বিএনপিকে আস্থা অর্জন করতে হবে

  • ড. ফোরকান উদ্দিন আহাম্মদ
  •  ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২০:২৮
বিএনপিকে আস্থা অর্জন করতে হবে। – ছবি : সংগৃহীত

১৯৭৮ সালের ১ মে রমনা রেস্তোরাঁয় ৭৬ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠনের মধ্য দিয়ে বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। আহ্বায়ক কমিটির প্রধান ছিলেন তিনি। প্রথম মহাসচিব ছিলেন প্রফেসর এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। সেই আহ্বায়ক কমিটির শতকরা ৪৫ ভাগই ছিলেন বয়সে তরুণ। অবশিষ্ট ৫৫ ভাগেরও বয়স তুলনামূলক কম ছিল। প্রেসিডেন্ট জিয়া রাজনীতিতে নেমে বুঝতে পেরেছিলেন যে লক্ষ্যে তিনি পৌঁছাতে চান তার জন্য অপেক্ষাকৃত তরুণদেরই প্রয়োজন। তিনিও সে সময় তারুণ্যদীপ্ত ছিলেন। ৪৩ বছর আগের সে কাহিনীর যারা ধারক তারা এখন প্রৌঢ়। অনেকেই পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন।

এ সময়কালে বিএনপি মুখোমুখি হয়েছে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের। বিএনপির জনপ্রিয়তা না কমলেও এটাই সত্য যে ঐতিহ্যের সে ধারাবাহিকতা বিএনপি ধরে রাখতে পারেনি। সময়ের স্রোতে তাল মেলাতে না পেরে রাজনীতির ময়দানে এখন হাবুডুবু খাচ্ছে। এ কঠিন পরিস্থিতি থেকে নিজেকে উদ্ধার তো দূরের কথা মানুষকে স্বপ্ন দেখাতেও তারা ভুলে গেছে। অথচ রাজনৈতিক ময়দানে নেতৃত্বের শূন্যতার মধ্যে বিএনপিই নতুন ভরসার জায়গা তৈরি করেছিল। বিএনপির ওপরই এ দেশের মানুষ আস্থা রেখেছিল। ১৯৮১ সালের ৩০ মে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বিপথগামী একদল সৈনিকের হাতে চট্টগ্রামে শাহাদতবরণ করেন। বেগম খালেদা জিয়া তখন নিতান্তই গৃহবধূ। দুই সন্তানকে নিয়ে এক অকূল পাথারে পড়ে যান তিনি। বিএনপি সে সময় ক্ষমতায় থাকলেও কিছুদিন পরই ক্ষমতাচ্যুত হয়ে যায়। ১৯৮২ সালের জানুয়ারি মাসে বেগম খালেদা জিয়া বিএনপির রাজনীতিতে আসেন। এরপর এ দীর্ঘ সময়ে বিএনপিকে তিনিই টেনে নিয়ে গেছেন।

রাজনীতিতে হাতেখড়ি নেয়ার ১০ বছরের মধ্যেই বিপুল জনপ্রিয়তা নিয়ে তিনি বিএনপিকে রাষ্ট্রক্ষমতায় এনেছেন। বাংলাদেশের মতো একটি রক্ষণশীল দেশে যা ছিল বিরাট এক অর্জন। শুধু কি তাই? ১৯৯৬ সালে সম্মিলিত রাজনৈতিক আন্দোলনে ক্ষমতা হারিয়েও তিনি আবার দলকে ২০০১ সালে বিজয়ী করে আনেন। বেগম খালেদা জিয়া হয়ে ওঠেন বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসীদের ঐক্যের প্রতীক। বিপুল এ জনপ্রিয়তা সত্তে¡ও এটাও সত্য যে বেগম খালেদা জিয়াকে তার রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে কঠিনতম মুহূর্তগুলো পার করতে হচ্ছে এখন। রাজনীতিতে কেউ কাউকে জায়গা করে দেয় না। আবার কেউ স্থায়ী শত্রু কিংবা স্থায়ী মিত্র এমন থিওরিও এখানে চলে না। রাজনীতির ময়দানে প্রতিযোগিতা খুবই স্বাভাবিক। এ প্রতিযোগিতার একটি সৌন্দর্য আছে। সেটি যদি সহাবস্থানমূলক শ্রদ্ধাবোধের হয় তবে তা দৃষ্টান্তমূলক হয়ে ওঠে।

বাংলাদেশে যে দুটি ধারার রাজনীতি দীর্ঘ সময় ধরে নেতৃত্বের আসনে- বিএনপি তার একটি। বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের চেতনা নিয়ে দলটির যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৭৮ সালে। বিএনপি একটি মিশ্র ধারার রাজনৈতিক শক্তি। ২০০৬ সালের পর থেকে টানা ক্ষমতার বাইরে তাদের অবস্থান। দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দুই বছরের অধিক সময় কারাগারে কাটিয়ে সরকারের নির্বাহী আদেশে জামিন লাভ করেছেন। কিন্তু রাজনৈতিক অঙ্গনে আজো মুক্ত হতে পারেননি। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে দেশের বাইরে। এ দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষ বিএনপির রাজনীতির অনুসারী। মধ্যপন্থী রাজনীতির জনপ্রিয় একটি ধারার প্রতিনিধিত্ব করেও বিএনপি দীর্ঘ সময় ক্ষমতার বাইরে। জনসমর্থন থাকলেও দলটির নেতৃত্ব সেটিকে কাজে লাগিয়ে কার্যকর কোনো রাজনৈতিক চাপ তৈরি করতে পারেনি। বলা যায় বিএনপি নেতৃত্ব বিপুলসংখ্যক মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে এখনো পারছে না। এ অবস্থায় বিএনপির রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কী? দলটি কি পারবে জনগণের প্রত্যাশা পূরণে নেতৃত্ব দিতে? কিংবা সব প্রতিকূলতাকে কাটিয়ে উঠে রাষ্ট্রক্ষমতায় যেতে? এ প্রশ্নের তাৎক্ষণিক উত্তর খুবই কঠিন। ঐতিহাসিক বিচারে বিএনপি কখনোই র‌্যাডিক্যাল কিংবা মিলিট্যান্ট রাজনৈতিক দলের মতো ছিল না। ক্ষমতার অলিন্দে গড়ে উঠলেও এমন একটি রাজনৈতিক শক্তি কিংবা দর্শন বিএনপি গ্রহণ করেছে, যা এ দেশের বিপুল মানুষ সাদরে গ্রহণ করে। ঘাত প্রতিঘাতের ভেতর দিয়ে বিএনপি তাই এগিয়েছে বহুদূর। তাত্তি¡কভাবে এ কথা সত্য। কিন্তু বৈশ্বিক রাজনীতির নতুন মেরুকরণে দলটির অবস্থান কোথায়? দলের নেতৃত্বের কথা এ ক্ষেত্রে বারবার ঘুরে ফিরে আসে। বহু মত ও পথের সংমিশ্রণে বিএনপির যে রাজনৈতিক রূপ তার উদারনৈতিকতাই মানুষের পছন্দের।

রাজনীতিতে আগমনের সময় খালেদা জিয়ার কোনোরূপ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ছিল না, উনি কোনোভাবেই ছাত্ররাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন না কিংবা রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে বেড়ে ওঠেননি। রাজনীতিতে আসার আগে ফার্স্ট লেডি হিসেবে কিছু রাজনৈতিক আচার পালন ছাড়া উনার আর কোনো ধরনের অভিজ্ঞতা ছিল না। জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর বিএনপি হাইকমান্ড তাকে সামনে নিয়ে আসে এবং চেয়ারপারসনের আসনে বসান। এরপর মূলত এরশাদবিরোধী আন্দোলন তাকে জনপ্রিয় করে তোলে। এরশাদের অধীনে কোনো নির্বাচন না করার ঘোষণা, কোনো নির্বাচন না করা এবং কয়েকবার কারাবরণের উদহারণ টেনে বিএনপি নেতৃবৃন্দ তাকে আপসহীন নেত্রী হিসেবে মানুষের সামনে তুলে ধরে এবং তারা সফলও হয়। যার ফলে বিএনপি তার নেতৃত্বে এককভাবে ১৯৯১ সালে ক্ষমতায় আসে। রাজনীতিতে খালেদা জিয়ার বড় সফলতা মূলত এটাই।

ওয়াকিবহাল মহলের অনেকেই মনে করেন, বিএনপি নেতৃত্ব দক্ষতার সাথে এবারের আন্দোলনে জনগণের সামনে একটি সহজ সরল সিদ্ধান্ত উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে। সে সিদ্ধান্তটি হলো স্বৈরতন্ত্রের পতন হলে দেশ বাঁচবে, মানুষ বাঁচবে; অন্যথায় মুক্তির সব পথই রুদ্ধ। ফলে গণতন্ত্রকামী নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবেই আন্দোলনে সাড়া দেবে। এই আন্দোলনকে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছে দেয়ার জন্য অপরিহার্য পূর্বশর্ত হলো- স্বেচ্ছাচারবিরোধী জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা ও যুগপৎ কিংবা বৃহত্তর জোটগত আন্দোলনের পথ রচনা করা। বিএনপিকে এ বাস্তবতা উপলব্ধি করতে হবে, বর্তমান রাজনৈতিক সঙ্কটটি কোনো দলীয় ইস্যু নয়, বরং জাতীয় সমস্যা যা তার একার পক্ষে মোকাবেলা করা সম্ভব হবে না। তাই ডান-বাম ছোট-বড় সব দলকেই আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে হবে। নির্যাতিত ইসলামী দলগুলোকে বিশেষভাবে মূল্যায়ন করতে হবে। অন্য দিকে ছোট দলগুলোর বড় নেতাদের এটি স্বীকৃতি দিতে হবে যে, দীর্ঘ দেড় দশকের সরকারবিরোধী আন্দোলনে বিএনপি ত্যাগ স্বীকার করেছে। বিএনপি এখন দেশের শীর্ষ জনপ্রিয় ও শক্তিশালী দল। সুতরাং জনতার মুক্তি চাইলে বিএনপির সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সবাইকে লড়তে হবে।

বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, জাতীয় পার্টি থেকে বিএনপির রাজনীতিতে আসা কিংবা বিএনপি থেকে জাতীয় পার্টিতে যাওয়া এমন অনেক নেতাদের পরস্পরের সাথে রাজনৈতিক সংযোগ কিংবা হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। পারস্পরিক নানা আলোচনা থেকে জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক অবস্থানও বোঝার চেষ্টা করছেন বিএনপির নেতাদের কেউ কেউ। যেখানে আশাবাদী হওয়ার মতো বিষয় রয়েছে বলেও নেতাদের কেউ কেউ জানিয়েছেন। জোটবদ্ধ রাজনীতিতে ১৯৯৯ সালে বিএনপির নেতৃত্বে চারদলীয় জোটগঠনের শুরুতে ছিল এই জাতীয় পার্টি। তবে পরে দলটির তৎকালীন সভাপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জোট থেকে বেরিয়ে গেলে তার দলের মহাসচিব নাজিউর রহমান মঞ্জুর নেতৃত্বে তখন জাতীয় পার্টির একটি অংশ বিএনপির জোটের সাথে যুক্ত থাকে। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে মরহুম কাজী জাফরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির আরেকটি অংশ বিএনপির জোটে আসে। যে দলটি এখনো ২০ দলীয় জোটে রয়েছে।

দল হিসেবে বিএনপির অবস্থা বা অবস্থান কতটা সংহত বা সুদৃঢ়। তারা এদেশে ইতঃপূর্বে কয়েক দফায় ক্ষমতার মসনদে আসীন ছিলেন। তবে পূর্বেকার ক্ষমতা দম্ভে তারাও অনেক অসংহত, এলোমেলো ও অগোছালো। সফলতা, সক্ষমতা ও দুর্বলতার মানদণ্ডে সব দলের মধ্যে অনেক সীমাবদ্ধতা থাকে। সেই সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করতে যে অনুশীলন আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর করার দরকার তা থেকে বিএনপি কেন, কোনো রাজনৈতিক দলই সে অনুসরণ হয় না। যে লক্ষ্য উদ্দেশ্য ও আদর্শকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলো আবির্ভূত হয়ে থাকে, সেগুলো কাগুজে কর্মসূচি ছাড়া আর কিছুই নয়। নেতৃত্ব সৃষ্টি, নেতার গুণাবলি অর্জন এবং গ্রহণযোগ্য নেতৃত্বের জন্য যে বিশেষ দক্ষতার প্রয়োজন সেগুলো অর্জনের জন্য ধাপভিত্তিক প্রশিক্ষণ, অনুশীলন, মহড়া, স্টাডি, পর্যবেক্ষণ, মূল্যায়ন ইত্যাদির কোনোটাই অনুসরণ করা হয় না। আমাদের এ দেশে মা লক্ষ্মীর বর পেয়ে অথবা বড় ভাই বা বড় দাদার আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে রাতারাতি বড় নেতায় পরিণত হতে দেখা যায়। যাকে বলে ভূঁইফোড় নেতৃত্ব।

অভিজ্ঞতাহীন ও মেধাশূন্য এ নেতৃত্বের ফলাফল ভালো হয় না। নেতৃত্বের কোনপর্যায়ে কি যোগ্যতা কতটা অর্জন এগুলোর কোনোটারই বালাই নাই। এমনকি সাংগঠনিক শক্তিকে মজবুত ও টেকসই করতে যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করা আবশ্যক তার কোনো চর্চা আমাদের দলগুলোতে নেই। সেক্ষেত্রে বিএনপিও ব্যতিক্রম নয়। বড় দলগুলোতে বিএনপিসহ স্বার্থের দ্ব›দ্ব ও ভুল বুঝাবুঝির প্রাবল্য দেখা যায়। এতে মনোমালিন্য দূরত্ব ও ব্যবধান সৃষ্টি হয় এবং একে অন্যের মধ্যে আস্থার সঙ্কট সৃষ্টি হতে থাকে। এ সঙ্কট ক্রমান্বয়ে ঘনীভূত হয়।

আজকাল অনেক ক্ষেত্রে বড় দলগুলোতে মাস্তানি ও সন্ত্রাসীর মহড়ার জন্য আমাদের ছাত্র ও যুব সমাজকে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এসব বাজে কাজে দৌরাত্ম্য ও রাহাজানি সৃষ্টিতে পারঙ্গমতায় রাজনৈতিকভাবে শ্রেষ্ঠত্ব ও যোগ্যতার অধিকারীগণকে নেতৃত্বের আসন দেয়া হয়ে থাকে। ধিক্ এ অধঃপতিত অবস্থাকে। অন্যায় অনৈতিকতা ও অশ্লীলতানির্ভর রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নকে অনেকক্ষেত্রেই উৎসাহিত করা হয়ে থাকে। অথচ উন্নত দেশে দৃশ্যমান হয় তার বিপরীত চিত্র। সেখানে কে কতটা সুনাগরিক ও সভ্যতার চিত্র তুলে ধরবেন তাকে মাপকাঠী ধরেই শাসনতান্ত্রিক ধারায় যোগ্যতম প্রতিনিধি নির্বাচিত করা হয়। পরিস্থিতি দৃষ্টে মনে হয় যেন, আমাদের দেশে নেতা ও নেতৃত্ব এমনই শক্তিশালী যেসব প্রতিযোগিতায় তারাই সেরা। এহেন মনোভাব অনেকক্ষেত্রে ভালো বটে। তবে সে মনোভাবে বা মানসিকতায় যদি কোনো প্রতারণা বা বঞ্চনা থাকে তবে তাকে আর গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ কিভাবে বলা যাবে? যাই হোক বিএনপিতে যে নেতৃত্ব সঙ্কট তাকে জনগণ হয়তো বা বিএনপির জন্য সমস্যা ও দুর্বলতা হিসেবে দেখছে। এ সঙ্কট অতিক্রম করা বিএনপির জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জও বটে। এ ক্ষেত্রে কোনো চালাকি বা চতুরতা নয়। কৌশলে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় জনগণের আস্থা অর্জনে সক্রিয় ভূমিকায় ও অংশগ্রহণমূলক রাজনীতির পথে আসতে হবে। দল হিসেবে বিএনপি সাংগঠনিকভাবে এত শক্তিশালী নয়- তবে আওয়ামী বিরোধিতাই যেন অনেকটা বিএনপির শক্তির উৎস। তবে চালাকি, চতুরতা বা ছলনার আশ্রয় নিয়ে কোন সুবিধা করতে পারবে না বলে প্রতীয়মান হয়। কেননা তাদের প্রতিপক্ষরা চালাকি ও চতুরতায় কোনো সাধারণ খেলোয়াড় নয়। যাই হোক, বিএনপি যত সংযমী ও সহনশীল হবে এবং আগামী দিনে কৌশলী ভ‚মিকা নিয়ে সরকার পরিচালনার নেতিবাচক দিকগুলো কাজে লাগাতে পারবে তাহলে তাদের এযাবৎকালের ক্ষতিগুলো পুষিয়ে লক্ষ্য পূরণের এগুতে সক্ষম হবে।

বিএনপির সিনিয়র নেতাদের উচিত দলকে অমূল সংস্কার করে পরিবর্তিত জাতীয় রাজনীতি এবং বৈশ্বিক রাজনীতির প্রেক্ষাপটে দলকে ঢেলে সাজানো। একথা ভুলে গেলে চলবে না, বিএনপির ভোটব্যাংক হচ্ছে মূলত আওয়ামী বিরোধী ভোট। বাংলাদেশের ভোটার রাজনীতি দুইভাগে বিভক্ত, আওয়ামী লীগ এবং আওয়ামী লীগ বিরোধী। বিএনপি হয়তো এই আওয়ামী লীগ বিরোধী প্লাটফর্মের প্রতিনিধিত্ব করেছে। আজ বিএনপি না থাকলে কাল অন্যদল সে জায়গা দখল করবে। বিএনপির উচিত এখন নতুন রাজনীতি নীতিনির্ধারণ নতুন কৌশল নিয়ে এগিয়ে যাওয়া।

লেখক : কলামিস্ট ও গবেষক
সাবেক উপ-মহাপরিচালক, বাংলাদেশ
আনসার ও ভিডিপি