বাংলাদেশ কোনো একটা দেশের পেটে চলে যাওয়ার পথে ধাবিত হচ্ছে: মির্জা আব্বাস

রাজধানীর ইস্কাটনের লেডিস ক্লাবে বিএনপিপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) ইফতার অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস

‘একটি একটি করে ছোট ছোট দেশ, কোনো একটা দেশের পেটে চলে যাচ্ছে বা চলে গেছে—বাংলাদেশ আজ সেই পথে ধাবিত হচ্ছে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। গত ২৮ অক্টোবর সরকার বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড কেন করল, নেতা-কর্মীদের সেটি বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়ে ঢাকায় এক ইফতার অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রাজধানীর ইস্কাটনের লেডিস ক্লাবে বিএনপিপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) এ ইফতার অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চ্যুয়ালি প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নিয়ে বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, সেলিমা রহমানসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘সেই যে ২৮ তারিখের (অক্টোবর) যে ঘটনা, এ ঘটনায় আমাদের কী করেছিল, সেটি আমাদের চিন্তা করতে হবে কেন করল। আমরা কী করেছিলাম, সরকার কেন করল—সেটা চিন্তা করতে হবে। ১৯৭১ সালে এই দেশটাকে আমরা স্বাধীন করেছিলাম অন্য একটা দেশের হাত থেকে। আমাদের একটা সুচিন্তা ছিল যে এ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব থাকবে, কথা বলার অধিকার দিতে হবে, ভোটের অধিকার থাকবে—আমরা কিছুই পাই নাই। এই না পাওয়ার পেছনে কারও না কারও, কোনো না কোনো দেশের উদ্দেশ্য আছে, এটাও আমাদের মাথায় রাখতে হবে।’

মির্জা আব্বাস আরও বলেন, ‘আমরা যদি দেখি এই ভারতবর্ষের ইতিহাস, এই বাংলাদেশের ইতিহাস; পাক-ভারতের ইতিহাস; একে একে একটি একটি করে ছোট ছোট দেশ, কোনো একটা দেশের পেটে চলে যাচ্ছে বা চলে গেছে। বাংলাদেশ আজ সেই পথে ধাবিত হচ্ছে।’

বাংলাদেশকে শেষ পর্যন্ত সেটা করা সম্ভব হবে না বলে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করে দেন সদ্য কারামুক্ত বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ কী করতে পারে, সেটা ১৯৭১ সালে দেখেছি। ইনশা আল্লাহ, সুযোগ-সময় আসবে, এই দেশের সূর্যসন্তানেরা আবারও দেখাবে বাংলাদেশ কী এবং কত প্রকার।’

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আজকে ইফতারের মধ্য দিয়ে আমরা একত্র হয়েছি। এই একত্র হওয়ার মাধ্যমে শুধু ইফতারটাই বড় না, যেহেতু আমরা রাজনীতি করি দেশের জন্য, জনগণের জন্য, তাই আমাদের সর্বদাই কিন্তু সজাগ থাকতে হবে দেশ ও জনগণকে কীভাবে মুক্ত করা যায়। আমাদের দেশকে দখলদারমুক্ত করতে হবে দখলদারদের হাত থেকে।’

আবদুল মঈন খান বলেন, আজকের বাংলাদেশে যেভাবে জগদ্দল পাথরের মতো যে স্বৈরাচারী সরকার চেপে বসেছে, এটা মোকাবিলা করার যেটা প্রয়োজন, সেটা হচ্ছে ধৈর্য, তিতিক্ষা ও সংযম। তিনি নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা মনোবল শক্ত রাখুন, আমরা আমাদের ক্ষুদ্র শক্তিতে রাজপথে নেমেছি। ইনশা আল্লাহ, আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করব, যে গণতন্ত্রের জন্য বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছে। এটাই হোক আমাদের আজকের শপথ।’

ড্যাবের সভাপতি ডা. হারুন আল রশিদের সভাপতিত্বে ইফতার অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ড্যাবের প্রধান উপদেষ্টা ফরহাদ হালিম, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবদুল হাই শিকদার, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন, মাহবুব উদ্দিন, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্যসচিব কাদের গণি চৌধুরী, ইউট্যাবের এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের অধ্যাপক লুৎফর রহমান প্রমুখ।

ড্যাবের মহাসচিব মো. আবদুস সালাম ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব মেহেদী হাসান ইফতার অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।

prothom alo