টি–টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ নবম। যুক্তরাষ্ট্র ১৯তম। প্রথমটি টেস্ট খেলুড়ে, পরেরটি আইসিসির সহযোগী দেশ। দুটি দলই খেলবে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। এখন এই দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্র যদি একটি ম্যাচও জেতে, তবে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভালো করতে সেটাই দলটির বড় প্রেরণা হওয়ার কথা।
কিন্তু চলতি সিরিজে যুক্তরাষ্ট্র জিতেছে টানা দুই ম্যাচ। একটু অবাক করা ব্যাপার হলো, যুক্তরাষ্ট্রের অধিনায়ক মোনাঙ্ক প্যাটেল এখনই ওসব প্রেরণা নেওয়ার দিকে যাচ্ছেন না। মোনাঙ্ক সিরিজে সব ম্যাচই জিততে চান। তাহলে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যুক্তরাষ্ট্র ভালো করার আসল প্রেরণাটা পাবে বলে মনে করেন মোনাঙ্ক।
হিউস্টনের প্রেইরি ভিউ ক্রিকেট কমপ্লেক্সে গত মঙ্গলবার টি–টোয়েন্টি সিরিজে প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশকে ৫ উইকেটে হারায় যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল একই ভেন্যুতে দ্বিতীয় ম্যাচে ৬ রানে জিতে সিরিজ জয়ও নিশ্চিত করেছে স্বাগতিকেরা। তিন ম্যাচের এই সিরিজে তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল। এটাও জেতার সংকল্পটা গতকাল দ্বিতীয় ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনেই জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র অধিনায়ক। তবে তাঁর কথাটা খেয়াল করলেই বোঝা যায়, অল্পতে তুষ্ট হওয়ার মানুষ মোনাঙ্ক নন। তাঁর চোখ আরও দূরে। সে জন্য টেস্ট খেলুড়ে কোনো দলকে এক–দুই ম্যাচে হারিয়েই প্রেরণা পেতে চান না। জিততে চান সব ম্যাচই। আর তিন ম্যাচের সিরিজে প্রথম দুই ম্যাচ জেতার পর যেকোনো অধিনায়কই তো শেষটাও জিততে চাইবেন।
মোনাঙ্ক বলেছেন, ‘আমরা যদি (শনিবার) জিততে পারি, প্রেরণা নিয়েই বিশ্বকাপে যেতে পারব। এটা অবশ্যই আমাদের সাহায্য করবে।’
বাংলাদেশের একটু বয়স্ক ক্রিকেটপ্রেমীরা মোনাঙ্কের এই কথা শুনে একটি পার্থক্য খুঁজে নিতে পারেন। কয়েক বছর আগেও বড় কোনো দলের বিপক্ষে সিরিজে একটি ম্যাচ জিতেই সন্তুষ্ট থাকত বাংলাদেশ দল। যুক্তরাষ্ট্র সে তুলনায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বেশি দিন আসেনি। কিন্তু দলটির অধিনায়কের এমন মানসিকতা ইতিবাচকভাবে একটু চমকে দেওয়ার মতোই।
মোনাঙ্ক ওই কথাটা বলার আগে দলের খেলোয়াড়দের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। বোলারদের প্রশংসা করেছেন পাওয়ারপ্লে ও শেষ ৫ ওভারে দুর্দান্ত বোলিংয়ের জন্য। পাওয়ারপ্লেতে ২ উইকেটে ৪৩ রান তুলেছে বাংলাদেশ। দুই ওপেনার সৌম্য সরকার ও তানজিদ হাসান ফিরেছেন ওই সময়ে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বোলাররা এর চেয়েও ভালো বোলিং করেছেন বাংলাদেশের ইনিংসে শেষ ৫ ওভারে। হাতে ৫ উইকেট রেখে জয়ের জন্য শেষ ৫ ওভারে ৩৮ রান দরকার ছিল বাংলাদেশের।
বাংলাদেশ পুরো ২০ ওভারই খেলতে পারেনি। ১৯.৩ ওভারে ১৩৮ রানে অলআউট হয়েছে। অর্থাৎ ইনিংসের শেষ ২৭ বলে (৪.৩ ওভার) উঠেছে মাত্র ৩১ রান, পড়েছে শেষ ৫টি উইকেট। বোলারদের প্রশংসা করে তাই মোনাঙ্ক বলেছেন, ‘আমাদের বোলাররা খুব ভালো করেছে। আমরা লড়াইয়ের মানসিকতা নিয়ে খেলেছি। ছেলেদের জন্য সত্যিই গর্ব হচ্ছে। পাওয়ারপ্লে এবং শেষ পাঁচ ওভারে আমাদের বোলাররা যেভাবে বোলিং করেছে, আমরা কন্ডিশনটা ভালোভাবে ব্যবহার করতে পেরেছি এবং তারা (বোলার) সঠিক সময়ে উইকেট এনে দিয়েছে।’
মোনাঙ্ক যে সঠিক সময়ের কথা বলেছেন সেটি শেষ ৫ ওভারের একটি চিত্র দিয়ে বুঝিয়ে দেওয়া যায়। ১৬.৫ ওভার পর্যন্তও ক্রিজে ছিলেন সাকিব আল হাসান ও জাকের আলী। তখন প্রয়োজন ছিল ১৯ বলে ২১ রান। অর্থাৎ উইকেট ফেলতে না পারলে এই ম্যাচ যুক্তরাষ্ট্রের জেতার কোনো সুযোগ ছিল না। বোলাররা সেটাই করেছেন। ১৬.৫ ওভার থেকে পরবর্তী ৫ বলের মধ্যে পড়েছে ৩ উইকেট। ১টি রান এসেছে, সেটাও ওয়াইডে! ১৮তম ওভার শেষে সমীকরণ দাঁড়ায় ১২ বলে চাই ১৫ রান, হাতে ২ উইকেট। ৯ বলের ব্যবধানে মাত্র ৮ রানে এই ২টি উইকেট নেন যুক্তরাষ্ট্রের বোলাররা।
prothom alo