‘বিএনপির কর্মীরা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে’ বলে ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে যে অভিযোগ করা হয়েছে এটিকে অবিশ্বাস্য বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, ‘দখলদারিত্ব রাজনীতির মধ্যে বিএনপির কর্মীরা আওয়ামী লীগের ওপর হামলা করেছে এ কথা এখন কে বিশ্বাস করবে?’
আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ কি এতই বোকা যে আওয়ামী লীগের ওপর বিএনপি হামলা করেছে এ কথা বিশ্বাস করবে? দেশে যে রাজনীতি, পরিবেশ, অবস্থা চলছে, যে দখলদারিত্ব, খবরদারির রাজনীতি চলছে, এরমধ্যে বিএনপির কেউ আওয়ামী লীগকে আক্রমণ করেছে এ কথা দেশের কোনো একটা মানুষ বিশ্বাস করবে? বিশ্বাস করার কোনো কারণ আছে? আপনাকে মারবে আবার আপনার বিরুদ্ধে মামলাও দেবে। এটাই এখন বাংলাদেশের নতুন নিয়ম। আগে পিটাবে, তারপর মামলা দেবে।’
নির্বাচন কমিশনে অভিযোগের বিষয়ে বিএনপির অন্যতম এই নীতি নির্ধারক বলেন, ‘এমন কোনো আচরণ নেই যেটা সরকার পক্ষের প্রার্থীরা লঙ্ঘন করেনি। আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা ফুটপাত দখল করে অফিস বানাচ্ছে। ঢাকা শহরে শত শত নির্বাচনি অফিস করেছেন। আমার বাসার আশপাশে কমপক্ষে পাঁচটি আছে। যত্রতত্র উচ্চস্বরে মাইক ব্যবহার করছেন, নির্বাচনি পোস্টারের সাইজ বড় করে ছাপিয়ে তা ব্যবহার করছেন। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড কোথায় তাহলে? কিছুই মানছে না তারা। এই যে না মানার প্রবৃত্তি, এটা থেকে যে নির্বাচনের দিন তারা বেরিয়ে আসবে, তা মনে করার তো কোনো কারণ নেই।’
পর্যবেক্ষক সংস্থা সব আওয়ামী লীগের দলীয়–এমন দাবি করে আমির খসরু বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনে কানাডিয়ান এক পর্যবেক্ষককে ধরে আনা হলো। সে এখানে এক কথা বললেও বিদেশে গিয়ে আরেক কথা বললো। সেই পর্যবেক্ষক সংস্থার যিনি স্বত্বাধিকারী, তিনি একটি সংগঠনের সভাপতি ও আরেকটি সংঠনের প্রধান নির্বাহী। দুটি সংস্থাই কিন্তু তালিকায় আছে। দুটিরই পৃষ্ঠপোষক আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও দলের লোক। আর বাকি যারা আছে তালিকায় তাদের ২২টির মধ্যে ১৮টি সংস্থার কোনো ওয়েবসাইটই নেই। তাদের অধিকাংশকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। তাদের কোনো জনবল নেই এবং সেখানে বেশিরভাগই দলীয়। তারা সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত বলবে, খুব সুষ্ঠু নির্বাচন হচ্ছে। তাদের তো এর বাইরে কিছু বলার সুযোগ নেই।’
ইসির সাথে বৈঠকে ইভিএম এবং বিএনপি প্রার্থীর নিরাপত্তা নিয়েও কথা হয়েছে জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘সিইসি বলেছেন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফুটপাতের অফিস ভেঙে দেয়া হবে, পোস্টার নামিয়ে দেয়া হবে। আর আইনবহির্ভূত মাইকিং তারা বন্ধ করবেন বলে জানিয়েছেন।’
এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।