প্রশ্নবিদ্ধ জাতীয় প্রবৃদ্ধি’র সুবিধা হাতে গোনা কিছু লোক পাচ্ছে : নজরুল ইসলাম খান

Daily Nayadiganta

নজরুল ইসলাম খান – ছবি : সংগৃহীত


প্রশ্নবিদ্ধ জাতীয় প্রবৃদ্ধি’র সুবিধা জনগন নয়, হাতে গোনা কিছু লোক পাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন নজরুল ইসলাম খান। বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের এক অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, `পত্রিকায় বড় বড় হেডিং হচ্ছে যে, বিশ্বের যে ক’টা দেশের প্রবৃদ্ধি বেশি হবে তার প্রধান তিনটি দেশের একটি বাংলাদেশ। আমরা খুশি হই- প্রবৃদ্ধি ভালো, অবশ্যই ভালো। কিন্তু সেই প্রবৃদ্ধি কার জন্য, সেই প্রবৃদ্ধিতে উপকৃত কে হচ্ছে- সেটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

`আমরা যখন দেখি হাতে গোনা মাত্র কিছু লোক বাংলাদেশের এই প্রবৃদ্ধির দ্বারা উপকৃত তখন আমরা লজ্জিত হই। সেই প্রবৃদ্ধি জনগনের প্রবৃদ্ধি না। আমরা জনগনের প্রবৃদ্ধি চাই। আমরা চাই যে এমন প্রবৃদ্ধি হোক যে প্রবৃদ্ধির ফসল জনগন ভোগ করবে, যে প্রবৃদ্ধির ফলে জনগনের সুখ এবং শান্তি নিশ্চিত হবে।’

দেশের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে নজরুল ইসলাম খান বলেন, `যে প্রবৃদ্ধি আমার নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্য বাড়ায়, যে প্রবুদ্ধির অর্থ সম্রাট-পাপিয়ারা লুট করে নিয়ে যায়, যে প্রবৃদ্ধির অর্থ সুইস ব্যাংকে জমা হয়, যে প্রবৃদ্ধির অর্থ দিয়ে কানাডায় বেগম পাড়া হয়, মালয়েশিয়া-থাইল্যান্ডে সেকেন্ড হোম হয় ওই প্রবৃদ্ধি জনগনের কাম্য নয়।’

`জনগন এমন প্রবৃদ্ধি চায়, যে প্রবৃদ্ধিতে জনগনের সুখ এবং শান্তি হবে। তাদের স্থায়ী সমৃদ্ধি হবে, তাদের সন্তানরা ভালোভাবে বাঁচার সুযোগ পাবে।প্রবৃদ্ধির পথে সব বাঁধা দূর করতে চাই আমরা। কারণ আমরা জনগনের জন্য শান্তি এবং সমৃদ্ধি চাই। প্রবৃদ্ধি ছাড়া জনগনের শান্তি-সমৃদ্ধি হবে না।’

তিনি বলেন, `সেই প্রবৃদ্ধির অর্জন সম্ভব হবে তখন, যথন সরকার হবে জনগনের কাছে দায়বদ্ধ, যখন সরকারকে জবাবদিহিতা করতে হবে জনগনের কা্ছে।আর যে সরকার যেই জবাবদিহিতা ও দায়বদ্ধতার মতো হবে সেই সরকার হবে জনগনের নির্বাচিত সরকার।’

`জনগনের নির্বাচিত সরকার ছাড়া জনগনের কাছে দায়বদ্ধ বা জবাবদিহিমূলক কোনো সরকার হতে পারে না। আর সেইজন্য সত্যিকার গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে।’

সরকারের ঘোষিত জাতীয় প্রবৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন তুলে নজরুল ইসলাম খান বলেন, `এশিয়ান ডেভেলমেন্টের ব্যাংক এশিয়ার ৩০ টি দেশের মানুষ কে কতটা শান্তিতে আছে, কে কতটা সুখে আছে তারও একটা গবেষণা জরিপ করেছে। সেই জরিপে বাংলাদেশের অবস্থান ৩০ এর মধ্যে ২৬। অর্থাত আমাদের চেয়ে কম সুখী লোক এই ৩০টি দেশের মাত্র চারটা দেশে।’

`তাহলে যে প্রবৃদ্ধি আমাকে সুখ দেয় না, যে প্রবৃদ্ধি আমাকে শান্তি দেয় না, সেই প্রবৃদ্ধি তো আমার প্রবৃদ্ধি না।’

তিনি বলেন,`সারা বিশ্ব করোনায় আক্রান্ত। আর বাংলাদেশ করোনার পাশাপাশি দুর্নীতি-অনাচার, দলীয়করণ, নারী নির্যাতন, শিশু নির্যাতন এবং জনগনের সব মৌলিক অধিকার হরণের যে পাপ সেই পাপের শিকার হয়েছে। সারা দেশটাকে আজকের এই অবস্থায় পৌঁছিয়েছে।’

`তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার যিনি প্রধান সেনাপতি আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা অভিযোগে অন্যায়ভাবে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এই আন্দোলনকে যারা বেগবান করবে দেশের সেই তরুন ও যুব শ্রেনীর যিনি চেতনার প্রতিভূ আমাদের নেতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেবকেও মিথ্যা মামলায় দন্ড দেয়া হয়েছে, তিনি অসুস্থ অবস্থায় দেশের বাইরে।’

এই অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাতে হলে ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে’ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীকে আরো শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান তিনি।

নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচ তলায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ধানমন্ডির ল্যাব এইড হাসপাতালে চিকিতসাধীন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আশু রোগমুক্তি কামনায় এই দোয়া মাহফিল হয়।

সংগঠনের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েলের পরিচালনায় এই দোয়া মাহফিলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, স্বেচ্ছাসেবক দলের গোলাম সারোয়ার, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, সাদরেজ জামান, ইয়াসিন আলী, ওলামা দলের শাহ নেছারুল হক প্রমূখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।