বাংলাদেশ ব্যাংকে সভা : দুর্বল ব্যাংক আরও দুর্বল হচ্ছে

বাংলাদেশ ব্যাংক
বাংলাদেশ ব্যাংকছবি: সংগৃহীত

গত বছরের ডিসেম্বরে ইসলামী ব্যাংকে খেলাপি ঋণ ছিল ৫ হাজার ৪০২ কোটি টাকা, যা গত জুনে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৬২৯ কোটি টাকা। পাশাপাশি গত জুনে ব্যাংকটি ১ হাজার ১৬০ কোটি টাকার মূলধন ঘাটতিতে পড়েছে।

ব্যাংকটির আর্থিক অবনতি ঠেকাতে গত বছরের ডিসেম্বরে পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু এই সময়ে আর্থিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চাহিদামতো নগদ জমা (সিআরআর) ও বিধিবদ্ধ জমা (এসএলআর) রাখতে পারছে না ব্যাংকটি।

এদিকে দুর্বল ব্যাংকগুলোর উন্নয়নে এক বছর আগে সমন্বয়ক নিয়োগ দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে থেকে কিছু ব্যাংকে পর্যবেক্ষক নিয়োগ দিয়ে রেখেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আর্থিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় নতুন করে আরও কয়েকটিতে পর্যবেক্ষক বসানো হয়।

এসব ব্যাংকে দায়িত্ব পালন করা সমন্বয়ক ও পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে গতকাল সভা করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। গভর্নরের সঙ্গে এটি ছিল তাঁদের প্রথম আনুষ্ঠানিক সভা।

বর্তমানে সমন্বয়ক আছেন সাত ব্যাংকে। সেগুলো হচ্ছে ন্যাশনাল ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক, এবি ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, কমার্স ব্যাংক, বিডিবিএল ব্যাংক। এ ছাড়া পর্যবেক্ষক রয়েছেন আট ব্যাংকে। সেই ব্যাংকগুলো হলো সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, কৃষি ব্যাংক, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক।

সভায় গভর্নর এসব ব্যাংককে বেঁধে দেওয়া লক্ষ্য অর্জনে তদারকি অব্যাহত রাখার নির্দেশনা দেন। ব্যাংকগুলোতে সুশাসন যাতে নিশ্চিত হয়, তা তদারকি করতে বলেন। এ ছাড়া যেসব ব্যাংকে কোনো উপায়ে অনিয়ম ঠেকানো যাচ্ছে না, সেগুলোর উন্নতিতে কৌশল নির্ধারণের পরামর্শ দেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে যোগ দিয়ে গত বছরের ৪ আগস্ট আব্দুর রউফ তালুকদার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, অপেক্ষাকৃত দুর্বল ব্যাংকগুলোকে চিহ্নিত করতে চারটি চলকের ওপর ভিত্তি করে ১০টি দুর্বল ব্যাংক চিহ্নিত করা হয়েছে। চলকগুলো হচ্ছে শ্রেণীকৃত ঋণের মাত্রা, মূলধন পর্যাপ্ততা, ঋণ-আমানত অনুপাত ও প্রভিশনের পরিমাণ।

চারটি চলকের ওপর ভিত্তি করে চিহ্নিত দুর্বল ব্যাংকগুলোর সমস্যা সমাধানের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক আলাদা আলাদা (ওয়ান-টু-ওয়ান) ভিত্তিতে আলোচনা শুরু করছে। এ ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো তিন বছর মেয়াদি ব্যবসায়িক পরিকল্পনা দেবে বাংলাদেশ ব্যাংককে। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রতিটি ব্যাংকের অগ্রগতি পর্যালোচনা করবেন।