শ্রীরাধা দত্ত : অর্থনৈতিক সমস্যাই এখন বাংলাদেশের জন্য বড় সমস্যা। কারণ, এ দেশের অর্থনীতির জন্য অনেক চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ব্যাংকে তারল্য সংকট, ডলারের ঘাটতি, ডলারের দুই ধরনের দর ইত্যাদি।
পরিসংখ্যান বলছে, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীদের ৭৭ শতাংশ ছিলেন ব্যবসায়ী। তাদের এর আগে নানা ধরনের সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এবারও অনেক ব্যবসায়ী সংসদ সদস্য হয়েছেন। এই জায়গায় চ্যালেঞ্জ রয়েছে।
বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো আগে যেসব সুবিধা নিয়েছে, আবারও তারা সেই সুবিধা নিতে চাইবে। পুরো জিনিসটা ঘোলাটে হয়ে আছে।
বাংলদেশকে ঋণ দেওয়ার সময় আইএমএফ বলেছিল, অর্থনৈতিক সংস্কার ছাড়া ঋণ দেবে না। বাংলাদেশ আবারও ঋণ চেয়েছে। দৃশ্যত, বাংলাদেশের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র একটু কড়া অবস্থায় আছে। তারা নির্বাচনকে একেবারে অগ্রাহ্য করেনি, তবু একটু হলেও সমস্যা তারা করতে পারে। তার মানে এই নয়, তারা বাংলাদেশ থেকে পোশাক কেনা বন্ধ করে দেবে। নতুন সরকারকে অবশ্যই এসব বিষয়ে নজর দিতে হবে।
করোনা মহামারি, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ– এগুলো অন্য ধরনের সমস্যা। আর বাংলাদেশে যেসব সমস্যা তৈরি হয়েছে, সেগুলো নিজেদের তৈরি। আমদানিতে সংকটের বিষয় আছে। ভারত হয়তো কিছুটা সহায়তা দেবে, চীন আরও ঋণ দেবে। কিন্তু শ্রীলঙ্কার উদাহরণ তো সবার জানা। ভবিষ্যতে চীন আরও প্রভাব বিস্তার করতে চাইবে। কারণ, নির্বাচনের আগে সরকারের পক্ষে তারা যেভাবে কথা বলেছে, আগে কখনও সেভাবে বলেনি। কর্ণফুলী টানেল ব্যবস্থাপনায় মাসিক ব্যয় ৩৪ লাখ টাকা। অথচ টানেল থেকে মাসিক আয় ৪ লাখ টাকাও না! ব্যয়বহুল আরও কিছু প্রকল্পে এমন সমস্যা রয়েছে। এসব দিক থেকেও বাংলাদেশ চাপে পড়তে পারে। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জটা বাংলাদেশের সামনে প্রকট। সেই চ্যালেঞ্জ খুব শক্ত হাতে সরকারকে মোকাবিলা করতে হবে। আর এটি করতে পারলে অন্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা সহজ হয়ে যাবে।
লেখক : অধ্যাপক, জিন্দাল গ্লোবাল ইউনিভার্সিটি, ভারত ও সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সিনিয়র রিসার্চ ফেলো