বাংলাদেশ সরকারের প্রতিবেদন : মানবাধিকার সুরক্ষার জন্যই ছিল ২০১৮ সালের নির্বাচন

আইনের শাসন, বিচার পাওয়ার ব্যবস্থা এবং মানবাধিকার নিশ্চিত করা ও তার প্রসারে আওয়ামী লীগ সরকার যেসব প্রাতিষ্ঠানিক পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জাতিসংঘকে জানিয়েছে, তার মধ্যে প্রথমেই এসেছে ২০১৮ সালের নির্বাচনের কথা। ওই নির্বাচন দেশে ও বিদেশে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিলেও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মাধ্যমে যেসব প্রশাসনিক, আইনি ও নীতিগত ব্যবস্থা শক্তিশালী করা হয়েছে বলে সরকার তার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, তাতে ওই নির্বাচনের কথা এসেছে এবং আওয়ামী লীগের ৮০ শতাংশের বেশি ভোট পাওয়ার তথ্যও এতে দেওয়া হয়েছে।

আগামীকাল থেকে জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার যে চতুর্থ সর্বজনীন নিয়মিত পর্যালোচনা বা ইউনিভার্সাল পিরিয়ডিক রিভিউ (ইউপিআর) শুরু হচ্ছে, তার জন্য পেশ করা জাতীয় প্রতিবেদনে সরকার এ কথা বলেছে।

নির্বাচনব্যবস্থা শক্তিশালীকরণে নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনর্নির্ধারণ আইন ২০২১, নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইন ২০২২ ও সংসদ নির্বাচন (ইভিএম) বিধিমালা ২০১৮, রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের আচরণবিধি ২০০৮ এবং নির্বাচনী আচরণবিধি ২০০৮-এর সংশোধনীগুলোর কথা সরকার তার প্রতিবেদনে জানিয়েছে। নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইন পক্ষপাতমুক্ত এবং সক্ষম নির্বাচন কমিশন গঠন নিশ্চিত করবে এবং এটি উপমহাদেশে প্রথম এ রকম কোনো আইন বলেও সরকার দাবি করেছে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২ নির্বাচনকালে নির্বাহী বিভাগের ওপর নির্বাচন কমিশনের পূর্ণ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে জানিয়ে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের পর থেকে কমিশন ৬ হাজার ৮৪২টি জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন সম্পন্ন করেছে। তবে নির্বাচনে অনিয়মের বিষয়ে, বিশেষ করে ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে রাতের বেলায় ব্যালট বাক্স ভর্তির যে অভিযোগ আছে, সে সম্পর্কে এতে কোনো ব্যাখ্যা নেই।

প্রতিবেদনে সুপ্রিম কোর্ট, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন ও আইন কমিশনকে শক্তিশালী করার কথা বলা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে আপিল বিভাগে ৯ জন ও হাইকোর্ট বিভাগে ৩৬ জন বিচারপতিকে নিয়োগ এবং ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল সময়ে ৩ লাখ ২১ হাজার ৪৫০টি মামলার সুরাহা হওয়ার তথ্য প্রতিবেদনে দেওয়া হয়েছে। ওয়ার্ল্ড জাস্টিস প্রজেক্টের সূচকে বাংলাদেশে আইনের শাসনের মান তলানিতে থাকলেও এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও দেশ বাংলাদেশের বিচার বিভাগের ওপর নির্বাহী বিভাগের কর্তৃত্বের কথা বলে আসছে। অবশ্য ওয়ার্ল্ড জাস্টিস প্রজেক্টের সূচকে বাংলাদেশে আইনের শাসনের মান তলানিতে এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও দেশ বাংলাদেশের বিচার বিভাগের ওপর নির্বাহী বিভাগের কর্তৃত্বের কথা বলে আসছে।