বাংলাদেশে ৩ জন শেখ মুজিব আছে: মির্জা গালিব

আমার দেশ অনলাইন
প্রকাশ : ১৪ আগস্ট ২০২৫, ০০: ১৭
আপডেট : ১৪ আগস্ট ২০২৫, ০০: ১৯

একনায়ক শেখ মুজিবের পতনও আমাদের উদযাপন করতে হবে জানিয়ে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি ও যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. মির্জা গালিব বলেছেন, বাংলাদেশে আমাদের ৩ জন শেখ মুজিব আছে। প্রথমজন মুক্তিযুদ্ধের নায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব, দ্বিতীয়জন একনায়ক শেখ মুজিব ও তৃতীয়জন ফ্যাসিস্ট শেখ মুজিব হাসিনা।

বুধবার রাতে নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন।

পোস্টে মির্জা গালিব লেখেন, বাংলাদেশে আমাদের ৩ জন শেখ মুজিব আছে। প্রথমজন, মুক্তিযুদ্ধের নায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। যিনি ৭১-এ আমাদের মুক্তি সংগ্রামের নেতা ছিলেন, প্রেরণা ছিলেন। যিনি বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতিদের একজন।

দ্বিতীয়জন একনায়ক শেখ মুজিব, যে রক্ষীবাহিনী বানিয়ে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শুরু করেছিল। গণতন্ত্র হত্যা করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিল। আমাদের ট্র্যাজেডি, শেখ মুজিবই প্রথম সরকারপ্রধান যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে বেইমানি করে গণতন্ত্র হত্যা করেছিল।

তৃতীয়জন ফ্যাসিস্ট শেখ মুজিব, হাসিনা যারে সামনে রেখে একটা ১৫ বছরের ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারী জুলুমতন্ত্র চালিয়েছে। মুজিবের মূর্তি বানিয়ে আর চেতনা ইন্ডাস্ট্রি বিক্রি করে যে ফ্যাসিবাদ হাসিনা কায়েম করছিল। সেই ফ্যাসিবাদের কারখানায় শেখ মুজিবের মূর্তি ফ্যাসিস্ট মুজিবের মূর্তি হয়ে উঠেছে।

তিনি আরও লেখেন- ছাত্র-জনতা আগস্টের গনঅভ্যুথানে ফ্যাসিস্ট শেখ মুজিবের মূর্তি ভাঙছে। এ মূর্তি আমাদের ভেঙে গুড়ায়েই দিতে হবে। গণতন্ত্রকামী সকল মানুষের এইটাই সঠিক রাজনৈতিক কর্তব্য।

একনায়ক শেখ মুজিব এর পতনও আমাদের উদযাপন করতে হবে। আগস্টের ১৫ তারিখ শেখ মুজিবের পরিবার, বন্ধু, এবং যারা তারে ভালোবাসে/ভালোবাসত তাদের জন্য সীমাহীন বেদনার দিন। এ বেদনার প্রতি সেনসিটিভ থাইকাই বলতেছি। মুক্তিযুদ্ধের নায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কেমন করে একনায়ক শেখ মুজিব হয়ে উঠলেন আর এই ট্রাজিক পরিণতির দিকে নিজ পায়ে হেঁটে গেলেন। সেই ইতিহাস চর্চা যদি আমরা না করি। তাহলে আমরা কোনোদিনও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বানাতে পারব না। ইনফ্যাক্ট, এই চর্চা আমাদের মিডিয়া আর সিভিল সোসাইটিতে ছিল না বলে হাসিনা আমাদের দেশকে একটা ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারী জুলুমতন্ত্র বানিয়ে ফেলতে পারছিল।

হাসিনার এই ফ্যাসিজমের পরেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আমাদের ইতিহাসে শ্রদ্ধার সাথে থেকে যাবেন। বাংলাদেশের অন্যতম (অনেকের মধ্যে একজন, একলা না) ফাউন্ডিং ফাদার হিসেবেই থেকে যাবেন। আমরাই রাখবো তারে। আমরা ২৬ মার্চ আর ১৬ ডিসেম্বর শ্রদ্ধার সাথে বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করব। কিন্তু আগস্টে আমাদের রাজনৈতিক কর্তব্য হল এইটা বোঝা যে, কেমনে বিপ্লবের পরে/অভ্যুত্থানের পরে/ স্বাধীনতার পরে নায়করা ভিলেন হয়ে উঠে আর পতনের রাস্তায় হেঁটে যায়। আর পতিত একনায়ক কে সমালোচনা না করে, ইনডেমনিটি দিয়ে মাথার ওপরে উঠলে কেমনে ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারের জন্ম হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here