রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির নিবন্ধন বাতিল করার দাবি জানিয়েছেন সরকারি দল আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান। আজ রোববার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ দাবি জানান।
এর আগে গত বছরের আগস্টে নির্বাচন কমিশনে স্মারকলিপি দিয়ে বিএনপির নিবন্ধন বাতিল করার দাবি জানিয়েছিল যুবলীগ। রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন দিয়ে থাকে নির্বাচন কমিশন। এবার ক্ষমতাসীনদের অঙ্গসংগঠন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এ দাবি তুললেন জাতীয় সংসদে।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকারী ও বাংলাদেশকে ধ্বংসকারী বলে অভিযোগ করেন মাইনুল হোসেন খান। তিনি সংসদে বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপিকে কানাডার আদালত সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে অ্যাখায়িত করেছে। বিএনপি-জামায়াত সন্ত্রাসী ও জঙ্গি সংগঠন।’ তিনি প্রশ্ন রাখেন, তারা কীভাবে বাংলাদেশে রাজনীতি করে?
মাইনুল হোসেন বলেন, ‘আমরা একাধিকবার বলেছি জঙ্গি সংগঠন যত দিন রাজনীতিতে বিচরণ করবে, তত দিনই বাংলাদেশের ভোগান্তি হবে। এ সংগঠনের (বিএনপি) নিবন্ধন বাতিল করা হোক, নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হোক।’
গত ৩০ জানুয়ারি থেকে যাত্রা শুরু করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ। সেদিন সংসদে ভাষণ দেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। আজ তাঁর বক্তব্যের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাব আনেন সংসদের চিফ হুইপ নূর–ই–আলম চৌধুরী। অধিবেশনজুড়ে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনা হবে। আজ আটজন সংসদ সদস্য আলোচনায় অংশ নেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, ৭ জানুয়ারি তাঁর নির্বাচনী এলাকায় অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন পরিশ্রম করে নির্বাচনের মাঠ যথাসম্ভব নিরপেক্ষ রেখেছিল।
সরকারি দলের সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ছিল কঠিনতম, চ্যালেঞ্জিং নির্বাচন। বিএনপি–জামায়াত এই নির্বাচন বানচাল করার জন্য নানা ষড়যন্ত্র করেছিল।
স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মঈন উদ্দিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু হবে। এর মধ্য দিয়ে যাঁরা নির্বাচিত হয়ে আসবেন, তিনি তাঁদের স্বাগত জানাবেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁর কথা রেখেছেন।
সরকারি দলের সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের মডেল এখন সারা বিশ্বে রোল মডেল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপন রহিত করার দাবি
এর আগে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধীদলীয় উপনেতা আনিসুল ইসলাম মাহমুদ রপ্তানি খাতে নগদ সহায়তা কমানোর বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা প্রজ্ঞাপন রহিত করার দাবি জানান। তিনি বলেন, পোশাকশিল্প দেশের অর্থনীতির উন্নয়নের প্রধান চালিকা শক্তি। বিশেষ করে বর্তমান সময়ে ডলার–সংকটের সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের এই প্রজ্ঞাপন ক্ষতিকারক হবে। তিনি এই প্রজ্ঞাপনের উদ্দেশ্যের সঙ্গে একমত। কিন্তু আগে বলা হয়েছিল জুন পর্যন্ত ভর্তুকি দেওয়া হবে। এর ওপর ভিত্তি করে অনেকে চুক্তি করেছেন। এখন এটি বন্ধ করা হলে পোশাকশিল্প ক্ষতির মুখে পড়বে। তিনি এটি রহিত করা অথবা জুন পর্যন্ত স্থগিত রাখার দাবি জানান।
সম্প্রতি ৪৩টি রপ্তানি পণ্যের ক্ষেত্রে সরকারের দেওয়া নগদ সহায়তার পরিমাণ কমানো হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এ নিয়ে গত ৩০ জানুয়ারি প্রজ্ঞাপন জারি করে। তাতে ১ জানুয়ারি থেকেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার কথা বলা হয়।
প্রথম আলো