ফাইবার টু ফ্যাশনের রিপোর্ট : তৈরি পোশাকের রপ্তানি কমতে পারে বাংলাদেশে, বাড়তে পারে চীনে

তৈরি পোশাকের বৈশ্বিক ব্রান্ড এবং খুচরা ক্রেতারা বাংলাদেশে আগ্রহ হারাচ্ছেন। তারা এখন কম পোশাক নিতে চাইছেন। অন্যদিকে চীন থেকে তাদের এই চাহিদা বৃদ্ধির জন্য চাপ বাড়ছে। এতে চীন তার রপ্তানি আদেশ ফিরে পেতে পারে। হংকংয়ে কোয়ালিটি কন্ট্রোল এবং সরবরাহ চেইন অডিট বিষয়ক কোম্পানি কিউআইএমএ নতুন এক রিপোর্টে এ কথা বলেছে। এতে আভাস দেয়া হয় তৈরি পোশাকের রপ্তানি আদেশ দৃশ্যত কমে যেতে পারে বাংলাদেশে। অন্যদিকে চীন তা ফিরে পেতে পারে। ‘বাংলাদেশ মে লুজ, চায়না রিগেইন আরএমজি এক্সপোর্ট অর্ডারস: কিউআইএমএ স্টাডি’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে অনলাইন ফাইবার টু ফ্যাশন। রিপোর্টে বলা হয়, ২০১৯ সালের পর প্রথমবারের মতো এ বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর সময়ের মধ্যে তৈরি পোশাকের পশ্চিমা ক্রেতাদের বাংলাদেশে ইন্সপেকশন ও অডিটের দাবি বছর থেকে বছরের হিসাবে শতকরা ১০ ভাগ কমে গেছে। অন্যদিকে চীনে তা বৃদ্ধি পেয়েছে শতকরা ১৪ ভাগ।

এতে আরও বলা হয়, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বায়াররা বাংলাদেশি বস্ত্র ও পোশাক খাতের উৎস থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। বাংলাদেশের রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ডাটা বলছে, এ বছর অক্টোবরে দেশের গার্মেন্ট রপ্তানি বছর থেকে বছরের হিসাবে শতকরা প্রায় ১৪ ভাগ কমে গেছে। কমে এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩.১৬ বিলিয়ন ডলার। ২০২১ সালের আগস্টের পর এটাই মাসিক হিসাবে সর্বনিম্ন। ২০২১ সালের আগস্টে এই খাত আয় করেছিল মাত্র ২.৭৩ বিলিয়ন ডলার।
ওই রিপোর্টের তথ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভিত্তিক ক্রেতাদের মধ্যে ২০২৩ সালের প্রথম ৯ মাসে এসব পোশাক কেনার জন্য চীনকে সোর্স হিসেবে ব্যবহারের আগ্রহ দেখা দিয়েছে। ২০১৯ সালের পর প্রথমবারের মতো চীনের সরবরাহ তুলনামূলকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। যেহেতু, আর্থিক মন্দার আশঙ্কায় পশ্চিমা ক্রেতাদের মধ্যে ব্যয় হ্রাস পাচ্ছে- তাই বিভিন্ন ব্রান্ড এবং খুচরা ক্রেতারা সরবরাহকারী হিসেবে আবার সুপ্রতিষ্ঠিত উৎপাদন কাঠামোর সুবিধা নিতে চীনকে অগ্রাধিকার দিতে পারে।

কিউআইএমএ’র রিপোর্টে বাংলাদেশকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে, ভবিষ্যতে রপ্তানি ধাক্কা থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে সরবরাহে বৈচিত্র আনা উচিত। বর্তমানে কটনভিত্তিক এই তৈরি পোশাক শিল্প সুবিধা পেতে পারে মনুষ্যসৃষ্ট বস্ত্রশিল্প থেকে। এতে বলা হয়, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন যে কটন আমদানি করে তার মধ্যে বাংলাদেশের রয়েছে শতকরা ৩৪.৭ ভাগ। যেখানে নন-কটন গার্মেন্ট শতকরা মাত্র ১২ ভাগ। তৈরি পোশাক ছাড়াও জুতা, চামড়া ও গৃহস্থালির টেক্সটাইল রপ্তানির প্রচুর সম্ভাবনা আছে বাংলাদেশের।

সূত্র : মানবজমিন