্যমে মুন্না পাঁচ বছর ধরে সৌদি আরবের একটি কোম্পানিতে চাকরি করছেন।

গ্রামের নারীরা ফুটবলে অনেক এগিয়ে জানিয়ে তিনি বলেন, তারা আরও ভালো করবে। আমি যেখানেই থাকি, তাদের প্রতি আমার দৃষ্টি থাকবে।

২০১১ সালে বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্ট দিয়ে স্বপ্নার যাত্রা শুরু। খেলেছেন এ টুর্নামেন্টের দুটি আসর। এরপর বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী দলে ডাক পান। ২০১৪ সালে ঢাকায় খেলেন আঞ্চলিক বাছাইপর্বে। ২০১৫ সালে নেপালে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ ফুটবলের আঞ্চলিক পর্বে বাংলাদেশ শিরোপা জিতেছিল। স্বপ্না ছিলেন সে দলে। অনূর্ধ্ব-১৬ এএফসি বাছাইয়ে খেলেছেন ২০১৬ সালে। সে বছরই শিলংগুয়াহাটি এসএ গেমসে জাতীয় নারী দলের জার্সি পরেন। ২০১৭ সালে নারী সাফে ৫ গোল করেছিলেন। ২০১৮ সালে অনূর্ধ্ব-১৮ নারী সাফে ৮ গোল করেছিলেন তিনি।

পালিচড়া জয়রাম গ্রামে ২০০১ সালের ১০ এপ্রিল স্বপ্নার জন্ম। স্বপ্নার বাবা মোকছার আলী ও মা লিপি বেগম বলেছেন, ‘আমাদের ভাঙা ঘরে চাঁদের আলো হয়ে এসেছে স্বপ্না। সে যেমন ফুটবলে দেশকে অনেক এগিয়ে নিয়ে সুনাম কুড়িয়েছে, তেমনি আমাদের সংসারেও ফিরেছে সচ্ছলতা। স্বপ্না আমাদের গর্ব। তার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিয়ে সম্পন্ন করেছি। সবাই নবদম্পতির জন্য দোয়া করবেন।’