মুক্তাদির রশীদ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে চীন সফরে গিয়ে বাজিমাত করেছেন টাঙ্গাইলের জেলা আওয়ামী লীগ নেতা রাফিউর রহমান খান ইউসুফজাই সানি। কারণ তার অখ্যাত এক কোম্পানিসহ দুই কোম্পানির সঙ্গে ছয়টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে কয়েকটি চীনা প্রতিষ্ঠান।
জানা যায়, সানি ইবিএস গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। ছয়টি চুক্তি স্বাক্ষর করা তার ওই দুই প্রতিষ্ঠানের নাম হলো—বিলিয়ন-টেন (১০) কমিউনিকেশন লিমিটেড এবং ই.বি সলিউশন্স লিমিটেড। বিলিয়ন-১০ পুরোপুরো অখ্যাত এক কোম্পানি যার কোনো ধরনের কাজের পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই। তবে ই.বি সলিউশন্সের সফটওয়্যার সার্পোটসহ টুকটাক কিছু কাজের অভিজ্ঞতা আছে।
গত মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরের সময় বিলিয়ন-১০ কমিউনিকেশনস লিমিটেড ও ই.বি সলিউশন্স লিমিটেড চীনা বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে মোট ছয়টি এমওইউ স্বাক্ষর করে। এ চুক্তিগুলোর ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ি, নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন সেক্টরে ২৮ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে বেইজিংয়ে এই দুই কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাফিউর রহমান খান ইউসুফজাই সানি এবং চীনের বিভিন্ন ব্যবসায়িক গ্রুপের মধ্য এ এমওইউ স্বাক্ষরিত হয়।
এমওইউগুলোর আওতায় বিলিয়ন-১০ কমিউনিকেশনস লিমিটেড ও সিএইচটিসি (হেংইয়াং) ইন্টেলিজেন্ট ইভি কোম্পানি লিমিটেড বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাণ করবে। বিলিয়ন-১০ ও নিংবো সান ইস্ট সোলার কো. লি. সিলেটে একটি সোলার পার্ক স্থাপন করবে। বিলিয়ন-১০ ও হেশেং সিলিকন ইন্ডাস্ট্রি কোম্পানি লিমিটেড নবায়নযোগ্য শক্তি শিল্পে বিনিয়োগ করবে। বিলিয়ন-১০ ও চংখে কুয়োরই (চুহাই) নিউ ম্যাটেরিয়াল টেকনোলজি কো. লি. বাংলাদেশের বর্জ্য লুব্রিকেন্ট তেল পরিশোধন শিল্পে বিনিয়োগ করবে।
এ ছাড়া ই.বি সলিউশন লিমিটেড ও হংচি ইন্টেলিজেন্ট ট্রান্সপোর্ট কোম্পানি লিমিটেড ঢাকা সিটি মোটরবাইক প্রজেক্টে বিনিয়োগ করবে এবং ই.বি সলিউশন লিমিটেড ও নিংবো শেরিং নিউ এনার্জি টেকনোলজি লিমিটেড বাংলাদেশের স্মার্ট কোল্ড চেইন লজিস্টিক সলিউশন খাতে বিনিয়োগ করবে।
এত বড় কোম্পানি অথচ কেন ওয়েব সাইটে তথ্য নেই
নামসর্বস্ব বিলিয়ন-১০ কোম্পানিটি সম্পর্কে তাদের ওয়েবসাইটে তেমন কোনো তথ্য না মিললে বাংলা আউটলুকের পক্ষ থেকে ওয়েবসাইটে দেওয়া ঠিকানায় পৌঁছালে ইবিএস নামে একটি কোম্পানির উপস্থিতি পাওয়া যায়।
কোম্পানির কর্মকর্তারা জানান, কোম্পানির কৌশলগত কারণে তারা তাদের ওয়েবসাইটে বিস্তারিত তথ্য দেননি। তবে এখন চুক্তি হয়ে যাওয়ার কারণে সহসা বিস্তারিত তথ্য ও কাজ সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করা হবে।
কোম্পানিটির দুজন কর্মকর্তা জানান, এমওইউ স্বাক্ষরের পরে তারা তাদের প্রতিষ্ঠানটি সদর দপ্তর ধানমন্ডিতে রাখলেও ফ্যাক্টরি গাজীপুর থেকে হবিগঞ্জে শিফট করবেন।
কোম্পানিটির ইলেকট্রনিক ভেহিকেল তৈরি করার কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তবে তারা জিও নামের একটি স্বল্প মূল্যের মোবাইল হ্যান্ডসেট তৈরি করে আসছেন বেশ কিছুদিন।
রাজনৈতিক পরিচয় সম্পর্কে প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা জানান, রাফিউর রহমান মূলত টাঙ্গাইলের জেলা আওয়ামী লীগের একজন নেতা। পাশাপাশি তিনি একজন ব্যবসায়ী। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে চীন সফর করছেন।
দেশের ইংরেজি দৈনিক দ্য বিজনেস স্টান্ডার্ড পত্রিকার বুধবারে প্রকাশিত সংবাদ বলছে, বাংলাদেশ এবং চীনের কোম্পানির মধ্যে অন্তত ১৬টি মেমোরান্ডাম অব আন্ডারস্ট্যান্ডিং স্বাক্ষরিত হয়, যার মাধ্যমে বাংলাদেশে ৪০০ মিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ বিনিয়োগ আশা করা যাচ্ছে। এসবের মধ্যে নগদ ও হুয়াওয়ে টেকনোলজির মধ্যে একটি ইমোও স্বাক্ষরিত হয়েছে।
এদিকে, ওয়েবসাইটে দেওয়া কোম্পানিটির ঠিকানা ধরে ধানমন্ডিতে গিয়ে বিল্ডিংয়ের নিরাপত্তা কর্মীদের সঙ্গে কথা বললে তারা বিলিয়ন-১০ কোম্পানি সম্পর্কে কোনো ধারণা দিতে পারেননি। তবে চীন সফর নিয়ে কথা বললে একজন নিরাপত্তা কর্মী বলেন, ‘সাত তলার ইবিএস অফিসের রাফি স্যার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে চীন সফরে আছেন।’
আর সাত তলায় গিয়ে দেখা মেলে ইবিএসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে। এখানে কোম্পানির সম্পর্কে তেমন কোনো তথ্য তারা দেননি। তবে একটি প্রেস রিলিজ সরবরাহ করেছেন।
বিলিয়ন-১০ কমিউনিকেশনস লিমিটেড ও ই.বি সলিউশন্স লিমিটেড কী বলছে
প্রেস রিলিজ বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরের সময় গত মঙ্গলবার বিলিয়ন-১০ কমিউনিকেশনস লিমিটেড ও ই.বি সলিউশন্স লিমিটেড মোট ছয়টি এমওইউ স্বাক্ষর করে। এ চুক্তিগুলোর ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ি, নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন সেক্টরে ২৮ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে এই দুই কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাফিউর রহমান খান ইউসুফজাই সানি এবং চীনের বিভিন্ন ব্যবসায়িক গ্রপের মধ্য এ এমওইউ স্বাক্ষরিত হয়।
এ ব্যাপারে রাফিউর রহমান খান ইউসুফজাই সানি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও উভয় দেশের সরকারের উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে আমাদের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চীনের বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের যৌথ বিনিয়োগের সমঝোতা হয়েছে। এটা আমাদের জন্য দারুণ অর্জন। আমরা আশাবাদী এই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে উভয় দেশের অর্থনীতিতে ও কর্মসংস্থান তৈরিতে বিশেষ অবদান রাখবে।‘
প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বেইজিংয়ে ৯ জুলাই চীন-বাংলাদেশ ব্যবসায়িক সম্মেলনে ১৬টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে।
প্রেস রিলিজে আরও বলা হয়, ‘তিনি চার দিনের সফরে এই মুহূর্তে চীনে অবস্থান করছেন। ৮ জুলাই বিকেলে তিনি চীনের রাজধানী বেইজিং পৌঁছান। প্রধানমন্ত্রীর সফর সঙ্গী হয়েছেন ৯১ সদস্যের প্রতিনিধি দল। তার মধ্যে একটি ব্যবসায়ী দলও রয়েছে। ব্যবসায়ীদের মধ্যে অন্যতম রাফিউর রহমান খান ইউসুফজাই সানি।’
রাফিউর রহমানে আস্থা মির্জাপুর তৃণমূল আওয়ামী লীগের!
দৈনিক মানবজমিনে ২০২২ সালের ১ নভেম্বর প্রকাশিত এক প্রতিবেদন বলছে, ‘রাফিউর রহমান খান ইউসুফজাই সানি ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগ করতেন। উচ্চতর শিক্ষা নিয়েছেন দেশের বাইরে। ফিরে এসে ঢাকায় ব্যবসায়ের পাশাপাশি যুক্ত হন আওয়ামী লীগে। পরে মির্জাপুরের প্রয়াত এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা একাব্বর হোসেনের আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে নিজেকে উপজেলা আওয়ামী লীগে জড়ান।’
‘সম্প্রতি মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা হিসেবে রয়েছেন। ইতিমধ্যে তিনি তৃণমূলের আস্থাভাজন হয়ে উঠেছেন ।‘
এমপি হওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা
অনলাইন পোর্টাল ঢাকাটাইমস ২০২৩ সালের ২১ নভেম্বর প্রকাশিত এক সংবাদ বলছে,’দীর্ঘদিন ধরে সমাজসেবামূলক কাজ করে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করেছেন রাফিউর রহমান খান ইউসুফজাই সানি। এ কারণে জনগণের রায় নিয়ে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৭ আসনে নৌকা প্রতীকে মনোয়নপত্র জমা দিয়েছেন তিনি। উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য সানি মনোয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী।‘
সেখানে লেখা হয়, ‘দীর্ঘদিন ধরে মির্জাপুরবাসীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে জনসেবামূলক কাজ করছেন রাফিউর রহমান খান ইউসুফজাই সানি। মির্জাপুরবাসীর জন্য অন্যরকম একটি দিন ছিল ১৪ অক্টোবর, ২০২৩। মির্জাপুরের তরুণরা নতুন এক বার্তা পেল এদিন। ‘তারুণ্যে ভরপুর ডিজিটাল মির্জাপুর’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন জনপ্রিয় মোটিভেশনাল স্পিকার সোলায়মান সুখন ও লেখক-নির্মাতা সাকিব রায়হান। মির্জাপুরের তরুণদের মধ্যে ব্যতিক্রমী এ আয়োজন বেশ সাড়া ফেলেছে।’
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থিতা ফিরে পান টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য রাফিউর রহমান খান ইউসুফজাই সানি। তিনি ১৩৬ টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন।
তার প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে সরকারি এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি তো তাকে ডামি ক্যানডিডেট বলতে পারি না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সরে দাড়ান।’
Bangla Outlook
A clear “how to do corruption-baji” manual in Bangladesh is provided in report:
1. Start a “business” (no actual investment or establishment necessary; just the paperwork, with bribes if necessary).
2. At the same time or before, join the ruling party, preferably in your own village area, where bribery can also be used, if necessary.
3. Get close to top ruling party leaders, thru bribery, but more likely, promises of future bribery, if they help him make money.
Note: Every Tom, Dick and Harry student/local ruliing party “goondas” will be following this path, including droves of people who are from other parties because this is where the money is.
4. Once successful (not everyone will be, because it will be a fight for survival among them, that will lead to many dropping off, or even being physically hurt/killed), then do two things: (a) look for government contracts to skim off money and/or (b) look for business contracts with foreign partners as this guy (in both cases promising concerned govt officials/party honchos up and down the chain of command a share of the crooked money he will get), Not an easy promise to deliver on, so many of them will also be forced out down the line for non-delivery on the promises made, again some kicked out of the party or physically maimed/killed.
5. Only after all this, the few who succeeds will become big businessmen, grow long beards, do multiple Haj, etc. with some even becoming “statesmen” or future top officials in the country.
6. This is not the end because then they have to think about protecting all this ill-gotten, easy-come, easy-go money from many vultures during their own lifetimes, and even more importantly, to pass on to their children.
7. Here, in addition to the many vultures that will be circling around him (inside his circle as well as outside), one of the biggest block will be his family, particularly, the children. Of course, there will be many in the family envying his wealth and trying always to get a share (crooked money also attracts crooked people using crooked means to get them out of him) and, he will be constantly in battle against them the rest of his life.
8. But, equally or even more importantly, even if he manages to save all his wealth from all grabbers and be able to pass it on to his future generations, the biggest question here will be: can they manage that wealth and save or grow it, or will they just whittle it away, wasting on expensive toys and stuff. This, of course, will depend not only on the inherent quality of the kids, but equally importantly on how they were raised by the parents – hopefully, not as spoiled kids, as is most often the case (mainly because those crooked parents are too busy making crooked schemes to make mney their entire life and have no time to raise kids). Amen to them all.
9. I close with one positive note for the country. The one case where these stories will eventually be positive for the country is if the founding owners can convert their businesses into corporate structures with independent Board of Directors as well as Senior Managers. But, that will also be a tall order for the vast majority of these crooks (for one reason: they don’t want to give up control of their money-making machine)!