![](https://images.prothomalo.com/prothomalo-bangla%2F2024-05%2Faebb66b4-d5b1-4558-87d1-7d6f7951c8d1%2F14052024-cm-5.jpg?auto=format%2Ccompress&fmt=webp)
আইএমএফের সঙ্গে অংশীদারত্বের মধ্যেই টানা ২২ মাস থেকে বাংলাদেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি চলছে, দেশের অর্থনৈতিক সংকটও যাচ্ছে না। কেন? ভুল সময়ে ভুল নীতির বাস্তবায়ন এবং আইএমএফের ছাড় দেওয়ার মানসিকতা এ জন্য দায়ী বলে প্রতীয়মান হয়। প্রশ্ন হচ্ছে, দেউলিয়া হওয়ার মাত্র ৬ থেকে ৯ মাসের মধ্যেই শ্রীলঙ্কা সামষ্টিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফেরাতে পারলেও বাংলাদেশ পারছে না কেন?
আইএমএফের ঋণের প্রথম কিস্তি ছাড়ের এক বছর পার হলেও মূল্যস্ফীতির অতি উচ্চ হার, ডলারের বাজারে অস্থিরতা, রিজার্ভের পতন চলছে। ব্যাংকে তারল্য–সংকট, মালিকানা হস্তান্তর, দুর্বল ব্যাংকগুলোর একীভূতকরণে সমস্যা, খেলাপি ঋণ সংকটের কূলকিনারা হচ্ছে না।
সংকটের মধ্যেও সরকারের পরিচালনা ব্যয়ে সংকোচন আসেনি। বাজেট–ঘাটতি কমানো হয়নি, সরকারের অভ্যন্তরীণ ঋণ থামেনি (ব্যাংকঋণ, সঞ্চয়পত্র ঋণ, অর্থ ছাপানো, উন্নয়ন খাতের মিলিত ঋণ)।
অর্থবছরের তিন প্রান্তিকের শেষে বার্ষিক উন্নয়ন বাজেটে বাস্তবায়ন মাত্র ৩০ শতাংশের ঘরে থমকে ছিল। রাজস্ব আয় দিয়ে সরকার উন্নয়নকাজ বাদ দিয়ে শুধু পরিচালনা ব্যয় করা হচ্ছে। সুশাসন ফেরাতে আইএমএফের সঙ্গে দেনদরবারের প্রভাব দৃশ্যমান নয়। গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, সংস্কার প্রস্তাবগুলোর বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় বেশ কিছু ক্ষেত্রে ভুল।
ক্রলিং পেগ পদ্ধতি বাস্তবায়নের (অন্তত দেড় বছর আগে করা উচিত ছিল) মাধ্যমে ডলারের বিপরীতে টাকার দাম পড়তে দেওয়া হয়েছে ভুল সময়ে। সুদের হার বেড়ে যাওয়ার পরও নীতি সুদহার বাড়ানো হয়েছে। ধাপে ধাপে না এগিয়ে ‘সাডেন শকে’ যাওয়া হয়েছে।
ডলারের একক রেট সময়মতো বাস্তবায়ন করা হয়নি। ডলারের বিপরীতে টাকাকে প্রকৃত বিনিময় মূল্য বা ‘আরইইআর’–এর কাছাকাছি নেওয়া হয়নি সঠিক সময়ে। অন্তত এক বছর পর এসে টাকার মান একলাফে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ পড়তে দেওয়ায় স্থানীয় মুদ্রায় বৈদেশিক ঋণের মোট স্থিতি বেড়ে গেছে প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা। ডলারের মূল্য ৭ টাকা বৃদ্ধিতে সরকারের মূল বোঝা বিদ্যুৎ খাতের ক্যাপাসিটি চার্জ; সার ও জ্বালানিসহ যাবতীয় আমদানি এবং বিশেষভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় বাড়বে। ফলে দেশ নতুন দফায় মূল্যস্ফীতি প্রত্যক্ষ করবে।
আমানত-সঞ্চয়ে সুদের হারও মূল্যস্ফীতির কাছাকাছি নেওয়া হয়নি সঠিক সময়। ঋণের সুদহার নির্ধারণে তথাকথিত স্মার্ট পদ্ধতি চাপিয়ে দিয়ে দুই অঙ্কের মূল্যস্ফীতির কালে এক অঙ্কের সুদে ঋণ বিতরণ করে বড় শিল্পপতিদের পুরোনো ঋণ ফিরিয়ে নতুন ঋণ দেওয়ার পথ তৈরি করা হয়েছে।
এতে ঋণ অদলবদল ও পাচার বেড়েছে কিন্তু নতুন বিনিয়োগ হয়নি। ব্যাংকিং খাতে বড় বড় ঋণ জালিয়াতি এবং খেলাপি ঋণের পাশাপাশি অতি দীর্ঘ সময় সঞ্চয়কারীদের ঠকানো হয়েছে বলে তারল্য–সংকটও দীর্ঘায়িত হয়েছে।
আইএমএফের শর্তে এক অঙ্কের খেলাপি ঋণের হারের কথা বলা হয়েছে, সেটা বাস্তবায়নে সরকার আবারও ভয়ানক সব পথ ধরেছে। ঋণ পুনঃ তফসিল (রিশিডিউল), রাইটঅফ, প্রভাবশালীদের সুদ মাফ করা হচ্ছে বিলিয়ন ডলার পর্যায়ে। আইএমএফের সঙ্গে নানা শর্তে আবদ্ধ থাকা অবস্থাতেই নতুন করে ব্যাংকিং মালিকানা বেহাত হয়েছে (ন্যাশনাল ব্যাংক)। খেলাপি ঋণ ফেরানোর উদ্যোগ না নিয়ে, শাস্তি না দিয়ে উল্টো তারল্য–সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোকে দিনে ৫–১০ হাজার কোটি টাকা বা এরও বেশি অর্থ ধার দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে একাধিকবার।
বিগত ছয় মাসে অন্তত দুটি প্রভাবশালী শিল্প গ্রুপকে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা ঋণ মওকুফ করেছে জনতা ব্যাংক। এসব ক্ষেত্রে আইএমএফের সুস্পষ্ট কোনো চাপ দেখা যায়নি। অংশীদারত্বের এক বছরেই সরকারি ব্যাংকগুলোর (সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী) খেলাপি ঋণ বেড়ে প্রায় ৬৩ হাজার কোটি টাকা হয়েছে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, আইএমএফ ঋণের প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তি ছাড়ের পরের এক বছরেও শীর্ষ কোনো ঋণখেলাপিকে আইনের আওতায় আনার ঘটনা ঘটেনি। ফলে বোঝাই যাচ্ছে, আইএমএফ সামষ্টিক অর্থনীতির মৌলিক সমস্যার ‘রুট-কজ’ সমাধান করতে কাজ করছে না।
উপরন্তু সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বা ম্যাক্রোইকোনমিক স্থিতিশীলতা ফেরানোর মৌলিক উপাদানগুলোতে হাত দেওয়ার আগেই ‘স্টেট ওয়েলফেয়ার এক্সপেন্ডিচার’ বা রাষ্ট্রীয় জনকল্যাণ খাতে ভর্তুকি কমানোতে এমন সব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যার ফলে শুরুতেই মূল্যস্ফীতি বেড়ে গেছে।
অর্থাৎ ৬-৯ সুদের হার দীর্ঘ সময় বজায় রাখা; অর্থ পাচার বা ক্যাপিটাল ফ্লাইট বন্ধ; রিজার্ভ মানি ইনজেক্ট বা টাকা ছাপানো বন্ধ; লোকসানি সরকারি কোম্পানি এবং বেসরকারি দুর্বৃত্ত কোম্পানির অনুকূলে বন্ড ছাড়া বন্ধ, অর্থাৎ ক্যাপিটাল ফ্লো মেকানিজম বন্ধ করার সুস্পষ্ট পদক্ষেপ নেওয়ার আগেই মূল্যস্ফীতি কমাতে গণবিরোধী পদক্ষেপ এসেছে।
আইএমএফের সঙ্গে যুক্ততার শুরু থেকেই ক্রমাগত বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বাড়াতে আমদানিতে শুল্ক ও করছাড় হ্রাসে ক্রমাগত চাপ এসেছে। শূন্য ভর্তুকির মিশনে বিদ্যুৎ-জ্বালানির মূল্য এ সময়ে অন্তত আট দফা বৃদ্ধি করে মানুষের জীবনযাত্রাকে অস্থিতিশীল করা হয়েছে। সঙ্গে চলছে আমদানিতে শুল্কছাড় বন্ধ, রেসট্রিকটিভ ডিউটি (আরডি) বৃদ্ধি ও ভ্যাট বৃদ্ধির প্রক্রিয়া। অর্থাৎ মূল্যস্ফীতি তৈরির চার-পাঁচটি বড় উপাদানকে একসঙ্গে প্রয়োগ করা হয়েছে, যা মানুষকে দারিদ্র্যের মুখে ঠেলে দিয়েছে।
দেশে নতুন দারিদ্র্য তৈরি হচ্ছে, বিশেষভাবে নগর দারিদ্র্য ও জ্বালানি দারিদ্র্য গরিব ও মধ্যবিত্ত জীবনকে বিষিয়ে তুলেছে। এ সময় কৌশলগত অর্থনৈতিক পণ্য হিসেবে সার, ডিজেল ও বিদ্যুতের দাম বেড়ে কৃষি ও কৃষি উপখাতের উৎপাদন মূল্য ব্যাপকভাবে বেড়ে ক্ষুধা ও পুষ্টির সংকট সর্বত্র ছড়িয়ে দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে বিগত ছয় মাস বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ প্রাথমিক জ্বালানির দাম স্থিতিশীল রয়েছে কিংবা কমছে। কিন্তু আইএমএফের চাপে চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্যেও জ্বালানি ও বিদ্যুতের দাম না কমিয়ে উল্টো বাড়ানোর প্রক্রিয়াটি স্ববিরোধী। নভেম্বর ’২২ থেকে জুলাই ’২৩ সময়কালে জ্বালানির মূল্য প্রায় ৬২ শতাংশ বাড়ানোর পর থেকেই বাংলাদেশের চলমান মূল্যস্ফীতির শুরু।
নীতিগত ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতার অভাব এবং প্রত্যক্ষ দ্বিচারিতা বাংলাদেশের সামস্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে না বলেই আশঙ্কা আছে। মনে রাখা দরকার, মূল্যস্ফীতি তৈরির সব কটি অ্যাকসিলারেটরে একসঙ্গে চাপ দেওয়া যায় না, এখানে যৌক্তিক ধারাবাহিকতা মানতে হবে।
ক্রলিং পেগ পদ্ধতি চালু করে ভুল সময়ে টাকার অবমূল্যায়নের মাধ্যমে মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরা যাবে না। কারণ—
১. গত দুই বছরে ‘নিউ মানি ইনজেকশনের’ বা নতুন মুদ্রা বাজারে ছাড়ার প্রভাবে উচ্চ মূল্যস্ফীতি চালু থাকবে, অর্থাৎ ছাপানো টাকার গুণপ্রবাহ (ফ্লো ইফেক্ট) চলছে।
২. মানহীন এলসি বা ঋণপত্রের নিয়ন্ত্রণের কারণে মূল্যস্ফীতি থাকবে (দরকারি এলসি বন্ধ, অদরকারি এলসি খোলা হচ্ছে)। বেসরকারি ব্যাংকে এলসির জন্য ডলারের দর আগে থেকে ১১৭ টাকা থাকলেও প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা সরকারি ব্যাংকের ১১০ টাকায় ডলারের সুবিধা ভোগ করছিল, ফলে বর্ধিত আমদানি ব্যয় মূল্যস্ফীতি বাড়াবে।
৩. বছরে চারবার করে তিন বছরে বিদ্যুতের ১২ দফা মূল্যবৃদ্ধির পরিকল্পনায় মূল্যস্ফীতি বাড়বে।
৪. মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির যৌক্তিক প্রত্যাশাও বাজারে মূল্য বাড়াবে।
বিদ্যুৎ খাতকে কেন্দ্র করে আইএমএফের ভর্তুকি কমানোর নীতি বিপর্যয় ঘটাচ্ছে। কারণ, নীতিগুলো গবেষণাভিত্তিক নয়। বাস্তবে জ্বালানিতে বাংলাদেশ বরং বিলিয়ন ডলার আয় করছে।
বিদ্যুৎ খাতের ভর্তুকি রাজনৈতিকভাবে দুর্বৃত্তায়িত বড় পরিসরের দুর্নীতি, ক্যাপাসিটি চার্জ, ত্রুটিপূর্ণ বিদ্যুৎকেন্দ্র, জ্বালানি অদক্ষ বিদ্যুৎকেন্দ্র, মেয়াদোত্তীর্ণ বিদ্যুৎকেন্দ্র নবায়ন এবং সিস্টেম লসের মিলিত ফল।
২০২৩ সালে করা ইউনিটপ্রতি বিদ্যুৎ উৎপাদনের সরকারি তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৩ থেকে ২৫ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন ইউনিট যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে অচল হয়েও ক্যাপাসিটি চার্জ ও ওভারহোলিং চার্জ হিসেবে ভর্তুকি পেয়েছে। আরও প্রায় ২৫ শতাংশ বিদ্যুৎকেন্দ্র জ্বালানির কারণে অনুৎপাদনশীল থেকেও ভর্তুকি পেয়েছে।
দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা অলস বসে থাকলেও বিদেশ থেকে বিলিয়ন ডলারের বিদ্যুৎ কিনে ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে। এসব নিয়ে আইএমএফের কোনো ‘পলিসি প্রপোজাল’ নেই।
উৎসে ভর্তুকি কমানোর চাপ না দিয়ে কেবল বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির আইএমএফের ফর্মুলা কাজ করছে না। আইএমএফ ঋণের উল্লেখযোগ্য অংশই দুর্নীতির খেসারতে ব্যয় হচ্ছে। সামষ্টিক অর্থনীতিতে সুফল তাতে আসছে না; বরং শর্তের বেড়াজালে ব্যয় বেড়ে জীবনযাত্রা ঠিকই দুর্বিষহ হয়েছে।
আইএমএফের সঙ্গে যুক্ততার এই এক থেকে দেড় বছরে সরকার এখন পর্যন্ত এলসির মান নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করতে পারছে না। এখনো প্রভাবশালীরা এবং সরকারের বিভিন্ন সংস্থা মিথ্যা এলসি করে অর্থ পাচার করছে; আন্ডার ও ওভার ইনভয়েসিংয়ের খবর নিয়মিতই পত্রিকায় আসছে।
দেখা গেছে, আইএমএফের পলিসিতে ছাড়ের মানসিকতা প্রবল। দ্বিতীয় কিস্তির অর্থছাড়ের সময় বাংলাদেশ তিনটি প্রধান শর্ত (বিনিময় হার, রিজার্ভ সংরক্ষণ ও খেলাপি ঋণের হার) পূরণে ব্যর্থ হলেও কিস্তির অর্থ পেয়েছে। অথচ একই কারণে অন্য দেশে কিস্তি ছাড়ে বিলম্ব হয়েছে।
ডলার–সংকটেও বাংলাদেশ আমদানি সংকোচন করে ফরেন ডেট সার্ভিসিং (বৈদেশিক ঋণের সুদ-আসল পরিশোধ) নিয়মিত রেখেছে। হতে পারে সে জন্য আইএমএফ এখানে নিজের নীতিতে ছাড় দিয়ে সরকারের শর্তের সঙ্গে সমন্বয় করে ‘লেন্ডিং বিজনেস’ বা ধারের ব্যবসা করার প্রকল্প নিয়েছে। তৃতীয় কিস্তিতে উল্টো আইএমএফ আগের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রাই কমিয়ে দিয়েছে।
২০২৪ সালের জুনে রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যর্থ হচ্ছে বলে রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা ১৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়নে নামিয়েছে আইএমএফ।
বাংলাদেশের বড় সমস্যা তথ্য বিকৃতি, এখানে আইএমএফ নির্বিকার। আইএমএফ পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী প্রকৃত খেলাপি ঋণ সরকারি সংখ্যার দ্বিগুণ। জনসংখ্যার তথ্যে ঘাপলা আছে বলে মাথাপিছু আয়ের তথ্যেও বিভ্রাট আছে। টাকার নতুন বিনিময় মূল্যে (৬ দশমিক ৩ শতাংশ পতন) ডলারে জিডিপির মান সমন্বয় করবে কি না, এ প্রশ্নের উত্তর নেই।
দেড় বছরে টাকার মূল্য ২৫ শতাংশ কমেছে কিন্তু জিডিপির আকার ডলারে সমন্বয় হয়নি। বলা হয়, বিবিএস স্থির মূল্য জিডিপি বা রিয়েল জিডিপির হিসাব টাকাতেই করে, এখানে মূল্যস্ফীতির হার দিয়ে চলতি মূল্যকে বিস্ফীত (ডিফ্লেট) করা হয় বলে এটা সম্পূর্ণভাবে মূল্যস্ফীতিমুক্ত হয়।
অথচ গত এক বছরে মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৯ শতাংশ কিন্তু ডলারের বিপরীতে টাকার অবনমন হয়েছে ২৫ শতাংশ। সুতরাং বিস্ফীত করার পর ডলারের হিসাবে স্থির মূল্যের জিডিপির আকার কমার কথা। দেড় বছরে টাকার মূল্যমান প্রায় ৩০ শতাংশ কমলেও সরকার ঠিকই ডলারের হিসাবে মাথাপিছু আয় বাড়িয়ে চলেছে। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতির কিছুই অর্জিত হচ্ছে না এবং দেশের বৈদেশিক ঋণের বোঝা ঠিকই বাড়ছে।
- ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব টেকসই উন্নয়নবিষয়ক লেখক।
- prothom alo