অবিলম্বে ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যুক্তরাজ্য সরকারকে একটি খোলা চিঠি লিখেছেন দেশটির প্রায় ৬০ জন লেবার এমপি। তারা গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনকে ‘জাতিগত নির্মূল’ বলে বর্ণনা করেছেন এবং এটি বন্ধে ব্রিটিশ সরকারকে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে বলেছেন। শনিবার এ খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।
আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লেবার ফ্রেন্ডস অব প্যালেস্টাইন অ্যান্ড দ্য মিডিল ইস্ট আয়োজিত এই চিঠিতে মধ্যপন্থি এবং বামপন্থি উভয় ব্লকের ৫৯ জন এমপি সই করেছেন। চিঠিটি বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামির কাছে পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে এমপিরা গাজা উপত্যকার সব ফিলিস্তিনিকে রাফার ধ্বংসস্তূপে গড়ে ওঠা একটি ক্যাম্পে জোরপূর্বক স্থানান্তরের ইসরাইলি পরিকল্পনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এই পদক্ষেপ প্রতিহত করতে ইসরাইলের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানিয়েছেন তারা।
চিঠিতে বলেছেন, আমরা গভীর তৎপরতা ও উদ্বেগের সঙ্গে আপনাকে লিখছি। কারণ ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী সোমবার ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি গাজার সব ফিলিস্তিনি নাগরিককে রাফাহ শহরের ধ্বংসাবশেষে নির্মিত একটি শিবিরে জোরপূর্বক স্থানান্তর করতে চান এবং তাদের বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেবেন না।
আরও উল্লেখ করেছেন, ‘ইসরাইলি মানবাধিকার আইনজীবী মাইকেল স্ফার্ড এই পরিকল্পনাকে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের একটি কার্যকর রূপরেখা বলে আখ্যা দিয়েছেন। তার মতে, এটি মূলত গাজার জনসংখ্যাকে দক্ষিণ প্রান্তে ঠেলে সরিয়ে দেওয়ার পর তাদের উপত্যকা থেকে স্থায়ীভাবে বিতাড়নের প্রস্তুতি।’
এমপিরা স্পষ্টভাবে বলেছেন, এটিকে আরও সরলভাবে বলা যায়, এটি গাজায় জাতিগত নিধন।
এমপিরা বলেছেন, যুক্তরাজ্যকে অবশ্যই সিদ্ধান্তমূলকভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে। শুধু ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থাকে (ইউএনআরডব্লিউএ) তহবিল পুনরুদ্ধার এবং জিম্মিদের মুক্তিতে সহায়তা করেই নয়, বরং অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বসতিগুলোতে উৎপাদিত পণ্যের ওপর বাণিজ্য অবরোধ আরোপের মাধ্যমেও।
তারা চিঠিতে আরও লিখেছেন, ফিলিস্তিনকে একটি রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি না দিয়ে আমরা দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানে আমাদের নিজস্ব নীতিকে দুর্বল করছি। এই চিঠির আগেই ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পক্ষে বক্তব্য রাখেন। এই আন্তর্জাতিক অবস্থান আরও জোরালো সমর্থন পেয়েছে ব্রিটিশ এমপিদের ঐক্যবদ্ধ চিঠির মাধ্যমে।
Source: Jugantor