- অনলাইন প্রতিবেদক
- ১৮ নভেম্বর ২০২০
বাংলাদেশ গভীর থেকে গভীরতর সংকটে রয়েছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমি স্পষ্ট করতে বলতে চাই, আজকে আমরা যে গভীর সংকটে, সেই সংকট কাটিয়ে উঠতে হলে আমাদের অবশ্যই মওলানা ভাসানীকে অনুসরণ করতে হবে, তার দেয়া দর্শন নিয়ে এগুতে হবে।’
বুধবার বিকেলে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী রাজনৈতিক দর্শন তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যারা আমরা গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলি, কাজ করি, যারা আমরা স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করি, তাদের কাছে মওলানা ভাসানী সত্যিকার অর্থে একজনদেবতার মতোর মনে হয়। তিনিই আমাদেরকে দেখিয়েছেন যে, মানুষের কি জন্যে মুক্তি দরকার, স্বাধীনতার দরকার, সার্বভৌমত্ব দরকার। সেই বৃটিশ দাস থেকে শুরু যে লড়াই করছেন, সংগ্রাম করছেন এই মানুষের জন্য, স্বাধীনতার জন্য, মানুষের মুক্তির জন্য।’
তিনি(মওলানা ভাসানী) সমাজকে বদলিয়ে দিতে চেয়েছিলেন, তিনি একেবারে শোষিত মানুষের পক্ষে কথা বলেছেন। সেজন্য যারা সমাজের বিত্তশালী, যারা সমাজে প্রভাবশালী, যারা বিত্তের পাহাড় গড়ে তোলে তারা কখনোই মওলানাকে ভালো চোখে দে্খেননি। সেকারণে সাম্রাজ্যবাদের যারা পূজারি তারা তাকে বলতেন ভায়োলেন্স। আর যারা আধিপত্যবাদের পক্ষে কথা বলেন, তারা তাকে বলেছেন তিনি একেবারেই একজন মৌলবাদী মানুষ।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মওলানা ভাসানী ধার্মিক ছিলেন কিন্তু একেবারে অসাম্প্রদায়িক ছিলেন, অসাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে তিনি লড়াই করেছেন, সংগ্রাম করেছেন। মওলানা ভাসানী আমাদের সামনে একজন নক্ষত্র।’
যে নক্ষত্রের ধ্রুবতারার মতো, যে নক্ষত্রকে সামনে নিয়ে আমরা এগুতে পারি। তিনি বাংলাদেশে যে প্রজন্ম সৃষ্টি করেছেন সেই প্রজন্ম হচ্ছে সামনে এগিয়ে চলার প্রজন্ম। যারা সামনে এগিয়ে যেতে চায়।”
তিনি বলেন, ‘মওলানা ভাসানী ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন, সংগ্রাম করেছেন, পাকিস্তানের ঔপনেবিশবাদ ও তার শো্ষনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন এবং বাংলাদেশকে যারা নিজস্ব সম্পত্তি বানাতে চেয়েছিলো, বাংলাদেশকে যারা নিজস্ব প্রপোর্টি বানাতে চেয়েছিলো, বাংলাদেশের সব কিছুকে যারা নিজেদের বলে দাবি করে তাদের বিরুদ্ধেও তিনি সংগ্রাম করেছেন।’
‘স্বাধীনতা যুদ্ধের পর ভারতীয় সেনা বাহিনীকে যে প্রত্যাহার করা হলো তার আগে কিন্তু মওলানা ভাসানী সারাদেশে সেনাবাহিনীকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি সারাদেশে আন্দোলন করেছিলেন, ফারাক্কা বাঁধের বিরুদ্ধে তিনি আন্দোলন করেছিলেন।’
মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপি এই ভার্চুয়াল আলোচনা সভার আয়োজন করে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও মওলানা ভাসানী মৃত্যুবার্ষিকী পালন জাতীয় কমিটির আহবায়ক আবদুল্লাহ আল নোমানের সভাপতিত্বে এবং ভাইস চেয়ারম্যান ও মওলানা ভাসানীর ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন কমিটির আহবায়ক শামসুজ্জামান দুদুর পরিচালনায় আলোচনা সভায় অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ, বিএনপির নজরুল ইসলাম খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সেলিমা রহমান, বরকতউল্লাহ বুলু, আবদুল হাই শিকদার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, অঙ্গসংগঠনের আনোয়ার হোসেইন, আবদুল কালাম আজাদ, মাওলানা শাহ নেছারুল হক, হাসান জাফির তুহিন ও মাওলানা ভাসানীর দৌহিত্র মাহমুদুল হক শানু বক্তব্য রাখেন।