নিজস্ব প্রতিবেদক
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, আওয়ামী লীগের মধ্যে গণতন্ত্রের প্র্যাকটিস নেই। তারেক রহমান কিন্তু সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হয়েছেন ইলেকশন মাধ্যমে। তারা (আওয়ামী লীগ) দলের ভেতরে কোন ইলেকশন করতে পারছে না। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর কথাবার্তা, আচার আচরণের মনে হয় তিনি পৈতৃকসূত্রে সবকিছুর মালিক। তারা দুই বোন, আরেক বোন বলে, আমি কি? আমি কি বাপের মেয়ে না? এই দ্বন্দ্বটা কেন? যদি গণতন্ত্র বিশ্বাস করতেন , জনগণের ভাবনায় বিশ্বাস করতেন, তাহলে তাদের এ নিয়ে ঝগড়া লাগতো না। তারা মনে করেন দেশটা পৈত্রিক ভাবে তাদের প্রাপ্য। এই কারণে ওয়ারিশ নিয়ে তাদের দ্বন্দ্ব।
মঙ্গলবার নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নীচতলায় তারেক রহমানের ৫৬তম জন্মদিন উপলক্ষে তাঁর সুস্বাস্থ্য, সাফল্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে মহানগর দক্ষিণ শ্রমিক দল।
বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, আপনারা অনেকেই বলেন আগামী দিনের নেতা তারেক রহমান। আমি আপনাদের এই কথার সাথে একমত নয়। তারেক রহমান ইতিমধ্যে তো নেতা। তারেক রহমানের সম্ভাবনা কতটুকু তা আমরা কতটুকু গুরুত্বের সাথে ভাবি তার থেকে বেশি গুরুত্বের সাথে ভাবেন আওয়ামী লীগ, শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি নাকি লাইফসাপোর্টে আছে। পুরা দেশটাই তো তিনি লাইফ সাপোর্টে রেখেছেন। এখন আলাদা আলাদাভাবে কোন ব্যক্তি, কোন দল লাইফ সাপোর্টে আছেন তার নির্ণয় করা কঠিন। কারণ দেশ টিকবে কিনা সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছে মানুষ। রক্ত দিয়ে কেনা অর্জিত বাংলাদেশ, মা-বোনের সম্ভ্রমহানি করে বাংলাদেশ। সেই বাংলাদেশ বাংলাদেশের জনগণের হাতে নাই। আপনি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আছেন, দেশটা তো আপনার হাতে নাই। আপনি তো মন্ত্রী নন, আপনি পুতুল। আপনিতো নাচেন। আপনাকে কে নাচায় তা আপনি ভালো করে জানেন। সুতরাং গণভবনে আমরা পুতুল নাচ দেখছি। কে লাইফ সাপোর্টে আছে, সেটা যদি অনুধাবন করতে পারতেন তাহলে অনেক আগের মন্ত্রিসভার ছেড়ে দিতেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, তারেক রহমানের দেশে ফিরে আসা আর গণতন্ত্র ফিরে আসা একই সূত্রে গাঁথা। আমরা যদি গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে পারি তাহলে তারেক রহমান ফিরে আসবে। এখানে কিন্তু জেল-জুলুমের ভয় না। যুদ্ধকালীন সময়ে তারেক রহমানের বয়স যখন ১০ বছর তখন তিনি বেগম খালেদা জিয়ার সাথে পাকিস্তানি মিলিটারি ক্যাম্পে বন্দি ছিলেন।
দেশ কারো একার ভাবনাচিন্তা স্বাধীন হয় নাই উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশ স্বাধীন করেছে এদেশের আপামর জনগণ। দেশের মালিক জনগণ। সুতরাং আপনার চিন্তা-ভাবনা মাথা থেকে প্রত্যাহার করবেন। দেশটা বিনা সংগ্রামে স্বাধীন হয় নাই, জনগণের অধিকার কখনো আন্দোলন সংগ্রাম ছাড়া প্রতিষ্ঠিত হয় না।
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, অনেকে বলে তারেক রহমান বিদেশ থেকে কি করবে? শেখ মুজিব জেলে ছিল, দেশ স্বাধীন হয় নাই? তারেক রহমান দেশের বাইরে থাকে গণতন্ত্র উদ্ধার হবে না এই চিন্তা আপনারা কোথায় পেলেন? তিনি তো দৃশ্যত বাইরে আছেন। কিন্তু প্রতিনিয়ত আপনার আমার অন্তরে আছে, ভাবনায় আছে, চিন্তায় আছে, চেতনায় আছে। প্রতিদিন, প্রতি মুহূর্তে তার সাথে আমরা রাজনৈতিক আলোচনা করছি। আলোচনা করে আমরা আমাদের চলার পথের কৌশল ঠিক করছি। আমরা অন্তর থেকে হৃদয় থেকে তারেক রহমানের জন্য দোয়া করি। তারেক রহমান সুস্থ হবেন দেশে ফিরবে। আগামীদিনের জাতীয়তাবাদী শক্তির নেতৃত্বসহ সশরীরে দিবেন। বাংলাদেশের গণতন্ত্র মুক্ত হবে। স্বাধীন সার্বভৌমত্ব চেতনায উজ্জীবিত হবে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শ্রমিকদলের সভাপতি কাজী মোঃ আমির খসরুর সভাপতিত্বে ও সাধারন সম্পাদক মাহবুব আলম বাদল এর সঞ্চালনায় দোয়া মাহফিলে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক ও দফতরের চলতি দায়িত্বে থাকা সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শ্রমিকদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আনোয়ার হোসাইন, দক্ষিণ শ্রমিক দলের সিনিয়র সহ সভাপতি সুমন ভূঁইয়া প্রমুখ।