প্রধানমন্ত্রী পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে তদবির করার চেষ্টা করেছেন: নুর

logo

স্টাফ রিপোর্টার

(১৩ ঘন্টা আগে) ১৯ মে ২০২৩, শুক্রবার, ৮:২০ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ১১:২৩ অপরাহ্ন

mzamin

প্রধানমন্ত্রী ঘুরে ফিরে পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে তদবির করার জন্য চেষ্টা করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক নুর। তিনি বলেন, তার কোন রাষ্ট্রীয় সফর ছিলো না। তাও তিনি জনগণের টাকা খরচ করে জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য গিয়েছেন। এই সফরের ফলাফল ঘোড়ার ডিম।
শুক্রবার বিকালে পুরানা পল্টন দলীয় কার্যালয়ের সামনে দুর্নীতি ও দুঃশাসন বিরোধী গণসমাবেশে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

নুরুল হক নুর বলেন, জনগণের টাকা খরচ করে ঘোড়ারডিম মার্কা বিদেশি সফর আর করা যাবে না। যদি জনগণের টাকা খরচ করে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, মহিলালীগ নিয়ে পিকনিক মনে সফর করা হয় তাহলে  জনগণকে নিয়ে আমরা বিমানবন্দর ঘেরাও করব। আগামী ২৩ই মে কাতার তৃতীয় ইকোনমিক ফোরামের সম্মেলনে অংশ নিতে প্রধানমন্ত্রী যাচ্ছেন। এই সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর কোন কাজ নাই। শুধুমাত্র বিদেশিদের সঙ্গে খাতির করার জন্য, অবৈধ শাসনকে বৈধতা দেয়ার জন্য বিদেশিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, বিদেশিদের পিছনে নাকি বিরোধী দলের নেতারা ঘুরঘুর করছে। তাদের কাছে নালিশ দিয়ে বেড়াচ্ছে। অথচ ক্ষমতায় থাকতে তারা বিদেশিদের কাছে ভিক্ষারীর মত ঘুরছে।

বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য বাংলাদেশকে যেভাবে বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে, বাংলাদেশের জনগণ, সংবিধান, পররাষ্ট্রনীতি এটা সমর্থন করে না। 

ডাকসুর এই সাবেক ভিপি বলেন, বাংলাদেশ নিয়ে ছিনিমিনি খেলা, জনগণের ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলা, বাংলাদেশে বাকশাল কায়েম করা, ফ্যাসিবাদ কায়েম করা আওয়ামী লীগের এই দুঃস্বপ্ন আমরা বেচে থাকতে সফল হতে দিব না।

এখন পুরো দেশ একটা দুর্ভিক্ষের দুষ্ট চক্রের দখলে উল্লেখ করে গণঅধিকার পরিষদের সদস্যসচিব বলেন, ক্রস ফায়ার না দেয়ার কারণে প্রশাসন থেকে অনেককে বাদ দিয়েছে। অনেককে বান্দরবান, সুন্দরবন পাঠিয়েছে। এখন পুরো দেশ একটা দুর্ভিক্ষের দুষ্ট চক্রের দখলে। এই দুষ্ট চক্ররা ব্যাংক খেয়েছে, শেয়ারবাজার খেয়েছে, শিক্ষাখাত খেয়েছে, স্বাস্থ্যখাত খেয়েছে।  মিথ্যাচার আওয়ামী লীগের নেতাদের রক্তে মিশে গেছে। বাংলাদেশে পিক আওয়ারে বিদ্যুৎ প্রয়োজন ১৪ হাজার থেকে সাড়ে ১৪ হাজার মেগাওয়াট।

বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা আছে ২৫ হাজারের উপরে, তারপরও কেনো আমাদের দেশে লোডশেডিং হচ্ছে। বিদ্যুৎ খাতে বাংলাদেশে সামিট গ্রুপ, ওরিয়ন গ্রুপসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে গত ১১ বছরে জনগণের ভ্যাট-ট্যাক্সের ৯২ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে শেখ হাসিনা সরকার। প্রতি বছর এক থেকে দেড় লাখ কোটি টাকা পাচার হচ্ছে। এই টাকা কোন বিরোধী দল পাচার করছে না। অর্থপাচার করছে সরকারি দলের নেতা, আমলা আর বেনিফেসিয়ারি গ্রুপ। তাই তাদের এই অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য তারা নানাভাবে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে।

গুম,খুনের কারণে ৬ জন নিষেধাজ্ঞায় পড়েছে উল্লেখ করে নুর বলেন, যারা গুম, খুন, ভোটাধিকার হরণ করছে তারা নিজের কারণে নিষেধাজ্ঞা পড়ছে। আরও পড়বে। দেশ, জনগণের জন্য কাজ করতে গিয়ে তারা নিষেধাজ্ঞায় পড়েনি। যারা গুম,খুন, ভোটাধিকার হরনের মতো জঘন্য কাজ করবে তারা এরকম শাস্তি ভোগ করবে।

সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খান বলেন, গণঅধিকার পরিষদের এই জোয়ার দেখে লুটপাটকারীদের গায়ে জ্বালা শুরু হয়েছে। আগামীতে ১৪ সাল ১৮ সালের মতো বাংলাদেশে নির্বাচন হবে না। আগামীতে আমরা প্রতিহত করতে প্রস্তুত রয়েছি। ইতিমধ্যে আমেরিকা এই আওয়ামী লীগকে বর্জন করেছে। তিনি আমেরিকা গিয়েছিলেন। তাকে কেউ রিসিভ করতে আসেনি।

তিনি বলেন, এই নির্বাচন কমিশন যদি ভোটচোরের সহায়তা করে, তাহলে নাইজেরিয়ার ভোটচোরদের সহায়তাকারীদের  মত বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনের উপর মার্কিন স্যাংশন আসতে পারে। এই স্যাংশনেই মাথা এতো গরম, আরও স্যাংশন আসলে তো ক্ষমতায় টিকতে পারবেন না।

কূটনীতিকদের অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাতিল করে সরকার আমেরিকার সঙ্গে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। কিন্তু আমেরিকা আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র, আগামী জাতীয় নির্বাচন যাতে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়, এজন্য আমরা তাদের সহযোগিতা চায়।

গণ অধিকার পরিষদ বিএনপির সঙ্গে সারা দেশে যুগপৎ আন্দোলন করছে উল্লেখ করে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়ার প্রত্যয়ও ব্যক্ত করেন গণঅধিকার পরিষদের এই নেতা।

গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক আবু হানিফ বলেন, সরকার আবারও ১৪ এবং ১৮ সালের মতো পাতানো নির্বাচন করতে চাচ্ছে কিন্তু সেই সুযোগ আর পাবে না। কারণ জনগণ এখন সচেতন অবৈধ সরকারের যেকোন নির্বাচন রুখে দিতে জনগণ প্রস্তুতি নিচ্ছে।

গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসানের সঞ্চালনায় গণসমাবেশে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ মহানগর ও বিভিন্ন জেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন।