বাংলাদেশে সরকারের লোকেরা সহিংসতা উস্কে দেওয়ার ঝুঁকি নিচ্ছে: এইচআরডাব্লিউ

বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ০৯ অক্টোবর “শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ” আয়োজন করেছিল। সেখানে একজন সরকারি কর্মকর্তা রাশিয়ান ইউরেনিয়ামের সাম্প্রতিক আমদানির বিষয়ে কথিত সমালোচনার জবাব দিতে গিয়ে বিরোধী সদস্যদের “মাথায় রাশিয়ান ইউরেনিয়াম ঢেলে দেওয়ার” হুমকি দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “ডান্ডা মেরে ঠান্ডা করব না। তাদের মাথায় ইউরেনিয়াম ঢেলে ঠান্ডা করে দেব।”

বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতাদের মুখে সহিংসতার হুমকি সাধারণ বিষয় এবং তারা প্রায়ই হামলার প্ররোচনা দিয়ে থাকেন। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডাব্লিউ) এর এশিয়া ডিভিশন এবং গ্লোবাল হেলথ ইনিশিয়েটিভ এর সিনিয়র রিসার্চার জুলিয়া ব্লেকনার এক নিবন্ধে এমন মন্তব্য করেছেন। নিবন্ধটি এইচআরডাব্লিউ এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে (১৯ অক্টোবর) প্রকাশিত হয়েছে। জুলিয়া লিখেছেনঃ

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে এক মন্ত্রী সতর্ক করে বলেছিলেন, “কেউ হুমকি দিলে কী করতে হবে আওয়ামী লীগ সেটা জানে।” যদিও (সরকারি) কর্তৃপক্ষ সমালোচক এবং বিরোধী সদস্যদের বিচার করার বিষয়ে তৎপর, কিন্তু সহিংসতা উসকে দেওয়ার জন্য ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের বিচার করা হয় না।

এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সহিংসতার হুমকি দিয়েছেন। গত বছর তিনি বলেছিলেন বিরোধী নেতাদের “পদ্মা সেতুতে নিয়ে গিয়ে নদীতে ফেলে দেওয়া উচিত।” ২০২২ সালের ডিসেম্বরের বিক্ষোভের আগে, শেখ হাসিনা তার দলের সদস্যদের নির্দেশ দিয়ে বলেছিলেন “আমাদের বিরুদ্ধে যে হাত তোলা হবে তা ভেঙে ফেলতে হবে।” প্রধান বিরোধী দলের নেত্রী খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার আহ্বানের প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি বিলাপ করে বলেছেন, “তার বয়স তো ৮০’র উপরে। সময় হয়ে গেছে।”

এই ধরনের বিবৃতিগুলো বাকস্বাধীনতাকে আরও ঠান্ডা করে দিতে সফল হয়েছে যখন বাংলাদেশ দ্রুতই জাতীয় নির্বাচনের কাছাকাছি চলে আসছে। যে দেশে নির্বাচনী সহিংসতার বেশিরভাগই দলীয় সমর্থকদের দ্বারা ঘটে থাকে, সে দেশে দলের নেতাদের এই ধরনের হুমকি আরও বেশি করে হামলার দিকে নিয়ে যেতে সাহায্য করতে পারে। বাংলাদেশে নির্বাচনী সহিংসতায় শত শত মানুষ মারা গেছে।

শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য বারবার নিজের দেওয়া প্রতিশ্রুতির ব্যাপারে সরকার যদি আন্তরিক হয়, তাহলে (সরকার) দলীয় নেতারা সহিংসতার হুমকি কমিয়ে, শান্তিপূর্ণ অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের সূচনা করতে পারেন।